ভ্রমণ পোস্ট//তিস্তা ব্যারেজ ঘুরতে যাওয়ার ( দ্বিতীয় পর্ব) ।

🥰.. আসসালামুয়ালাইকুম ...🥰

প্রিয় হিন্দু ভাই-বোনদের জন্য আদাব ও ভালোবাসা 💗🙏। আমার প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল বন্ধুদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও স্নেহ। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি, মহান আল্লাহর রহমতে এবং একে অপরের ভালোবাসায় আপনারা সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও বেশ ভালো আছি।আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির একজন সদস্য,এই প্ল্যাটফর্মের সাথে আমার যাত্রা প্রায় এক বছর ধরে। সত্যি বলতে, এখানে আসতে পেরে আমার মনে হচ্ছে ! যেন নিজের আর একটি নতুন পরিবার খুঁজে পেয়েছি। প্রতিটি লেখা, প্রতিটি মন্তব্য, প্রতিটি বন্ধুত্ব আমাকে দিয়েছে আনন্দ, ভালোবাসা এক নতুন অধ্যায়ের স্বাদ।আজকে আমি আপনাদের সাথে তিস্তা ব্যারেজ ঘুরতে যাওয়ার দ্বিতীয় পর্ব শেয়ার করবো ।আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক অনেক ভালো লাগবে। চলুন এবার শুরু করা যাক।

তিস্তা ব্যারেজ ভ্রমণের প্রথম পর্বে ছিল যাত্রার গল্প, আর এবার দ্বিতীয় পর্বে লিখতে বসেছি সেখানে পৌঁছে চারদিকে ঘুরে দেখার অভিজ্ঞতা। প্রায় তিন ঘণ্টার দীর্ঘ পথ পেরিয়ে যখন ব্যারেজ এলাকায় পৌঁছালাম, তখন প্রথমেই চোখে পড়ল এর বিশাল অবকাঠামো। দূর থেকে যে ব্যারেজটিকে সাধারণ সেতুর মতো মনে হয়েছিল, কাছে আসতেই তার প্রকাণ্ডতা স্পষ্ট হয়ে উঠল। নীল রঙের রেলিং, ধাতব কাঠামো আর জলধারার ওপর বিস্তৃত এই ব্যারেজ যেন এক প্রকৌশল বিস্ময়।

গাড়ি থেকে নেমেই হাঁটা শুরু করলাম চারদিকে। ব্যারেজের ওপর দাঁড়িয়ে যখন চারদিকে তাকালাম, তখন চোখে পড়ল অপরিসীম বিস্তৃত নদী। জলধারা একটানা বইছে, আকাশে সাদা মেঘের ভেলা, আর বাতাসে নদীর গন্ধ । মনে হচ্ছিল যেন প্রকৃতির এক বিশাল আয়নায় দাঁড়িয়ে আছি। দূরে সবুজ বনানী আর ক্ষেতের সারি এই দৃশ্যকে আরও সমৃদ্ধ করে তুলছিল। অনেক মানুষকে দেখা গেল স্রোতধারার দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে, কেউ আবার ছবি তুলছে, কেউ বা নীরবে শুধু নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করছে।

ব্যারেজের ওপর দিয়ে হাঁটার সময় মনে হচ্ছিল এ যেন কোনো সিনেমার দৃশ্য। এক পাশে অবিরাম নদীর প্রবাহ, আরেক পাশে শান্ত নীল আকাশ। মাঝেমধ্যে ছোট ছোট যানবাহন, রিকশা বা মোটরসাইকেল আসা-যাওয়া করছে, কিন্তু সেই ব্যস্ততা যেন প্রকৃতির সৌন্দর্যের কাছে তুচ্ছ মনে হচ্ছিল। আমরা থেমে থেমে চারদিক দেখছিলাম, কখনও রেলিং ধরে নিচের প্রবল স্রোতের দিকে তাকাচ্ছিলাম, আবার কখনও নদীর ওপারে গাছের সবুজে হারিয়ে যাচ্ছিলাম।

ব্যারেজের প্রতিটি কোণ যেন আলাদা সৌন্দর্য ধারণ করে আছে। এক পাশে যেখান থেকে নদীর প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হয়, সেখানে বিশাল লোহার দরজার সারি দাঁড়িয়ে আছে, যা দেখে বোঝা যায় নদীকে কেমন শক্তভাবে বেঁধে রাখা হয়। আবার অন্য পাশে রয়েছে খোলা জলরাশি, যেখানে ঢেউয়ের ছন্দ যেন মনকেও তাল মেলাতে বাধ্য করে। নদীর গর্জন নেই, আছে শুধু প্রবাহমান জলের শান্ত সুর, যা হৃদয়কে প্রশান্তিতে ভরিয়ে দেয়।

সন্ধ্যার দিকে সূর্যের আলো ধীরে ধীরে কোমল হয়ে এলে ব্যারেজের সৌন্দর্য আরও বেড়ে যায়। আকাশে লালচে রঙ ছড়িয়ে পড়তে থাকে, আর তার প্রতিফলন দেখা যায় জলের বুকে। সেই দৃশ্য এতটাই মনোমুগ্ধকর ছিল যে, মনে হচ্ছিল মুহূর্তটিকে ধরে রাখতে চাই চিরদিনের জন্য। বন্ধুরা মিলে কেউ ছবি তুলছিলাম, কেউবা নীরবে দাঁড়িয়ে সেই সৌন্দর্যে ডুবে যাচ্ছিলাম।

তিস্তা ব্যারেজে এই ভ্রমণের দ্বিতীয় পর্বে এসে বুঝলাম, শুধু একটি জায়গায় পৌঁছানোই নয়, বরং সেখানে দাঁড়িয়ে প্রকৃতির বিশালতাকে উপলব্ধি করাই আসল আনন্দ। নদীর স্রোত, আকাশের রঙ, মানুষের ভিড় আর প্রকৌশলের মহিমা সব মিলিয়ে এক অপূর্ব অভিজ্ঞতা হয়ে রইল মনে।

এই ছিল আজকের ব্লগ । আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।কার কাছে কেমন লেগেছে তা অবশ্যই কমেন্টের মন্তব্য করে জানাবেন। কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি, আবার নতুন কিছু নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে।সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং সবার জন্য অনেক শুভকামনা রইল ।

আমার নাম মোছাঃ সামছুন্ নাহার সুইটি । আমি একজন বাংলাদেশী মুসলিম নাগরিক । আমি আমার মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। আমি অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ালেখা করি । আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করার জন্য যুক্ত হয়েছি । আমি গত ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই । এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি ।আমি ভ্রমণ করতে অনেক বেশি পছন্দ করি।সেই সাথে নতুন নতুন ফটোগ্রাফি করতে ও ইউনিক রেসিপি এবং নতুন নতুন ইউনিক ডাই তৈরি করতে বেশ পছন্দ করি । আর স্টিমিট প্ল্যাটফর্মকে আঁকড়ে ধরে ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে যেতে চাই, এটাই আমার লক্ষ্য।