কাটারি চান্দা মাছের মুচমুচে ভাজি রেসিপি।।
পরম করুনাময় অসীম দয়ালু, মহান সৃষ্টিকর্তার নামে শুরু করছি-
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সদস্য বন্ধুরা। আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি আপনারা সবাই আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো আছি,আলহামদুলিল্লাহ। আজকে আমি আপনাদের সাথে প্রতিদিনের মতো আবারো রেসিপি পোস্ট নিয়ে হাজির হলাম। আমার আজকের ব্লগটি হচ্ছে কাটারি চান্দা মাছের ভাজি রেসিপি পোস্ট। তাই আর দেরি নয় এখনি চলুন আপনাদের মাঝে শেয়ার করে ফেলি। মজাদার চান্দা মাছের মুচমুচে ভাজি রেসিপি।
ছোট মাছ খেতে সবাই পছন্দ করে। তবে ছোট মাছ বানাতে কেউই পছন্দ করে না। ছোট মাছ বানাতে মানুষ বুড়া হয়ে যায়। ছোট ছোট মাছ বানাতে গেলে কোমরে অনেক ব্যথা হয়ে যায়। তাই আমি ছোট মাছ বানাতে পছন্দ করি না। তবে আমার হাজব্যান্ড ছোট মাছ খেতে খুবই পছন্দ করে। তাই আমার আম্মু ঢাকা আসার সময়, অনেক রকমের ছোট ছোট মাছ সুন্দর করে বানিয়ে নিয়ে আসেন। মেয়ের জামাইয়ের জন্য সব সময় ছোট মাছ নিয়ে আসেন। মাছগুলো এত সুন্দর করে বানানো থাকে যে, আমিও সুন্দর করে রান্না করতে পছন্দ করি। আর ছোট ছোট মাছ কেউ যদি বানিয়ে দেয়। রান্না করে খেতেও কিন্তু ভালো লাগে। আমি আজকে যে কাটারি চান্দা মাছগুলো আপনাদের মাঝে শেয়ার করব। সেই মাছগুলো কিন্তু অনেক সুন্দর করে বানানো ছিল। এই মাছের মধ্যে আমি বেশি পেঁয়াজ দিয়েছি। সবগুলো উপকরণ একসাথে মেরিনেট করে নিয়েছি। এভাবে রান্না করলে ছোট ছোট মাছের রেসিপি গুলো খেতে দারুন লাগে। আমি এভাবে রান্না করা আমার আম্মুর কাছ থেকে শিখেছি। রান্নাটা কিন্তু মন্দ হয় না। আর এই রেসিপিটি খেতেও খুব দারুণ হয়েছিল। ভেবেছিলাম আমাদের বাসার বাড়িওয়ালা আন্টিকে অল্প পরিমাণে দিব। তবে এতো ভালো হয়েছে যে, আমি আর আমার হাজবেন্ডের শেষ করে নিয়েছিলাম। বাড়িওয়ালা আন্টিকে আর দেওয়া হয়নি। যাইহোক বন্ধুরা আপনাদের মাঝে আমার আজকের এই চান্দা মাছের মুচমুচে ভাজি রেসিপিটি শেয়ার করি।
কাটারি চান্দা মাচ | এক বাটি |
---|---|
কাঁচা মরিচ | পাঁচ পিস |
পেঁয়াজ | তিন পিস |
কর্নফ্লাওয়ার | দুই চামচ |
রসুন বাটা | হাফ চামচ |
হলুদের গুঁড়ো | এক চামচ |
জিরার গুড়া | এক চামচ |
মরিচের গুঁড়া | এক চামচ |
ধনিয়ার গুড়া | এক চামচ |
সরিষার তৈল | পরিমান মত |
ধনিয়া পাতা কুচি | পরিমাণ মতো |
লবণ | পরিমাণ মতো |
রন্ধন পদ্ধতি
প্রথম ধাপ-
এ পর্যায়ে প্রথমে সবগুলো উপকরণ একটি বাটিতে রেখে দিলাম। তারপর তাতে অল্প পরিমাণে সরিষার তেল ঢেলে দিলাম। তারপর সবগুলো উপকরণ একসাথে চামচ দিয়ে মাখিয়ে নিলাম।
দ্বিতীয় ধাপ-
এপর্যায়ে সবগুলো উপকরণ ভালোভাবে মিশিয়ে নিলাম। তারপর তাতে এক চামচ কর্ন ফ্লাওয়ার দিয়ে দিলাম। কনফ্লাওয়ার দেয়ার কারণ হচ্ছে, মাছগুলো অনেকক্ষণ মোচমোচে থাকবে। সবকিছু একসাথে ভালোভাবে মিশানোর পর। দারুন একটি সুগন্ধ বের হয়েছে। এখানে যেহেতু সরিষার তেল ইউজ করেছি। সেজন্যে রেসিপিটি মেরিনেট করার সময় অনেক ঘ্রাণ বের হয়েছিল। মনে হয়েছিল যেন এখনই খেয়ে ফেলি। তারপর ১০ মিনিটের মতো রেস্টে রেখে দিলাম।
তৃতীয় ধাপ-
