শারদীয়া কনটেস্ট ১৪৩২[মেয়ের চোখে মায়ের দর্শন ]

in আমার বাংলা ব্লগ5 days ago (edited)

হ্যালো বন্ধুরা

মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সকল সদস্যগণ,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি আপনারা সকলেই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন?পরম করুণাময় ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় আমিও পরিবারের সবাইকে সাথে নিয়ে ভালো আছি।

আমি @bristychaki,আমি একজন বাংলাদেশী। আমার বাংলা ব্লগ এর আমি একজন ভেরিফাইড ও নিয়মিত ইউজার।আমি বাংলাদেশের গাইবান্ধা জেলা থেকে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি। প্রতিদিনের মতো আমি আজও নতুন একটি পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি।আমি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করি পোস্টের ভিন্নতা আনার।তারই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে নতুন একটি শারদীয়া ফটোগ্রাফি পোস্ট আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।আশাকরি আমার আজকের ফটোগ্রাফি পোস্ট টি আপনাদের ভালো লাগবে!

IMG-20251009-WA0005.jpg

গত বছরের ন্যায় এবারও শারদীয়া কনটেস্ট এর আয়োজন করার জন্য আমাদের বড় দাদা কমিউনিটির এডমিন মডারেটর সকলকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা অভিনন্দন।গতবছর দুর্গাপূজোয় গ্রামের বাড়িতে ঘুরতে গিয়েছিলাম।নিজের বাড়িতে পূজো হয় আর বাড়িতে পুজোর কারণে এতটাই বেশি ব্যস্ত থাকতে হয় যে ছবি তোলার মতো কোনো পরিবেশ পরিস্থিতি থাকে না।রাতের ভরে উঠে স্নান সেরে সোজা পূজোর আয়োজন করতে লেগে পড়ি আমরা সকলে মিলে।যাতে করে পূজার প্রতিটি আয়োজনে কোন কমতি না থাকে এটা বরাবরই আমাদের বাড়িতে হয়ে থাকে।আমাদের বাড়ির পুজো অনেক বেশি জাঁকজমকপূর্ণ না হলেও আচার নিয়মের দিক থেকে একেবারে নিখুঁতভাবে প্রতিটি পূজো সম্পন্ন হয়।আর এটি আমাদের সকলের আত্মতৃপ্তি যে মাকে আমরা খুব আদর যত্ন করে পুজোর পাঁচটা দিন নিজের ঘরে আগলিয়ে রাখি।

আমার জীবনের সবচেয়ে সুন্দর স্মৃতি জড়িয়ে আছে নিজের বাড়ির দূর্গাপূজোর সঙ্গে। ছোটবেলা থেকেই দেখেছি, পূজো শুরু হবার আগেই বাড়ি যেনো উৎসবের রঙে ভরে উঠতো।মা-বাবা,কাকা-কাকিমা পিসি ভাইবোন,আত্মীয়-পরিজন,সবাই মিলে এক অন্যরকম আনন্দ।চারপাশে ধূপের গন্ধ, শঙ্খ আর ঢাকের আওয়াজ,ঠাকুর ঘরে আলো-সাজ… সব মিলিয়ে মনে হতো মা দূর্গা সত্যিই আমাদের বাড়িতেই এসেছেন।মায়ের চোখের দিকে তাকালেই অদ্ভুত এক শান্তি পেতাম।যেনো তিনি শুধু দেবী নন, তিনি আমাদের নিজের একজন,যিনি আশীর্বাদ নিয়ে আসেন ঘরে।

এই পূজোর প্রতিটি মুহূর্ত ছিলো আমার কাছে অপরিসীম আনন্দের।তবে এ বছর অসুস্থতার কারণে মায়ের মুখ দেখতে পারিনি।ভীষণ কষ্ট হয়েছে, মনে হয়েছে জীবনের সবচেয়ে প্রিয় উৎসব থেকে আমি বঞ্চিত।কিন্তু জানি, মা শুধু মণ্ডপে নন, তিনি আছেন আমার হৃদয়ের গভীরে।এ বছর পারিনি কিন্তু আগামী বছর নিশ্চয়ই আবার মায়ের সামনে দাঁড়িয়ে প্রণাম করতে পারবো।🙏❤️

বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলাম তারপরে একটা অপারেশন হলো সব মিলিয়ে শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ ছিলো।তারপরেও মনের মধ্যে একটা আনন্দ কাজ করছিলো যে মা কয়েক দিনের মধ্যেই আমাদের মাঝে আসছেন তাই যত অস্বস্তি থাকি না কেনো নিজের মতো করে পুজোর কেনাকাটা ঘরদোর পরিষ্কার করা সবকিছুই টুকটুক করে করছিলাম।মনে মনে ভেবে রেখেছিলাম হয়তো এবার বাড়িতে যাব না বা অন্য কোথাও যাবো না আমি যেখানে বসবাস করি সেখানেই এবারের পুজো কাটাবো।তার কারণ হলো আমার শারীরিক অবস্থা খুব একটা ভালো ছিলো না।সবকিছুই মোটামুটি প্রাণ মাফিকই হচ্ছিলো কিন্তু শেষে এসে আমার সমস্ত পরিকল্পনা ব্যর্থ হলো।ষষ্ঠীর দিন রাত থেকে আমি জ্বর ও নিমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পড়ি এবং এতোটাই খারাপ পরিস্থিতি হয় যে বিছানা থেকে ওঠার মত আমার অবস্থা ছিলো না।তখন মনে মনে ভাবলাম যে এবার হয়তো মা কোন কারনে আমার উপরে বিরূপ হয়েছেন তাই আমার সকল পরিকল্পনাগুলো সফল হতে দিলেন না।কি আর করার আমি তো আর মায়ের উপর রাগ করতে পারি না কারণ তিনি তো জগৎ জননী তাঁর উপর কি রাগ করে থাকা যায়!সবকিছু ভুলে বিছানায় শুয়েই প্রতিটি দিন মায়ের নাম জপ করতে লাগলাম এবং মাকে বললাম দ্রুত আমাকে সুস্থ করে দাও।এছাড়া আর কিছুই করার ছিলো না।

আমি অসুস্থ ছিলাম তাই আমার সেবা যত্ন করতে আমার স্বামী ব্যস্ত ছিলেন আর সেও অনেকটা মর্মাহত ছিলো।আমাকে নিয়ে তাই তার মধ্যেও পুজো দেখার কোনো আনন্দ ছিলো না,সে কখনোই আমাকে রেখে পুজো দেখতে যাবে না এটা আমি খুব ভালো করেই জানি।তাকে বেশ কয়েকবার বলেও ছিলাম কিন্তু সে যায়নি।বাধ্য হয়েই দুই মেয়েকে পাঠাতে হলো।ওরা দুজন নবমীর দিন আশেপাশের কয়েকটি মন্ডপে ঘুরে ঘুরে মায়ের দর্শন করেছে,আর ওদের যা মনে হয়েছে তাই ছবি তুলেছিলো যা শুধু আমাদেরকে দেখানোর জন্য।যাতে আমি বিছানায় শুয়ে শুয়ে মায়ের মুখ দর্শন করতে পারি।

আমাদের বাংলাদেশের পুজো গুলো বরাবর একই রকম হয়ে থাকে!বিশেষ করে আমাদের এলাকাতে আমরা সেই ছোটবেলা থেকেই যেরকম প্রতিমা গুলো দেখে আসছিলাম আমার মনে হয় ঠিক তেমনটিই রয়েছে!মাঝে মাঝে দুই একটা মন্ডপে ব্যতিক্রম কিছু দেখতে পাওয়া যায় তবে গ্রামের পুজো গুলো ওই একই রকমের হয়ে থাকে।তাই সেরকম থিম সম্পর্কে আমি বিশেষ কোনো উল্লেখ করতে পারছি না।

মা দূর্গার “মহিষাসুরমর্দিনী” রূপ

এই রূপে মা দূর্গা মহিষাসুর নামের অসুরকে বধ করছেন যা শুভের বিজয় ও অশুভের পরাজয়ের প্রতীক।এই রূপে দেখা যায় মা দূর্গা সিংহের পিঠে আরোহী,হাতে বিভিন্ন অস্ত্র,ত্রিশূল, তলোয়ার, চক্র ইত্যাদি।পায়ের নিচে মহিষাসুর পরাজিত অবস্থায়,মুখে শান্ত অথচ শক্তিময় ভাব।এই রূপটি শক্তির, ন্যায়ের ও সাহসের প্রতীক যেখানে মা দূর্গা দেবতাদের শক্তি একত্র করে অসুরের বিনাশ করেন।

