আলোকচিত্র : শান্তিনিকেতনে কিছুদিন -০৪
"গ্রাম ছাড়া ওই রাঙা মাটির পথ .....", রবি ঠাকুরের সেই বিখ্যাত গানের লাইনটা যে রাঙা মাটির কাঁচা রাস্তা দেখে লেখা হয়েছিল সেটা এখন পিচঢালা কালো রাস্তা । কোপাই নদীর পাড়ে যেতে হয় এই রাস্তা বেয়ে । শালবনের ছোট ছোট গ্রামের বুক চিরে আঁকা বাঁকা এই রাস্তা । চলে গিয়েছে সেই ছোট্ট নদী কোপাই পর্যন্ত ।
"কোপাই" হলো সেই নদী যেটির পাড়ে বসে আদিবাসীদের ছোট্ট ছোট্ট ছেলেমেয়ের নদীর জলে দুরন্তপনা দেখে লিখেছিলেন বিখ্যাত সেই ছড়াটি -
আমাদের ছোটো নদী চলে বাঁকে বাঁকে
বৈশাখ মাসে তার হাঁটু জল থাকে।
পার হয়ে যায় গোরু, পার হয় গাড়ি,
দুই ধার উঁচু তার, ঢালু তার পাড়ি।
সেই সকালে না খেয়ে শান্তিনিকেতন ঘুরেছি । ঘোরা শেষ হতেই তো প্রচন্ড খিদে পেয়ে গেলো । কোপাই যাওয়ার পথে রাস্তার ধারে একটা রেস্তোরাঁ দেখে নেমে পড়লাম সবাই । না ঠিক সবাই নয়, বাবা বাদে সবাই নেমে পড়লাম । তাপমাত্রা তখন প্রায় ৪৪ ডিগ্রী । বাবা তাই নামতে রাজি হলো না । ড্রাইভার গাড়ির মধ্যে ফুল ফোর্সে এসি অন করে রেখে এলো ।
আমরা সবাই প্রাতঃরাশ সেরে নিলুম সেই ছোট্ট রেস্তোরাঁতে । বাবার খাবার গাড়িতেই দিয়ে এলো ড্রাইভার । একেবারে সিম্পল খাবার । হিঙের কচুরি, ছোলার ডাল, আলুর দম আর ওমলেট । প্রতি প্লেটে চার খানা বড় বড় কচুরি ছিলো । সবাই দুই থালা করে নিলো, সবারই আসলে প্রচুর খিদে পেয়ে গেছিলো তাই । আমি চার প্লেট কচুরি, তিন প্লেট ছোলার ডাল আর দু'প্লেট আলুর দম নিলাম । সবার শেষে নিলাম একটা ডাবল ডিমের ওমলেট ।
খেয়েদেয়ে তো সবাই গাড়িতে উঠে পড়লাম । পেটের জ্বালা কমেছে এখন । কিছুক্ষনের মধ্যেই সোজা খোয়াই নদীর পাড়ে । ঠিক একেবারে কবিতার মতো, ছোট্ট নদী, এঁকে বেঁকে বয়ে চলেছে । স্রোত নেই । গ্রীষ্মকাল, জল খুবই কম, হাঁটুরও নিচে জল । এক দিকে দেখলাম গাঁয়ের কিছু লোক স্নান সারছে, সেখানে নদীতে একটা তালাওয়ের মতো । স্বচ্ছ কাচের মতো ঠান্ডা জল । সেখানে জল বেশ গভীর, কোমরের সামান্য উপর অব্দি হবে । তাই স্নান করা যাচ্ছে ।
একদিকে কিছু সাঁওতালী ছেলেমেয়ে নাইতে নেমেছে । সে কি হুল্লোড়, চেঁচামেচি তাদের । একটি ঝাঁকড়া পিপুল গাছের নিচে আদিবাসী বৌ ঝিরা হাঁড়ি-পাতিল, বাসন কোসন ধুচ্ছে । এক স্থানে কিছু গরু-মোষ জল খাচ্ছে, আর উঁচু পাড়ে ছড়ি হাতে বসে রাখাল ছেলেটি হুট্ হট্ শব্দ করছে মুখে ।