এ পর্যায়ে একটি ফ্রাই পেন চুলায় বসিয়ে দিলাম। তারপর ফ্রাই পেন গরম হয়ে আসার পর,দিয়ে দিলাম অল্প পরিমাণে সরিষার তেল। যেহেতু আগেই মাছগুলোর সাথে সরিষার তেল দিয়ে মেরিনেট করেছি। সেহেতো এই পর্যায়ে বেশি তেল দিচ্ছি না।তেলটা গরম হয়ে আসার পর। মেরিনেট করা কাটারি চান্দা মাছগুলো দিয়ে দিলাম।
চতুর্থ ধাপ-
ফ্রাই প্যানে মাছ গুলো দিয়ে দেওয়ার পর সবগুলো সুন্দরভাবে ছড়িয়ে দিলাম। এ পর্যায়ে চুলার তাপটা মিডিয়াম রেখে মাছগুলো ভাজতে হবে। মাছগুলো দেখা যাচ্ছে হালকা হালকা বর্ণ চেঞ্জ করে সিদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। এখানে সবগুলো উপকরণ একসাথে দেওয়ার কারণ হলো। মাছ গুলোর সাথে পেঁয়াজগুলো একসাথে ভাজা হয়ে যাবে। আর নয়তো পেয়াজ যদি আগে দেওয়া হতো তাহলে পেঁয়াজগুলো মাছের আগে পুড়ে যেত। তাই সবগুলো উপকরণ একই সাথে মেরিনেট করলে সবগুলো একসাথে সুন্দর করে ভাজা হয়। আর রেসিপিটা খেতেও দারুন হয়।
পঞ্চম ধাপ-
মাছগুলো অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে আস্তে আস্তে নাড়াচাড়া করে ভেজে নিলাম। মাছ গুলো ভালভাবে ভাজা হয়ে আসার পর। তাতে দিয়ে দিলাম ধনিয়া পাতা। তারপর আবার অনেকক্ষণ নাড়াচাড়া করলাম। যখন মাছগুলো একদম কড়া ভাজা হয়ে যায়। তখন মাছগুলো চুলা থেকে নামিয়ে নিলাম।
পরিবেশন-
বন্ধুরা আজ এ পর্যন্তই। কেমন হলো আমার আজকের রেসিপি। অবশ্যই কমেন্টসের মাধ্যমে জানাবেন। সবার জন্য শুভকামনা ও দোয়া রইল। এ প্রত্যাশা রেখে এখান থেকে বিদায় নিয়েছি। আল্লাহ হাফেজ।
সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ,আল্লাহ হাফেজ।।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | রেডমি নোট-৮ |
শিরোনাম | কাটারি চান্দা মাছের মুচমুচে ভাজি রেসিপি |
স্থান | নিজবাসা, নারায়নগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ। |
তারিখ | ০৬- ০৩ -২০২৫ |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @titash |
আমার পরিচিতি
আমি মোছাঃ মুসলিমা আক্তার নীলা। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @titash নামে পরিচিত। আমার জন্মস্থান চট্রাগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ভাদুঘর গ্রামে। আমি বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে বাংলা বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করতেছি। আমি বিবাহিত,আমার একটি কন্যা সন্তান আছে। আমি আমার হাসবেন্ডের সাথে ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত নারায়নগঞ্জ জেলায় বসবাস করছি। আমি আমার হাসবেন্ডের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্ম সম্পর্কে জানতে পারি। প্লাটফর্মটার বিষয়ে জেনে আমি এখানে কাজ করার আগ্রাহ প্রকাশ করি। তারপর ২০২৩ সালের ফ্রেব্রুয়ারী মাসে আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্মে যুক্ত হয়। আমি ভ্রমন করতে,মজার মজার রেসিপি করতে,বই পড়তে, নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে ও সৃজনশীল জিনিষ তৈরী করতে ভালোবাসি। আমি বাঙ্গালী জাতি হিসাবে ও আমার বাংলা ব্লগের সদস্য হতে পেরে নিজেকে নিয়ে গর্ববোধ করি।
চান্দা মাছের বড়া তৈরি করে খাওয়া হয়েছে। তবে এভাবে ভাজি করে কখনো খাওয়া হয়নি। দেখে বোঝা যাচ্ছে খেতে খুবই সুস্বাদু হয়েছে এভাবে একদিন ট্রাই করে দেখব।মাছগুলো যেভাবে সাজিয়ে রেখেছেন দেখতে বেশ ভালোই লেগেছে। ধন্যবাদ মজাদার এই রেসিপিটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
