আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে অনেক অনেক ভালো রয়েছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো রয়েছি। 'আমার বাংলা ব্লগ'এর সকল ভাইবোন বন্ধুদের কে আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি আজকের নতুন একটি পোস্ট। আজ আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি জিওল মাছের রেসিপি নিয়ে। আমরা সকলেই কম বেশি জানি যে যাদের রক্তস্বল্পতা রয়েছে এবং শরীর দুর্বল তাদের জন্য ডাক্তারের বেশিরভাগ বলে থাকে জিওল মাছ খেতে। তাই স্বাভাবিক অবস্থায় এই মাছ খেলে শরীরের জন্য অনেক উপকার। মাঝেমধ্যে যদি জিওল মাছ খাওয়া যায় তাহলে অনেক ভালো হয়। তাই আমি আজ হাজির হলাম জিওল মাছ নিয়ে। ঝিঙ্গার সাথে সুন্দরভাবে রান্না করে দেখাতে চাই জিওল মাছ, তাই চলুন আর দেরি না করে এখনই বিস্তারিত রান্নার প্রক্রিয়ায় চলে যাওয়া যাক,আর খুব মনোযোগ সহকারে তা দেখে এবং পড়ে শিক্ষা গ্রহণ করা জাক রান্না বিষয়ে।
রেসিপি বানানোর উপাদান সমূহ: |
ক্রমিক নম্বর | উপাদান | পরিমান |
১. | জিওল মাছ | ১৫ পিস |
২. | পেঁয়াজ কুচি | তিন পিস |
৩. | রসুন কুচি | ২ পিস |
৪. | কাঁচা মরিচ | ১০ পিস |
৫. | সয়াবিন তেল | ৫০ গ্রাম |
৬. | লবণ | পরিমাণ মতো |
৭. | মরিচের গুঁড়া | এক চা চামচ |
৮. | হলুদের গুঁড়া | এক চামচ |
৯. | ধনিয়া গুড়া | এক চা চামচ |
১০. | পানি | পরিমাণ মতো |
১১. | ঝিঙ্গা ফালি | হাফ কেজি |
১২. | মাছের ডিম | কিছু মাছের |



রান্নার প্রাথমিক পর্যায়ে সমস্ত উপাদান গুলো চুলার পাড়ে নিয়ে উপস্থিত হলাম। জিওল মাছ গুলো খুব সুন্দর করে পরিচ্ছন্নভাবে ধুয়েপুসে একটি গামলাই করে চুলাড় পাড়ে আনা হয়েছে। শুধু শুধু মাছ রান্না করলে ভালো লাগবে না তাই তার জন্য সবজির ব্যবস্থা করা হয়েছে ঝিঙে। আর যাবতীয় মসলাগুলো পর্যাপ্ত পরিমাণে নিয়ে কার্যক্রম শুরু করা হলো। প্রথমে কড়াইতে তেল দিয়ে মাছ ভাজার কার্যক্রম শুরু করা হলো। গামলার মধ্য থেকে মাছের গায়ে লবণ হলুদ মাখিয়ে নেওয়া হয়েছে এরপরে তার কড়াইয়ের মধ্যে গরম তেলে ছাড়া হল। বেশ কিছুক্ষণ ধরে মাছগুলো ভেজে নেওয়া হল। উদ্দেশ্য ভাজা মাছের সমন্বয়ে সবজি রান্না করা। মাছগুলো যখন ভাজা সম্পূর্ণ হলো তখন একটি গামলার মধ্যে তুলে নেওয়া হয়।



এই পর্যায়ে এসে সমস্ত মসলাগুলো কড়াইয়ের তেলের মধ্যে দেওয়া হল এবং নাড়তে থাকা হল। যতক্ষণ না মসলা গুলো খুব সুন্দর ভাবে ভাজা হলো ততক্ষণ চামচ দিয়ে নাড়তে থাকলাম। যখন দেখা গেল তেলের মধ্যে মসলাগুলো খুব সুন্দরভাবে ভাজা হয়ে গেছে এই মুহূর্তে ঝালের গুড়া লবণ হলুদ দেয়া হলো এবং ঝিঙা দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করলাম।




ঝিঙা গুলো খুব সুন্দর করে ধুয়ে ফালি করে নেয়া হয়েছিল। সিদ্ধ মসলার মধ্যে ঝিঙা গুলো দিয়ে দিলাম। অতি সাবধানতার সাথে ঝিঙ্গা গুলো গরম তেল এর সাথে দিয়ে সিদ্ধ করা শুরু করে দিলাম। যেহেতু চুলাতে রান্নার কার্যক্রম তাই একটু ফটোগ্রাফি করতেও সমস্যা বোধ হচ্ছিল।


