Steem Bangladesh contest- Sports || Kabadi/Hadudu || My review
HELLO
MY DEAR FRIENDS
This is @mahmudul20 from Rangpur Bangladesh
আসসালামু আলাইকুম।
আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
প্রথমে ধন্যবাদ জানাতে চাই স্টিম বাংলাদেশ কে।তারা প্রতিদিন নিদিষ্ট কোনো টপিক বাছাই করে দেয়,এবং আমরা তাতে অংশগ্রহণ করি।আজকের টপিক স্পোর্টস। তাই আমি হা-ডু-ডু বা কাবাডি খেলা সম্পর্কে লিখতে যাচ্ছি। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।
খেলাধূলা কেবল বিনোদনের মাধ্যম নয়। শারীরিক ও মানসিক বিকাশ এবং সুস্থতার জন্য খেলাধূলার গুরুত্ব অপরিসীম। খেলাধূলা বর্তমানে মানুষের প্রাণের স্পন্দনে পরিণত হয়েছে। সারাবিশ্বে নানা প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিভিন্ন রকম খেলা পেয়েছে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। আবহমানকাল থেকে খেলাধূলা বাঙালির লোকজীবনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে মিশে আছে। দেশি-বিদেশি নানা রকমের খেলার পাশাপাশি বাঙালির লোকায়ত জীবনের ঐতিহ্যবাহী ও জাতীয় খেলা হিসেবে হা-ডু-ডু বা কাবাডি অন্যতম।
খেলাধূলার প্রয়োজনীয়তাঃ
জীবনের প্রয়োজনে খেলাধূলার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। সুষ্ঠু ও সুন্দর খেলাধূলার মাধ্যমে শরীর-মন সতেজ ও প্রফুল্ল থাকে। খেলাধূলার মাধ্যমে মানুষ কাজে প্রেরণা পায়, যা জাতি গঠনের ক্ষেত্রকে প্রসারিত করে। শিক্ষার ক্ষেত্রে খেলাধুলার গুরুত্ব ব্যাপক। খেলাধুলার মাধ্যমে একে অপরের সাথে বন্ধু সুলভ আচরণ করার সুযোগ পায়।
আমাদের দেশীও কিছু খেলাঃ
আমাদের দেশে আগে থেকেই বা প্রাচিনকাল থেকেই বিভিন্ন রকম দেশি খেলা প্রচলিত রয়েছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- হা-ডু-ডু বা কাবাডি, গোল্লাছুট, ডাংগুলি, দাঁড়িয়া বাঁন্ধা, লাঠিখেলা, কুস্তি বা বলী খেলা, লুকোচুরি বা কানামাছি, এক্কাদোক্কা, মার্বেল খেলা, নোনতা, নৌকাবাইচ, ঘুড়ি ওড়ানো, বউছি, সাঁতার ইত্যাদি। ঘরোয়া খেলার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে দাবা, লুডু, তাস, বাঘবন্দি, পাশা ইত্যাদি। যা দীর্ঘদিন ধরে আমাদের মানসগঠন ও ঐতিহ্যের সাথে মিশে আছে।
বিদেশি খেলাঃ
বিশ্বায়নের ফলে পাশ্চাত্যের বিভিন্ন খেলা আমাদের দেশীয় খেলাধুলার জগতে এসে সন্নিবেশিত হয়েছে। স্যাটেলাইটের যুগে বিদেশি বিভিন্ন খেলা ও আমাদের দেশে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। উল্লেখযোগ্য বিদেশি খেলা হচ্ছে ক্রিকেট, ফুটবল, হকি, ব্যাডমিন্টন, টেনিস, ভলিবল, জুডো, মুষ্টিযুদ্ধ, শুটিং ইত্যাদি।
জাতীয় খেলা হিসেবে হা-ডু-ডু:
