বেড়ানো | রংপুর রেলস্টেশনে একবেলা | ১০% @btm-school
রংপুর রেলওয়ে স্টেশন রংপুর বিভাগ তথা পুরো বাংলাদেশের মধ্যে অনেক পুরাতন একটা রেলস্টেশন। আমাদের এই উপমহাদেশ যখন বৃটিশ শাসনের অধীনে ছিল সেসময় ১৮৭৮ সালের দিকে এই স্টেশনটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই স্টেশনে একটা প্ল্যাটফর্ম, একটা মেইন লাইন ও আরও কয়েকটা ইয়ার্ড লাইন নিয়ে বর্তমানে বাংলাদেশ রেলওয়ের আন্ডারে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের আওতায় পরিচালিত হচ্ছে। রাজধানী ঢাকা থেকে পরিচালিত উত্তরাঞ্চলগামী সবগুলো জেলার সাথে রংপুর রেলস্টেশনের সংযোগ রয়েছে।
রংপুর শহরের লালবাগ ও কেডিসি রোডের মাঝামাঝি এই স্টেশনটির অবস্থান। অবশ্য রংপুর শহরের যেকোনো স্থান থেকে যেমন শাপলার মোড়, মডার্ণ মোড়, জাহাজ কোম্পানির মোড়, কামারপাড়া বাসস্ট্যান্ড বা তাজহাট জমিদার বাড়ির মোড় থেকে অর্থাৎ প্রায় সব এলাকা থেকেই বেশ কাছাকাছি। এসব জায়গা থেকে ব্যাটারি চালিত রিক্সায় ভাড়া নিবে ৩০-৫০ টাকার মধ্যে। মোটামুটি শহরের মাঝ বরাবর পড়েছে রেলস্টেশনটি। যেকোনো এলাকা থেকে এসে স্টেশন রোড ধরে কিছুদূর এগিয়ে গেলেই আপনি রেলস্টেশন পেয়ে যাবেন।
রংপুর রেলস্টেশন দিয়ে প্রতিদিন যেসব ট্রেন যাতায়াত করে সেগু হলো: ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া উত্তরবঙ্গের বিখ্যাত ট্রেন রংপুর এক্সপ্রেস, কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস, দোলনচাঁপা এক্সপ্রেস, উত্তরবঙ্গ মেইল, দিনাজপুর কমিউটার, বুড়িমারী কমিউটার, লালমনি কমিউটার, পার্বতীপুর কমিউটার ইত্যাদি। অনাকাঙ্ক্ষিত কোন ঘটনা না ঘটে থাকলে প্রতিদিন এই রুটের ট্রেনগুলো মোটামুটি সময়মত যাতায়াত করে থাকে। বেশ কয়েকবার আমি ঢাকা টু রংপুর এবং রংপুর টু ঢাকা এই রুটে রংপুর এক্সপ্রেসে ভ্রমণ করেছি।
এই স্টেশনটি বেশ পরিপাটি করে গোছানো। স্টেশনের হলুদ রঙের বিল্ডিংয়ের প্রধান গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকেই সামনে স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম পড়বে। এখান থেকে ডানে-বামে যেদিকেই তাকাবেন অনেকদূর পর্যন্ত লাইনের সাথে সাথে প্ল্যাটফর্মের স্টিলের ফ্রেমে নীল রঙের টিনের ছাউনিও চলে গেছে। মেইন গেট থেকে ভেতরে প্রবেশ করে এবং প্ল্যাটফর্মে ঢোকার আগে হাতের বামে টিকেট কাউন্টার পাবেন। এখান থেকে ইন্সট্যান্ট টিকেট এবং অগ্রীম টিকেট কিনতে পারবেন।
মেইন গেট দিয়ে ঢোকার সময় হাতের ডানে একটা বইয়ের দোকান চোখে পড়বে, সেখানে প্রায় সব ধরনের বই কিনতে পাবেন। প্ল্যাটফর্মে ট্রেনের জন্য অপেক্ষার সময় অথবা ট্রেন ভ্রমণের সময় বই পড়তে পারেন, তাতে ভালো সময় কাটবে। ট্রেন ভ্রমণে বইয়ের চেয়ে ভালো সঙ্গী আর কি হতে পারে? প্ল্যাটফর্মে ঢুকে হাতের বামদিকে এগিয়ে গেলে প্রথমে স্টেশন মাস্টারের অফিস দেখতে পাবেন, এর পাশে রয়েছে রেলওয়ে স্টেশন মসজিদ। আর তার পাশেই রয়েছে রংপুর রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি। এরপরে আরও ছোট-বড় বেশকিছু ঘর চোখে পড়বে। ঐ বরাবর সোজা হেঁটে গেলে সামনে রংপুর রেলওয়ে স্টেশন লেখা কংক্রিটের সাইনবোর্ড দেখতে পাবেন।
এই ছিল মোটামুটি রংপুর রেলস্টেশন সম্পর্কে একটা পরিচিতিমূলক পোস্ট। যারা সেখানে যাননি তারা স্টেশনটি সম্পর্কে একটা আইডিয়া পেলেন, আশাকরি তথ্যগুলো অনেকেরই কাজে লাগবে।
সবাই ভালো থাকবেন, সবার জন্য শুভ কামনা।
অনেক ধন্যবাদ।
আমি এখনও ট্রেনে ভ্রমন করি নি । কিন্তু পোস্টটি পড়ে রংপুর রেলওয়ে সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারলাম।
আমিও আপনার মতো অনেক দেরিতে ট্রেনে চড়েছি, দেরি বলতে অনেক দেরি, বিয়ের পরে। কেননা, শ্বশুরবাড়ি হচ্ছে দেশের একটা নামী রেলস্টেশনের পাশেই।
আরও একটা কারণ, সেটা হচ্ছে আমার নিজের বাড়ি সাতক্ষীরায় ট্রেন লাইনই নাই।
যদিও বিয়ের আগে থাইল্যান্ডে গিয়ে একবার বিদেশি ট্রেন চড়ার সৌভাগ্য হয়েছিল।
পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
আমদের ইন্ডিয়াতে ট্রেন এখন খুবই মডার্ন হয়ে গেছে । নতুন নতুন বিশ্ব মানের ট্রেন তৈরি হচ্ছে প্রতিনিয়ত । দিন ১০ আগেও একটা আধুনিক ও দ্রুত গতির রেল নাম বন্দে ভারত এক্সপ্রেস এর ২ন্ড জেনারেশন আমদের রেল এ যুক্ত করা হলো ।আপনি ইউটিউব এ সার্চ দিলে দেখতে পাবেন কত সুন্দর ট্রেন টি । তাছাড়াও খুব তাড়াতাড়ি বুলেট ট্রেন ও চালু হতে যাচ্ছে। আমার মনে হয় বাংলাদেশ সরকার এর একটু দেখার দরকার রংপুর রেল স্টেশন টাকে। এটি অনেক ঐতিহাসিক একটা স্টেশন কিন্তু স্টেশন এর ফ্লোর গুলো অবস্থা খুবই খারাপ। সরকারের একটু এই বিষয় টা দেখার দরকার।
আপনার গুরুত্বপূর্ণ সাজেশনের জন্য ধন্যবাদ।
যদিও বাংলাদেশের রেল ব্যবস্থা এখনো ততটা উন্নত হয়নি। দেশের প্রায় সব স্টেশনেরই এরকম একই অবস্থা। তবে আশার কথা হচ্ছে, সরকার এখন ট্রেন সেক্টরে নজরদারি বাড়িয়েছে, আস্তে আস্তে উন্নতি হচ্ছে।