নদীর পুব পাড়ে দেখি ছোটখাটো বাউলদের একটা মেলা বসে গিয়েছে । সাথে রয়েছে আদিবাসীদের ছোট্ট একটা মেলা । শুনলাম প্রত্যহ এমন মেলা বসে নদীর পাড়ে । আমি মেলায় একটু ঘুরে চলে গেলুম নদীর একদম নিচে, পাড় থেকে নেমে ঘন ঘাস ঝোপ আর বালিয়াড়ির মধ্যে দিয়ে একদম জলের কাছে । আহা দারুন লাগলো ।
সোনাঝুরির হাটের আদিবাসীদের তৈরী রকমারি শৌখিন ও শিল্প দ্রব্যাদি
তারিখ : ১৫ এপ্রিল ২০২২
সময় : সকাল ১২ টা ০০ মিনিট
স্থান : শান্তিনিকেতন, বোলপুর, বীরভূম, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।
সোনাঝুরির হাট আসলে খোয়াই এর মাঝখানে বসে। খোয়াই হলো শালবনের নরম কাঁকর মিশানো লাল মাটি বর্ষায় ধুয়ে বিস্তীৰ্ণ একটা ফাঁকা বালুকাময় প্রান্তর ।
তারিখ : ১৫ এপ্রিল ২০২২
সময় : সকাল ১২ টা ০০ মিনিট
স্থান : শান্তিনিকেতন, বোলপুর, বীরভূম, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।
খোয়াইয়ে একটি শালবৃক্ষের নিম্নে যুদ্ধ চলিতেছে - মাতা ও পুত্রের ।
তারিখ : ১৫ এপ্রিল ২০২২
সময় : সকাল ১২ টা ২০ মিনিট
স্থান : শান্তিনিকেতন, বোলপুর, বীরভূম, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।
ক্যামেরা পরিচিতি : OnePlus
ক্যামেরা মডেল : EB2101
ফোকাল লেংথ : ৫ মিমিঃ
দাদা,কোপাই নদীর পাড়ে বসে আমাদের প্রিয় কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই কবিতাটি লিখেছেন সেটি কিন্তু জানতাম না। দাদা,আপনার এই পোষ্টের মাধ্যমে আমি জানতে পারলাম সত্যিই খুব ভালো লেগেছে।আর ছোটবেলায় আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে এই কবিতাটা পড়তাম আর অজানা জগতে হারিয়ে যেতাম খুব ভালো লাগত কবিতা টা।শান্তিনিকেতনে ঘুরে আমাদের মাঝে অনেক কিছু শেয়ার করেছেন যা আমাদের পক্ষে দেখা বা জানা সম্ভব ছিল না। দাদা,গরমে মনে হয় টিনটিন বাবু রেগে গিয়ে বৌদির সাথে যুদ্ধ শুরু করে দিয়েছে😊 দেখে খুব ভালো লাগলো মা ছেলের এত ভালোবাসা দেখে মন জুড়িয়ে গেল। ধন্যবাদ দাদা,এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।।
Thank You for sharing Your insights...
@tipu curate 2
Upvoted 👌 (Mana: 8/10) Get profit votes with @tipU :)
I am making $92 an hour working from home. i was greatly surprised at the same time as my neighbour advised me she changed into averaging $ninety five however I see the way it works now. I experience mass freedom now that I'm my non-public boss.
that is what I do.. https://www.incomehd.com
Hi @rme,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.
