বৃষ্টি ভেজা বেশ কয়েকটি নয়নতাঁরা ফুলের এলোমেলো ফটোগ্ৰাফি।

🥰.. আসসালামুয়ালাইকুম ...🥰

প্রিয় হিন্দু ভাই-বোনদের জন্য আদাব ও ভালোবাসা 💗🙏। আমার প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল বন্ধুদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও স্নেহ। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি, মহান আল্লাহর রহমতে এবং একে অপরের ভালোবাসায় আপনারা সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও বেশ ভালো আছি।আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির একজন সদস্য,এই প্ল্যাটফর্মের সাথে আমার যাত্রা প্রায় এক বছর ধরে। সত্যি বলতে, এখানে আসতে পেরে আমার মনে হচ্ছে ! যেন নিজের আর একটি নতুন পরিবার খুঁজে পেয়েছি। প্রতিটি লেখা, প্রতিটি মন্তব্য, প্রতিটি বন্ধুত্ব আমাকে দিয়েছে আনন্দ, ভালোবাসা এক নতুন অধ্যায়ের স্বাদ।আজকে আমি আপনাদের সাথে বৃষ্টি ভেজা বেশ কয়েকটি নয়নতাঁরা ফুলের এলোমেলো ফটোগ্ৰাফি শেয়ার করবো ।আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক অনেক ভালো লাগবে। চলুন এবার শুরু করা যাক।

আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে যুক্ত হওয়ার পর থেকে ফটোগ্রাফি যেন আমার নিত্যসঙ্গী হয়ে উঠেছে। আগে এটি ছিল একধরনের হালকা শখ, আর এখন? যেন চোখের সামনে যেকোনো সুন্দর মুহূর্ত ধরা পড়লেই সেটাকে ক্যামেরাবন্দি না করে শান্তি পাই না! বিশেষ করে যখন প্রকৃতির মাঝে হাঁটি, রাস্তার ধারে হঠাৎ দেখা মেলে এক ফোঁটা শিশিরে ভেজা পাতার, কিংবা বিকেলের সোনালি রোদে ঝলমলে কোনো দৃশ্য তখন মোবাইল বের করে সেটাকে ধরে রাখা একরকম অভ্যাস হয়ে গেছে। ফোটোগ্রাফির প্রতি এই টান শুধু ঘোরাঘুরি বা ভ্রমণের জন্য নয়, বরং প্রকৃতির নিখুঁত সৌন্দর্যকে আরও গভীরভাবে উপলব্ধি করার জন্য। গ্রামের সরল প্রকৃতি, ফুলের কোমল রঙ, গাছের পাতায় খেলা করা আলো ছায়া এসবের মধ্যেই যেন এক অন্য রকম মায়া লুকিয়ে থাকে। আমি এর আগেও বেশ কিছু ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছি ! কিন্তু প্রতিবার নতুন নতুন করে অন্য রকম দৃশ্যের সৌন্দর্য ক্যামেরা বন্দী হয়।তাই আজকে বেশ কয়েকটি এলোমেলো নয়ন তাঁরা ফুলের ফটোগ্ৰাফি নিয়ে হাজির হয়েছি।

সকালের আকাশটা একটু মেঘলা ছিল। বাতাসে ছিল হালকা ঠাণ্ডা শিরশিরে ভাব। হঠাৎ করেই যেন আকাশ কাঁদতে শুরু করল। মৃদু এক বৃষ্টি নেমে এল শহর-বন্দর-পথঘাট ছুঁয়ে আমার ছাদবাগানেও। প্রতিটি পাতা, প্রতিটি কুঁড়ি, আর প্রতিটি ফুল যেন এই বৃষ্টিকে বরণ করে নিল ভালোবাসার পরশে। আর সেই মুহূর্তেই চোখে পড়ল নয়ন তাঁরা ফুল গুলোকে একটি, দুটি, অনেকগুলো একসাথে দাঁড়িয়ে যেন ভেজা দৃষ্টিতে বৃষ্টি উপভোগ করছে।

নয়ন তাঁরা ফুলকে আমি বরাবরই একরকম ঘরোয়া নায়িকার মতো ভাবি । অতি পরিচিত, সহজলভ্য, অথচ নিজের নিঃশব্দ সৌন্দর্যে অসামান্য। গোলাপি পাপড়ির মধ্যে ছড়িয়ে থাকা কোমলতা যেন বলে।আমি আছি, কিন্তু নিজেকে জোরে জানান দিই না।বৃষ্টির জলে ভিজে সেই সৌন্দর্য যেন আরও গভীর হয়ে ওঠে। প্রতিটি পাপড়িতে জমে থাকা পানির ফোঁটা ছোট ছোট মুক্তোর মতো ঝকমক করে ওঠে। কোনোটা পাপড়ির কিনারে ঝুলে পড়ছে, আবার কোনোটা স্থির হয়ে বসে আছে ফুলের হৃদয়ে।

