ছোট গল্প: চুপচাপ চারপাশ।

in আমার বাংলা ব্লগ12 days ago
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু /আদাব

🌿আমি তানহা তানজিল তরসা। আমি বাংলাদেশ 🇧🇩 থেকে বলছি। আমার স্টিমিট আইডির নাম @tanha001


আজ ১৭ জুন রোজ মঙ্গলবার ২০২৫ ইং:।

বাংলায় ০৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ।

হ্যালো বন্ধুরা.........

কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে অনেক ভালো আছি। আজ আমি আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে আলোচনা করবো। আমি সপ্তাহে সাতটি আলাদা আলাদা পোস্ট শেয়ার করার চেষ্টা করি সেই ধারাবাহিকতায় আজ একটা ছোট গল্প পোস্ট শেয়ার করব।আশা করি আমার লেখা ছোট গল্পটি আপনাদের কাছে অনেক ভালো লাগবে। চলুন তাহলে শুরু করা যাক।

woman-9370170_1280.webp.jpg

Source

বেলা তখন দুপুর গড়িয়ে বিকেল ছুঁই ছুঁই। কলসীর পাড়ে বসে জলে হাত ছুঁইয়ে বসে আছে মিনা। তার চোখে কোনো জল নেই, কিন্তু ভেতরে বৃষ্টি থামে না। গ্রামের লোকেরা তাকে দেখে অভ্যস্ত চুপচাপ, সাদা শাড়ি, কপালে কোনো টিপ নেই। কেউ কেউ বলে স্বামী মরে গেছে তো, আর কী চায়? কেউ কেউ ভাবে, চরিত্র ভালো ছিল না নিশ্চয়, তাই সংসার ভাঙলো।কিন্তু সত্যিটা কেউ জানে না।মিনার স্বামী রফিক ছিল সমাজের চোখে “ভালো মানুষ” কুরআন পড়ে, নামাজে যায়, বাজারে সদাই করে আনে। কিন্তু সেই মানুষটাই রাত হলে হয়ে উঠতো একটা জানোয়ার। দিনের পর দিন, বছর ধরে মিনা সহ্য করেছে শুধু একটা মেয়ের মুখ চেয়ে তার ছোট্ট মেয়ে ইরা।একদিন রাতে ইরা মায়ের আর্তনাদ শুনে চুপিচুপি ঘুম থেকে উঠে এসে দেখে তার বাবা মাকে মারছে। ছোট্ট ইরা চিৎকার করে উঠেছিল “আম্মুকে মারিস না” রফিক থেমে যায় কিন্তু তখনও চোখে রক্ত। সেই রাতে মিনা প্রথমবার নিজের মুখের সামনে আয়না ধরেছিল “আর কতদিন নিজেকে লুকাবি?” পরদিন সকালে মিনা সিদ্ধান্ত নেয়, আর নয়। বাঁচতে হলে মুখ খুলতেই হবে।সে প্রথমে যায় স্থানীয় মেম্বারের কাছে। কেউ বিশ্বাস করে না। মেম্বার বলে,এইরকম কথা কইস না, পুরুষ মানুষ একটু আধটু মারে। কিন্তু মিনা চুপ করে না। সে যায় থানায়। থানার ইনচার্জ এক নারী অফিসার, নাম রুবিনা। তিনি মন দিয়ে শোনেন। তিনি বলেন, আপনি সাহস দেখিয়েছেন। আমরা আছি আপনার পাশে।মিনা মামলা করে। তার বিরুদ্ধে গ্রাম তেতে ওঠে। “স্বামী মারা গেছে, এখন আবার মামলা? নারী হইয়া বিচার চাইতে গেছে?”একদিন তার ঘরের দরজায় আগুন ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টাও করা হয়। কিন্তু এবার মিনা একা নয়। রুবিনা তার পাশে। আর আছে গ্রামের নতুন প্রজন্ম, যারা চায় সত্য, চায় পরিবর্তন। কলেজের ছেলেমেয়েরা এসে দাঁড়ায় মিনার পাশে। তারা বলে, “এই চুপ থাকা আর চলবে না।”ধীরে ধীরে শুরু হয় পরিবর্তন। মিনা থানার সহায়তায় একটি নারী সহায়তা কেন্দ্রে কাজ পায়। এখন সে অন্য নারীদের পাশে দাঁড়ায়। ছোট্ট ইরা বড় হচ্ছে গর্ব নিয়ে “আমার মা একটা যোদ্ধা।”গ্রামের মানুষ আস্তে আস্তে মুখ ফিরিয়ে নেয় সেই পুরনো মানসিকতা থেকে। তারা বুঝতে শেখে নির্যাতন গোপন করা নয়, বলা দরকার। বিচার চাইলে ‘লজ্জা’ নয়, বরং তা-ই সাহসের প্রমাণ।চুপচাপ থাকা এক ধরনের অপরাধ।একটা সমাজ তখনই বদলাতে শুরু করে, যখন একটা মানুষ অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিবাদ করে। মিনা সেই পরিবর্তনের নাম। সে আমাদের শেখায়, সাহসই আসল শক্তি।

পোস্টের বিষয়ছোট গল্প
পোস্টকারীতানহা তানজিল তরসা
ডিভাইসরেডমি নোট ১১
লোকেশনপাবনা
আজ এখানেই শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আর লেখার অমিল ও ভূল ত্রুটি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখেবেন।


১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য।


আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়

আমি তানহা তানজিল তরসা। আমার স্টিম আইডির নাম @tanha001। আমি বাংলাদেশের একজন নাগরিক। আমি বিবাহিতা। আমার একটা ছেলে সন্তান আছে। আমি ফটোগ্রাফি, গান গাইতে,রান্না করতে ও বাইকে ঘুরতে অনেক পছন্দ করি। আমার জন্ম স্থান কালিগঞ্জ থানা ঝিনাইদহ জেলায়। আমি পেশায় এক গৃহিনী। পাশাপাশি আমি আমার পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছি। আমি অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। আমি আমার হাসবেন্ড এর চাকরির সূত্রে পাবনা চাটমোহর এ বসবাস করছি।


সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টটি দেখার জন্য ও সুন্দর মতামত শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। স্পেশালি ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমার বাংলা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা, এডমিন ও মডারেটরদের যারা আমাকে এত সুন্দর একটা কমিউনিটিতে কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছে এবং আমাকে প্রতিনিয়ত সাপোর্ট করছেন।


১০%প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য।


Logo.png

Banner.png

20250419_190754.jpg