Come and visit Italy Community
মাতা ও পুএ যুদ্ধ করছে,আর আপনি ছবি তোলেছেন😉😉,ভালোই তো।যাই হোক খাবারের মেনু দেখে দাদা খেতে ইচ্ছে করছে।আর রবি ঠাকুরের বিখ্যাত গানের লাইনটি আমার কাছে খুব ভালো লাগে।
টিনটিন বাবুকে বৌদির কোলে দিয়ে আপনি নিশ্চয়ই আরামে ছবি তুলছিলেন। সারাক্ষণ তো বৌদির কোলেই দেখলাম টিনটিন বাবুকে। খুব বিরক্ত গরমে বোঝা যাচ্ছে। সোনাই ঝুড়ি হাটটি মনে ধরেছে। বিভিন্ন জিনিস খুব সুন্দর করে সাজানো। এইবার কিন্তু আপনার খাওয়ার কথা কিছু বলি নি।🙈🙈
দাদা আপনার মাধ্যমে এই ছড়ার উৎস খুঁজে পেলাম দারুন একটি বিষয় জানা হল আমার। আপনি খুব সুন্দর ভাবে আদিবাসীদের সম্পর্কে আমাদের মাঝে বিস্তারিত তুলে ধরেছেন। বাংলাদেশ রংপুর অঞ্চলের প্রচুর পরিমাণে সাঁওতাল আদিবাসী বসবাস করে। আমি কখনো আদিবাসী গ্রামে যায়নি তবে আমার এক আদিবাসী বান্ধবী ছিল নাম তার জুলিয়া টুডু। আপনি খুব সুন্দর ভাবে ফটোগ্রাফির গুলো করেছেন তবে আমাদের প্রিয় টিনটিন বাবুকে দেখে বিষণ্ন মনে হচ্ছে মনে হয় তার মন খারাপ।
Thank You for sharing Your insights...
কোপাই নদীর হালকা বর্ণনা আমি একটু জেনে ছিলাম বৌদির বিগত পোস্ট থেকে , তবে আজ যখন আপনাদের মুহূর্ত পড়ছিলাম মনে হচ্ছিল আমি ঘুরছিলাম আপনাদের সঙ্গে ভাই । আসলে এইটা সত্য কথা যখন পেটে টান পড়ে , তখন সবকিছু অমৃত মনেহয় ।
ভালো লাগলো আপনার অনুভূতি জেনে ।।
আপনি যথেষ্ট খেতে পারেন বোঝা যাচ্ছে । চার প্লেট মানে প্রায় ষোলটা কচুরি সাবাড় করেছেন । তবে সেই ছোট নদীটির ছবি দেখতে পেলে ভালো হতো । এরপরে কোন পোস্টে সুযোগ পেলে সেই নদীর ছবি গুলো দিয়েন দাদা । নদী কেন জানি আমাকে খুব টানে । নদীর কথা শুনলেই অদ্ভুত এক ভালো লাগায় মন ছেয়ে যায় । মাতা পুত্রের খুনসুটি দেখে ভালই লাগলো । তবে টিনটিনের যে অনেক গরম লেগেছিল সেটা ওর ছবিগুলো দেখলে বোঝা যাচ্ছে । সবগুলো ছবিতে জামার বোতাম খোলা দেখা যাচ্ছে । তবে এত গরমে আপনারা কিভাবে ঘুরেছেন আমি সেটা চিন্তা করছি।
আপনার ফটোগ্রাফি নিয়ে নতুন করে বলার কিচ্ছু নেই।আর আপনার পোস্ট পড়া মানেই নতুন কিছু জানা,নতুন কিছু শেখা🖤।
সবসময় এমন কিছুই উপহার দিন আমাদের।অনেক অনেক ভালোবাসা রইলো দাদা❣️🤎💜
এটা আমার একদম অজানা ছিল, যদিও এই গান আমি অনেকবার শুনেছি। তবে আজকে এই গান আর কবিতা সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতে পারলাম।
তবে দাদা এত কিছু শুনে বোঝা যাচ্ছে, আসলেই জায়গাটি মনমুগ্ধকর। যেখানে কবি নিজেই মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। ধন্যবাদ দাদা।