জাতীয় খেলা এমন একটি খেলা যা কোনো জাতির সংস্কৃতির একটি স্বকীয় অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়। বাংলাদেশের জাতীয় খেলা হা-ডু-ডু বা কাবাডি। হা-ডু-ডু বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় খেলা। আন্তর্জাতিকভাবেও কাবাডি খেলার গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে এবং বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় এ খেলা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশে বিশেষ উৎসব, পালা-পার্বনে বেশ আড়ম্বরপূর্ণভাবে হা-ডু-ডু খেলার আয়োজন করা হয়। খেলোয়াড় এবং দর্শক উভয়ের জন্যই এ খেলা বেশ আনন্দদায়ক। আবহমানকাল থেকে এই খেলা বাঙালির সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত এবং সংস্কৃতির একটি স্বকীয় স্থান দখল করে আছে বলে হা-ডু-ডু বাংলাদেশের জাতীয় খেলা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
হা-ডু-ডু খেলার উৎপত্তি ও পরিচয়ঃ
হা-ডু-ডু খেলার উৎপত্তিস্থল কোনো জায়গায় তা সঠিকভাবে না জানা না গেলেও বাংলাদেশের এমন কোনো অঞ্চল নেই যেখানে এ খেলাটির প্রচলন নেই। তবে এই খেলাটির উৎপত্তিস্থল ফরিদপুর বলে ধরা হয়। বাংলাদেশে অঞ্চলভেদে এর নামের ভিন্নতা পাওয়া যায়। যেমন- কাবাডি, কাপাটি, হা-ডু-ডু, ছি-খেলা, ডু-ডু খেলা ইত্যাদি। প্রায় সব ঋতুতে হা-ডু-ডু খেলা যায়, তবে বর্ষায় এর জনপ্রিয়তা বেশি। কাদামাটিতে খেলোয়াড়দের যে রূপ ফুটে ওঠে তা সত্যিই উপভোগের মতো।
হা-ডু-ডু বা কাবাডি খেলার নিয়মাবলীঃ
মাঠঃ হা-ডু-ডু খেলায় ছেলেদের মাঠ লম্বায় ১২.৫০ মিটার এবং চওড়ায় ১০ মিটার হয়। মেয়েদের কাবাডি খেলার মাঠ লম্বায় ১১ মিটার ও চওড়ায় ৮ মিটার হয়। খেলার মাঠের ঠিক মাঝখানে একটি লাইন টানা থাকে যাকে মধ্যরেখা বা ‘চড়াই লাইন’ বলা হয়। এই মধ্যরেখার দুই দিকে দুই অর্ধে দুইটি লাইন টানা হয় যাকে ‘কোল লাইন’ বলে। মৃত বা আউট খেলোয়াড়দের জন্য মাঠের দুই পাশে ১ মিটার দূরে দুটি লাইন থাকে যাকে ‘লবি লাইন’ বলা হয়।
সদস্যঃপ্রতি দলে ১২ জন খেলোয়াড় অংশ নেয়। কিন্তু প্রতি দলের ৭ জন খেলোয়াড় এক সাথে মাঠে নামে। বাকি ৫ জন অতিরিক্ত খেলোয়াড় হিসেবে থাকে। খেলা চলাকালীন সর্বাধিক ৩ জন খেলোয়াড় পরিবর্তন করা যায়।
সময়ঃ৫ মিনিট বিরতিসহ দুই অর্ধে পুরুষদের ২৫ মিনিট করে এবং মেয়েদের ২০ মিনিট করে খেলা হবে। খেলা শেষে যেই দল বেশি পয়েন্ট পাবে সেই দলই জয়ী হবে। দুই দলের পয়েন্ট সমান হলে দুই অর্ধে আরো ৫ মিনিট করে খেলা হবে। এর পরেও যদি পয়েন্ট সমান থাকে তবে যে দল প্রথম পয়েন্ট অর্জন করেছিল সে দলই জয়ী হবে।
পয়েন্টঃযদি কোনো খেলোয়াড় মাঠের বাহিরে চলে যায় তাহলে সে আউট হবে। এভাবে একটি দলের সবাই আউট হলে বিপক্ষ দল একটি অতিরিক্ত ২ পয়েন্ট পাবে। মধ্যরেখা থেকে দম নিয়ে বিপক্ষ দলে কোনো খেলোয়াড়কে স্পর্শ করে এক নিঃশ্বাসে নিরাপদে নিজেদের কোর্টে ফিরে আসতে পারলে, যাদেরকে সে স্পর্শ করবে তারাই আউট হবে। এভাবে যতজন আউট হবে তাদের প্রত্যেকের জন্য এক পয়েন্ট পাওয়া যাবে।