সমস্ত মসলাগুলোর সাথে ঝিঙ্গার ফালি গুলো উলটপালট করে মিক্সচার করে নিলাম কড়াই এর মধ্যে এবং খুব সুন্দর ভাবে সিদ্ধ হতে থাকলো সবজিগুলো।


একদিকে চুলায় জাল চলতে থাকলো অন্যদিকে কড়াইয়ের মধ্যে খুব সুন্দর ভাবে রান্নার কার্যক্রম চলতে থাকলো তাই এক পর্যায়ে সিদ্ধ হয়ে কম হতে থাকলো। লক্ষ্য করলাম কড়াইয়ের সাথে সমস্ত উপাদান গুলো লেগে যাচ্ছে তাই হালকা পানি দেওয়ার প্রয়োজন। তাই কড়াই এর মধ্যে এক কাপ পরিমাণ পানি ঢেলে দিলাম। কড়াইয়ের মধ্যে পানি ঢেলে দেওয়ার সাথে সাথে যেন ধরা বের হতে থাকলে কড়ায় থেকে।




এক পর্যায়ে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিলাম করাইটি এবং খুব সুন্দর সিদ্ধ হয়ে গেল। সবজিগুলো একটু ভিন্ন কালার ধারণ করল। এবার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলাম এই অবস্থায় এর মধ্যে ভাজা মাছগুলো ছেড়ে দিতে হবে।


এই পর্যায়ে এসে ভাজা মাছগুলো কড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে দিলাম। এবং চামচ দিয়ে সবজি এর সাথে উল্টেপাল্টে হালকা করে নাড়তে থাকলাম। যেহেতু চামচ দিয়ে জোরে নাড়া যাবে না। জোরে নাড়তে গেলে অনেক মাছ ভেঙে যেতে পারে। সমস্ত সাবধানতা সামনে রেখেই ধীরে সুস্থ্যে কার্যক্রম চলতে থাকলো। সামান্য ঝোল ঝোল করার জন্য আবারো হালকা কিছু পানি ঢেলে দিলাম।



এই পর্যায়ে রান্নার কার্যক্রম প্রায় শেষের দিকে চলে আসলো। চামচ দিয়ে হালকা ঝোল চেকে দেখলাম রান্নার পর জেটা কেমন ছিল অর্থাৎ স্বাদ কেমন হয়েছে। তাই পরীক্ষা করে দেখলাম হালকা ঝোল মুখে দিয়ে বোঝা গেল রান্নার গুণগত মান ঠিক আছে। তাই এ পর্যায়ে রান্না তরকারি নামিয়ে ফেলার পালা।


পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন একটি গামলার মধ্যে রান্না করা মাছের তরকারি নামিয়ে ফেলা হলো। আর এর মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হল রান্নার কার্যক্রম।


রান্নাকিতো আমার এই সুন্দর রেসিপি পরিবারের লোকজন পেয়ে অনেক আনন্দিত এবং খুশি হয়েছিল যেহেতু এটা ছিল জিওল মাছ যা খেতে খুবই সুস্বাদু এবং বাজারে এর মূল্য অনেক বেশি। তাই সবসময় তো কেনা হয়ে ওঠে না। অবশ্য পুকুরেরও কম বেশি চাষ হয়ে থাকে। যাইহোক অসাধারণ এই রেসিপি পেয়ে আমার পরিবারের লোকজন সকলে সাদরে গ্রহণ করলো। দুপুর টাইমে খাওয়ার মুহূর্তে সবাই নিজ নিজ দায়িত্বে থালায় তুলে নিল। আর এভাবেই পরিবেশন করা হলো সকলের মাঝে। |

আশা করি,আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনি অনেক বিষয় সম্পর্কে জানতে বুঝতে ও শিখতে পেরেছেন। পোস্টটি উপস্থাপনা কেমন ছিল এবং এ বিষয়ে আপনার অনুভূতি কেমন আমাকে জানাতে ভুলবেন না। আপনার জন্য আমার পক্ষ থেকে শুভকামনা রইলো। |
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