ছবিগুলো তোলার সময় আমি বেশ আবিষ্ট হয়ে পড়ে ছিলাম। ফুল গুলোর গায়ে বৃষ্টির নরম ছোঁয়া যেন আলতো করে তাদের জাগিয়ে দিয়েছে। কিছু ফুল পুরো পুরি ফুটে উঠেছে, আবার কিছু এখনো আধফোটা, কুঁড়ির মতোই অপেক্ষা করছে পরি পূর্ণতার জন্য। তাদের চারপাশে সবুজ পাতাগুলো সজীব, টসটসে, যেন তরতাজা জীবনের প্রতীক। পাতার গায়েও জলের দানা, কিছুটা ঝরে পড়ছে, কিছুটা রয়ে গেছে।

একটি ছবিতে দুটি ফুল পাশাপাশি ঠেসে রয়েছে, দেখে মনে হচ্ছিল যেন তারা একে অপরকে বলছে।তুমি আছো বলেই এই বৃষ্টি এতটা মধুর মনে হচ্ছে।অন্য একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে অগণিত ফুলে ভরা একটা ঝোপ, যেখানে প্রতিটি ফুল যেন নিজের মতো করে আলাদা কথা বলছে, নিজের রঙে মিশে একসাথে মিলেমিশে গেছে প্রকৃতির বর্ণালীতে।এই ফুল গুলোকে কখনো ক্লান্ত লাগে না। দিনের আলো, সন্ধ্যার হাওয়া, বা ভোরের শিশির।সব কিছুর সঙ্গে তারা মানিয়ে নেয়। আর বৃষ্টি নামলেই তারা যেন প্রাণ খুলে হাসে। এক ধরনের নীরব হাসি, যা মুখে নয়, চোখে দেখা যায়।একটি নিরব কবিতা, একটি চুপিচুপি গাওয়া গান।

প্রকৃতির সঙ্গে এই গভীর মুহূর্তগুলোর একটি অদ্ভুত সংযোগ তৈরি হয়। ছবি গুলোর দিকে তাকিয়ে মনে হয়, যেন একটি বৃষ্টির সকালে প্রকৃতি আমাকে চুপিচুপি কিছু বলে গেল। হয়তো বলল।রোজকার দুঃশ্চিন্তা আর ব্যস্ততার ভিড়ে ভুলে যেও না এই ছোট ছোট সৌন্দর্য গুলোকে দেখতে।সেই ভালোবাসা থেকেই এই ছবিগুলোকে বন্দি করা, আর এই লেখার মধ্য দিয়ে সেই অনুভব গুলোকে প্রকাশ করা।

প্রত্যেকটি ছবি যেন একটি গল্প বলে। একটি পাপড়ি, একটি ফোঁটা জল, একটি কুঁড়ি সবই যেন জীবনের নতুন ব্যাখ্যা। আর নয়ন তাঁরা সেই ব্যাখ্যাকে রঙ আর কোমলতায় মিশিয়ে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় যে সৌন্দর্য সব সময় জাঁকজমক নয়, বরং নীরব এক আবেশ।এভাবে বৃষ্টিভেজা ফুলের দিকে তাকিয়ে থাকা মানেই যেন নিজের মধ্যেই কিছু খুঁজে পাওয়া।একটি অনাবিল প্রশান্তি, একটি নিঃশব্দ ভালোবাসা।

এই ছিল আজকের ব্লগ । আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।কার কাছে কেমন লেগেছে তা অবশ্যই কমেন্টের মন্তব্য করে জানাবেন। কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি, আবার নতুন কিছু নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে।সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং সবার জন্য অনেক শুভকামনা রইল ।

আমার নাম মোছাঃ সামছুন্ নাহার সুইটি । আমি একজন বাংলাদেশী মুসলিম নাগরিক । আমি আমার মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। আমি অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ালেখা করি । আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করার জন্য যুক্ত হয়েছি । আমি গত ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই । এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি ।আমি ভ্রমণ করতে অনেক বেশি পছন্দ করি।সেই সাথে নতুন নতুন ফটোগ্রাফি করতে ও ইউনিক রেসিপি এবং নতুন নতুন ইউনিক ডাই তৈরি করতে বেশ পছন্দ করি । আর স্টিমিট প্ল্যাটফর্মকে আঁকড়ে ধরে ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে যেতে চাই, এটাই আমার লক্ষ্য।