সতর্কতাঃএক নিঃশ্বাসে স্পষ্টভাবে পুনঃ পুনঃকাবাডি বলে ডাক দেওয়াকে ‘দম নেয়া’ বলে। এই দম মধ্যরেখা থেকে শুরু করতে হবে। আক্রমণকারী বিপক্ষ দলের কোর্টে দম হারালে এবং বিপক্ষ দলের খেলোয়াড় তাকে আটকাতে পারলে সে আক্রমণকারী আউট বলে গণ্য হবে।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে হা-ডু-ডুঃ
১৯৭৩ সালে বাংলাদেশের দুইজন কর্মকর্তা পশ্চিমবঙ্গের আসানসোলে ভারতীয় জাতীয় কাবাডি প্রতিযোগিতা দেখতে যান। দেশে ফিরে তারা ‘কাবাডি ফেডারেশন’ গঠন করেন। ১৯৭৪ সালে ‘এশিয়ান অ্যামেচার কাবাডি ফেডারেশন’ গঠিত হয়। ১৯৫০ সালে ভারতীয় জাতীয় কাবাডি ফেডারেশন গঠিত হয়। ১৯৫৩ সালে কাবাডি খেলার আইন কানুন প্রণিত হয়। ১৯৬০ এবং ১৯৬৬ সালে কাবাডি খেলার আইন সংশোধিত হয়। বর্তমানে বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, মরিশাস, মায়ানমার, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও শ্রীলংকায় হা-ডু-ডু খেলা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া জাপান, নেপাল, মালদ্বীপ ও ভুটানে এই খেলা শেখার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
হা-ডু-ডু খেলার উপকারিতা ও অপকারিতাঃ
খেলাধুলা মানুষের শারীরিক সুস্থতা ও মানসিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। হা-ডু-ডুও একটি নির্মল আনন্দদায়ক খেলা। হা-ডু-ডু খেলার নিয়মকানুন সহজ হওয়াতে যে কেউ এই খেলায় অংশ নিতে পারে। মনের সতেজতা ও প্রাণময়তা বৃদ্ধিতে এই খেলা ভূমিকা পালন করে। শরীরের কাঠিন্য বৃদ্ধি করে, দেহ ও মনকে করে সুদৃঢ় ও বলিষ্ঠ। এ খেলার মধ্য দিয়ে পেশিশক্তির উন্নতি ঘটে। শরীরকে রোগমুক্ত রাখে এবং রক্ত সঞ্চালনে সহায়তা করে। হা-ডু-ডু জীবনের অবসাদ দূরীভূত করে কর্মে আত্মনির্ভরশীলতা ও অনুপ্রেরণা যোগায়। প্রত্যেক খেলারই সামান্যতম অপকারিতা থাকে, হা-ডু-ডুও এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নয়। মাঝে মাঝে খেলতে গিয়ে হাত-পা ভেঙে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
খেলাধুলা মানুষের স্বাভাবিক জীবনকে সুন্দর ও গতিশীল করে তোলে। হা-ডু-ডু বা কাবাডি খেলা আমাদের জাতীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে ধারণ করে আছে। আজও বাংলাদেশের হাজারো মানুষের মনে আনন্দের খোরাক জোগায় হা-ডু-ড খেলা। তাই আমাদের দেহ ও মনের স্বাভাবিক বিকাশ এবং দেশের সার্বিক প্রগতির জন্য জাতীয় পর্যায়ে হা-ডু-ডু- খেলা কে আরো গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। এছাড়া এই দেশনন্দিত খেলাটিকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারলে আমাদের দেশের গৌরব ও ভাবমূর্তি যে আরো উজ্জ্বল ও শাণিত হবে তা নিঃসন্দেহে বলা যায়।
Nice post
Thank you...
ভালো হয়েছে। আরও ভালো করতে হবে
Thank you bhaiya,,,,aro valo korar korar cesta korbo