পুনরায় কথা হবে পরবর্তী কোন পোষ্টে,ততক্ষণ ভালো থাকা হয় যেনো। আল্লাহ হাফেজ। |

শিং মাছ আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ভালো বিশেষ করে যাদের রক্ত কম তাদের রক্তে বৃদ্ধি করার জন্য শিং মাছের বিকল্প নেই।ডাক্তাররা সব সময় পরামর্শ দেন শিং মাছ খাওয়ার জন্য রক্ত বৃদ্ধির জন্য। বেশ মজার করে লাউ দিয়ে রান্না করেছেন দেখে লোভ সামলানো যাচ্ছে না। আপনাদের যেহেতু পুকুর আছে তাই এই শিং মাছ ঘন ঘন খেতে পারবেন।
হ্যাঁ দুর্বলদের জন্য ডাক্তার এই মাছ খেতে বলে
আপনি জিওল মাছ এবং সবজি দিয়ে বেশ সুন্দর একটি রেসিপি তৈরি করেছেন। যদিও আমি এ মাছগুলো খাই না। তারপরও আপনার রেসিপি দেখে বেশ ভালো লাগছে। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য।
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু খুব ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য
ভাইয়া সবজির সমন্বয়ে শিং মাছ রান্না করে দারুন একটি রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করলেন। দেশি শিং মাছ খেতে অসাধারন লাগে। রেসিপির কালারটা চমৎকার এসেছে। ধন্যবাদ ভাইয়া।
আপনার মন্তব্য পড়ে খুশি হলাম
শিং মাছ আমার খুবই ফেভারেট বিশেষ করে এই মাসে প্রচুর পরিমাণে আমিষ এবং প্রোটিন থাকে। এজন্য ডাক্তার দুর্বল মানুষের এই মাছগুলো বেশি বেশি করে খেতে বলে।।
সবজি দিয়ে শিং মাছের রেসিপি দেখতে খুবই লোভনীয় দেখাচ্ছে খেতে নিশ্চয়ই খুব মজা হয়েছিল আমার তো দেখেই লোভ হচ্ছে খুব খাওয়ার জন্য।।
হ্যাঁ ভাই একদম ঠিক কথা বলেছেন এর জন্য ডাক্তার খেতে বলে
জিওল মাছের নাম শুনে প্রথমে ভেবেছিলাম অন্য কোন মাছ হবে। এরপর দেখতে পেলাম শিং মাছ। হয়তো অঞ্চল ভেদে মাছের নামের অনেক পার্থক্য আছে। দারুন একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
হ্যাঁ এই মাছ কে শিং মাছ ও বলা হয়
মামা আপনি আজকে আমাদের মাঝে সবজির সমন্বয়ে জিওল মাছ রান্নার রেসিপি তৈরি করে শেয়ার করেছেন। আসলে মামা জিওল মাছ গ্রাম অঞ্চলে অনেক বেশি দেখা যায়। এমনিতে জিওল মাছ দিয়ে যে কোন সবজি রান্না করলে খেতে বেশি সুস্বাদু হয়ে থাকে।
হ্যাঁ একদম ঠিক কথা বলেছো মামা
শিং মাছ আমি সবসময় রোগীর তথ্য বলে থাকি। কেউ অসুস্থ হলে দেখি সবাই শিং মাছ খেয়ে থাকে। আমার কাছে কিন্তু শিং মাছ খেতে ভালোই লাগে । আর
এই সবজিটা দিয়ে মাছ রান্না করলে খেতে অনেক ভালো লাগে । সবজিটা নরম তরকারি খেতেও টেস্টি হয় । আপনার তরকারি মনে হচ্ছে ভালই মজা হয়েছে।
খুবই ভালো লেগেছে আপনার এত সুন্দর মন্তব্যটা পড়ে
ডাক্তার রোগীদেরকে বিশেষ করে এই ধরনের শিং মাছ খেতে সব সময় বেশি পরিমাণে পরামর্শ দিয়ে থাকে। আর আপনি তো দেখছি দারুন ভাবে সবজি দিয়ে শিং মাছের একটা রেসিপি তৈরি করে আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।
হ্যাঁ এই জাতীয় মাছ গুলো শরীরের জন্য খুবই উপকার
জিওল বা শিং মাছ আমার পছন্দের তালিকা সব সময় উপরের দিকে থাকে। আর এটা যে অসুস্থ রোগীর খাবার এই কথা আমি ছোটবেলা থেকেই শুনে আসছি। বিশেষ করে পাতলা জিওল মাছের ঝোল যেটা আপনি রান্না করেছেন এটাই খেতে বেশি সুস্বাদু লাগে। রেসিপিটা আমার অতি পরিচিত এবং আমরা এভাবেই সবসময় বাড়িতে বানিয়ে খাই তাই তেমন নতুন কিছু না হলেও দেখতে মোটামুটি বেশ ভালই লাগছে ভাই।
খুব ভালো লেগেছে আপনার এত সুন্দর একটি মন্তব্য পড়ে এবং জিওল মাছ যে আপনার পছন্দ তার জন্য খুশি হলাম
সবজির সমন্বয়ে জিওল মাছের একটি সুন্দর রেসিপি আপনি শেয়ার করেছেন ভাইয়া।রেসিপি দেখেই বোঝা যাচ্ছে খেতে খুব সুস্বাদু ছিল।আপনি রেসিপি তৈরির প্রক্রিয়া শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত খুব সুন্দর করে গুছিয়ে উপস্থাপন করেছেন,এটা দেখে অনেক ভালো লেগেছে।রেসিপি পরিবেশন দুর্দান্ত হয়েছে।ধন্যবাদ সুন্দর রেসিপি পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
আপনার ভালো লেগেছে জেনে আমার খুবই ভালো লাগলো