নবমীর পরিক্রমা ১-৯-২০২৫ বুধবার।সময় রাত ৮ টা

IMG-20251009-WA0004.jpg
ডালপট্টি বগুড়া

IMG_20251009_191420.jpg

দত্তবাড়ি বগুড়া

বগুড়ার সবচেয়ে বড় মায়ের প্রতিমা।মায়ের উচ্চতা ১৬ ফিট ছিলো যা এবারই প্রথম।নিউজে দেখেছিলাম যে এবার দুর্জয় ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা পরিমল রাজ সাক্ষাৎকারে বলছিলেন কলকাতার সল্টলেক এর থেকে কিছুটা আবার ইন্টারনেট থেকে কিছুটা ধারণা নিয়ে তাঁরা এবার মায়ের মূর্তি তৈরি করেছেন।মূর্তি তৈরিতে সময় লেগেছিলো আড়াই মাস।এবারের আলোকসজ্জার অনেক সরঞ্জাম কলকাতা থেকে এনেছিলেন এবং বাকিগুলো বগুড়া থেকে নেওয়া।সবমিলিয়ে এবার বগুড়ার পূজো গুলোর মধ্যে দুর্জয় ক্লাবের পূজো প্রথম হয়েছে।মেয়েরা বেশিকিছু ফটোগ্রাফি করতে পারেনি শুধুমাত্র মায়ের একটি মাত্র ফটোগ্রাফি করেছিলো।

IMG_20251009_191436.jpg

দুর্জয় ক্লাব বগুড়া

IMG_20251009_182743.jpg
জলেশ্বরীতলা বগুড়া

IMG_20251009_182706.jpg

কামাড়গাড়ি বগুড়া

IMG_20251009_182714.jpg
মালতিনগর বগুড়া

IMG_20251009_182654.jpg

সিউজগাড়ি বগুড়া

IMG_20251009_182617.jpg

চেলোপাড়া দূর্গা মন্দির

IMG_20251009_180622.jpg
বড়গোলা বগুড়া

IMG_20251009_182801.jpg

IMG_20251009_182904.jpg
ছোট কন্যা 💛

কিছু আলোকসজ্জা

InCollage_20251009_191320486.jpg

অল্প কিছু মুহূর্তের ভিডিও

এই ছিলো আমার মেয়ের চোখে দেখাম এবারের পূজোর মুহূর্ত।আশাকরি আপনাদের ভালো লাগবে!সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন এই প্রার্থণা করে আজ এখানেই শেষ করছি।

শারদীয়ায় কনটেস্ট১৪৩২
কনটেস্টফোটোগ্রাফী
ডিভাইসVivo Y30
ফটোগ্রাফারআমার কন্যা
লোকেশনবগুড়া,বাংলাদেশ

99pyU5Ga1kwqSXWA2evTexn6YzPHotJF8R85JZsErvtTWY6ryCgnizd4SmozHPACxnHF8Lc4cYHYazhMMYtnXHUFLoeHg6pvGz8XiqU4kJ9G4Wwh7s6WvRRrwCpUijw4cW.jpeg

VOTE @bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png OR
SET @rme as your proxy
witness_vote.png

Break3.jpg
Banner User.png
Break3.jpg

আমি অতশী চাকী (বৃষ্টি) । নতুন নতুন রেসিপি বানিয়ে সবাইকে খাওয়াতে আমার ভালো লাগে। আর ভালো লাগে নতুন নতুন জায়গা ভ্রমণ করতে। আমি "ভালো কাজের, ভালো ফল কথাটাতে" মনে প্রাণে বিশ্বাস করি এবং মেনে চলার চেষ্টা করি।

Break3.jpg

3jpR3paJ37V8JxyWvtbhvcm5k3roJwHBR4WTALx7XaoRovfEfMUsxphK2C94MUmPesRzxucV6L5C5WztC1e4L1hqcx2mH3BcV9oEFqiwTsErcMQNvVa4puc9hxr4N1FcnerVs (1).gif

jnusq1Poy5a6FAcNT2ZJbuWBfw9vZex94Aucd6PoC8arjzkSd1TrgjnUQ92egMVBUBgY16AxTkPk8iutPydufw4xqqKbF1vwcnUXyDPBYV...Nip4pE8JDzRuxbXMQv6HjcePB3P3vRP7LoKcVLqvoFLbhC2y6eiRbEeZwPKr4nWHXkptjuZWnupYpX3hkeutuSrC7i7E8nyYhumMR4q5a6eVHYmWKZN393Wu5.webp