অবশ্যই আপু একদিন ট্রাই করে দেখবেন রেসিপিটা অনেক দুর্দান্ত লাগে। একবার ট্রাই করলে দ্বিতীয় বার আবার ট্রাই করতে মন চাইবে। আপনাকেও স্বাগতম আপু।
মেয়ে জামাইয়ের জন্য মাছ নিয়ে এসেছে আসলে শ্বশুরিরা এইরকম হয় জামাইকে ভালোবাসে এবং জামাইয়ের পছন্দের খাবার খাওয়াতে পারলে তৃপ্তি পায়।ভীষণ চমৎকার করে মুচমুচে ভাজা করেছেন। মাছ ভাজা খেতেই মজা বেশি।মাছ গুলো এত্তো সুন্দর করে সাজিয়ে ফটোগ্রাফি করেছেন যা খুবই আকর্ষণীয় লাগছে দেখতে। ধাপে ধাপে রন্ধন প্রনালী চমৎকার সুন্দর করে আমাদের সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
জ্বি দিদি, আমার আম্মু অনেক সুন্দর করে মাছগুলো বানিয়ে নিয়ে এসেছেন। দেখতে সুন্দর লাগছে বিদায় সুন্দর করে সাজিয়েছি। আার আপনাদের সামনে উপস্থাপন করেছি । আপনাকেও স্বাগতম দিদি।
আসলে ছোটবেলায় যখন মা এই ছোট মাছ ভাজি করতে তখন আমি পাশে বসে বসে সেই মাছগুলো খেতাম। আসলে এর জন্য অনেকবার বকাও শুনেছি। এই ধরনের ছোট মাছ খেতে আমার খুব ভালো লাগে। আজ আপনি আমাদের মাঝে দারুণ একটা রেসিপি শেয়ার করেছেন এজন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
মা যখন মাছ ভাজে চুপিচুপি খাওয়ার অভ্যাসটা হয়তো সবারই ছোটবেলায় ছিল। আমিও ছোটবেলায় এমন করতাম। হাহাহা। আপনাকে ও স্বাগতম ভাইয়া।
মা মেয়ে জামাইয়ের জন্য মাছ বানিয়ে নিয়ে এসেছে। মেয়ের জামাই পছন্দ করে বলে সে নিয়ে এসেছে। মায়েরা মেয়ে জামাইকে কতটা ভালবাসে এখান থেকেই বোঝা যায়। যাইহোক আপু, চান্দা মাছ মুচমুচে করে ভাজি রেসিপি তৈরি করেছেন। ছোটবেলায় আমিও চান্দা মাছের ভাজি দিয়ে ভাত খেয়ে স্কুলে যেতাম। আমি এবার ছোটবেলা থেকেই ছোট মাছ খেতে পারি। আপনার রেসিপি টা দেখে মনে হচ্ছে অনেকদিন এভাবে মুচমুচে করে মাছ ভাজি খায় না।
আপনি তো তাহলে ভালোই ছোট মাছ খেতে পারেন। আমি ছোট মাছ তেমন একটা খেতে পারি না। তবে আমার আম্মু আমাদের তিতাস নদী থেকে অনেক মাছ নিয়ে আসেন। কেননা আমার হাজব্যান্ডই নদীর মাছ খুবই পছন্দ করেন। ধন্যবাদ আপু সুন্দর কমেন্টস করার জন্য।
আপনার আম্মু দেখছি অনেক সুন্দর সতেজ চান্দা মাছ নিয়ে এনেছে। সেই চান্দা মাছ আপনি অনেক সুন্দর ভাবে ভাজি করেছেন ।যেটি দেখে মনে হচ্ছে অনেক লবণীয় হয়েছে খেতে ধন্যবাদ।
আসলেই আপু এই রেসিপিটি খুবই লোভনীয় হয়েছিল। দেখতে যেমন লাগছে এর চেয়ে বেশি সুস্বাদু হয়েছিল। ধন্যবাদ আপনাকে।
ছোট মাছ খাওয়ার মজাই আলাদা। আজকে আপনি ছোট চান্দা মাছের ভাজি রেসিপি করেছেন। তবে এই মাছগুলোর মধ্যে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন আছে। আর ছোট মাছের রেসিপির মধ্যে পেঁয়াজ একটু বেশি এবং ধনেপাতা দিলে খেতে বেশ মজাই লাগে। সুন্দর করে রেসিপিটি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন তাই ধন্যবাদ আপনাকে।
এগুলোকে মোরলা বা মোওয়া মাছ বলা হয়ে থাকে। এই ছোট মাছগুলো বেশ পুষ্টিকর। মাছের রেসিপি টা বেশ দারুণ তৈরি করেছেন আপনি। খুবই সুন্দর উপস্থাপন করেছেন। সবমিলিয়ে চমৎকার ছিল। ধন্যবাদ আমাদের সাথে রেসিপি টা শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।