নতুন রূপে সেজে উঠেছে বাংলার আকাশ

আসসালামুয়ালাইকুম, এবং হিন্দু ভাইদের কে আদাব।আমার বাংলা ব্লগ এর সবাই কেমন আছেন, আশা করি প্রত্যেকে অনেক বেশি ভালো আছেন। আমি ও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। প্রতিদিনের ন্যায় আজকে আপনাদের সাথে আকাশের সৌন্দর্য করবো । আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক বেশি ভালো লাগবে।তো চলুন এবার শুরু করা যাক।

আকাশের কোনো এক অদৃশ্য ডাক থাকে। কখনও নীল রংয়ের নিঃশব্দ আহ্বান, কখনও মেঘের অস্থির চোখরাঙানি। কয়েকদিন ধরে প্রতিদিনই তাকিয়েছি সেই আকাশের দিকে, প্রতিবারই যেন এক নতুন গল্প খুলে দিয়েছে সে। কয়েকদিন ধরে আকাশ যেন এক নতুন রূপে নিয়েছে। কখনো একদম পরিষ্কার, নেই কোন মেঘ, যেন এক নীল পাহাড়। আবার কখনো আকাশ এমন রুপে সেজে উঠে যা একদম চারদিকে অন্ধকার নেমে দেয়। তখন মনে হয় আকাশ হয়তো অভিমান করেছে। বেশ কিছু দিন ধরে এভাবেই চলছে আকাশের এক নতুন খেলা। আসলে আকাশের এরকম সৌন্দর্য দেখতে ও আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে। আসলে প্রকৃতি কখন কি রুপ নেয় তা আসলে বলে উঠা অসম্ভব।

সকালের আকাশ ছিল নির্ভেজাল কোমল। সূর্যের আলো তখনো রুক্ষ হয়নি, বরং সোনালি। পাতলা মেঘ ছিল যেন তুলোর মতো, হালকা ধোঁয়ার রেখা। গাছপালার মাথার ওপরে দিয়ে সেই মেঘ যখন ভেসে যাচ্ছিল, মনে হচ্ছিল এক শিল্পীর তুলিতে আঁকা এক সরল জলরঙ। এক একটা সকালে আমি ভেবেছি, প্রকৃতি বুঝি জেগে উঠেছে নতুনভাবে স্নিগ্ধ, নির্মল, এক অদ্ভুত ভালোবাসা নিয়ে। গ্রামের দিকে গেলে, এই সকাল যেন আরও জীবন্ত হয়ে ওঠে। বাতাসে হালকা ধানের গন্ধ, পাখির ডাক, আর সবকিছুর ওপরে এক শুদ্ধ নীলের চাদর। এ যেন কোনো শব্দহীন প্রার্থনার মতো, যা শুধু দেখলেই বোঝা যায়।

দুপুরের আকাশ একেবারে ভিন্ন। তখন নীলের ঘনত্ব বেড়ে যায়, মেঘ সরে যায় অনেকটাই, সূর্য উঠে পড়ে মাথার ওপর। কিন্তু সেই আলো সবসময় উগ্র নয়। একটা ঔজ্জ্বল্য থাকে, একটা গর্ব থাকে যেন আকাশ নিজে নিজের শক্তি প্রকাশ করতে চায়। মাঝে মাঝে কিছু সাদা মেঘ থাকে, তবে তারা খুব ধীরে চলে। মনে হয় তারা ক্লান্ত, কিংবা তারা শুধু আকাশের বুক ছুঁয়ে ছুঁয়ে হেঁটে যেতে চায়। এই সময়টা আকাশকে সবচেয়ে পরিষ্কার মনে হয় যেমন একটা মন, যেটা কাঁদার পর হালকা হয়ে যায়। দিনের মাঝখানে দাঁড়িয়ে আমি একবার তাকিয়ে থাকি সেই আকাশের দিকে কোনো উদ্দেশ্য ছাড়া, শুধু একটুখানি স্থিরতা খুঁজে পাওয়ার জন্য।

বিকেল নামার সময় যেন এক মোহ তৈরি হয়। সূর্য একপাশে হেলে পড়ে, তার আলো আর রং আকাশকে রাঙিয়ে দেয় অন্যরকম ভাবে। কখনও কমলা, কখনও হালকা গোলাপি, আবার কখনও কখনও রক্তিম আভা মেশে আকাশে। এই সময়টায় প্রকৃতি যেন কথা বলে ওঠে। গাছের ছায়া লম্বা হয়, পাখিরা বাসায় ফেরে, আর সেই আলো আকাশের গায়ে এমনভাবে পড়ে, যেন কোনো স্বপ্নকে ছুঁয়ে যাচ্ছে। বিকেলের আকাশ খুব আবেগী, যেন কোনো প্রিয়জনের কাছ থেকে বিদায়ের আগের মুহূর্তগুলো। কোনো কথা নেই, কিন্তু এক ধরনের অনুভব, যা শুধু মনেই বোঝা যায়।

রাতের আকাশ যেন একেবারে আলাদা পৃথিবী। দিনের আলো, গতি, কথাবার্তার বাইরে সে এক শান্ত আশ্রয়। তারা উঠে আসে একে একে, কখনও একসাথে, কখনও দূরে দূরে। কোনো শব্দ নেই, তবু সবকিছু বলার মতো নীরবতা। চাঁদের আলো ধুয়ে দেয় চারপাশ, কখনও সেটা পূর্ণ, কখনও কাস্তের মতো। এই আকাশের দিকে তাকিয়ে আমি ভাবি, কত মানুষ হয়তো একসাথে এই তারা দেখছে, কত গল্প হয়তো চলছে দূরের কোনো জানালায়। রাতের আকাশ এক গভীর আত্মসমর্পণ নিজেকে ছেড়ে দেওয়ার একটা চুপচাপ আমন্ত্রণ।

সবাই কে অনেক অনেক ধন্যবাদ ‌।

আমি একজন বাংলাদেশের নাগরিক। আমি বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি এবং আমার মাতৃভাষা বাংলা। আমি একজন ছাত্র, আমি আসন্ন এইচএসসি সমমান পরীক্ষা শেষ করে দিনাজপুর সরকারি কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছি। আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করি। আমি গত ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই। এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার খোড়াগাছ ইউনিয়নের তিন নং ওয়ার্ড।আমি ফটোগ্রাফী ও ভ্রমণ করতে অনেক ভালোবাসি।