চন্দ্রহাসি বাংলো ( পর্ব ৭ )

আজকে আপনাদের সাথে "চন্দ্রহাসি বাংলো" গল্পটির সপ্তম পর্ব শেয়ার করে নেবো। তো এরপরে এইসব ঘটনার ফেরে দাঁড়িয়ে সুধীর একটা বিষয় অনুভব করতে পেরেছে যে, এই বাংলোটা শুধু একটা বাড়ি নয়, এটা একটা অনুভব আর অতৃপ্ত আত্মার অসম্পূর্ণ গল্পের গভীর প্রতিচ্ছবি। এটা আসলে ওই চন্দ্রা দেবীর বিষয়ে বলা হচ্ছে আর কি। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ওই মুহূর্তে বাংলোর আশেপাশে হঠাৎ কেঁপে উঠলো। আর ওই সময়ে হাওয়ার বেগও কেমন যেনো বইতে শুরু করে দিয়েছে, হাওয়া যেনো আগের থেকেও ঠান্ডা, কারণ পাহাড়ি এলাকায় এমনিতেই নরমাল ঠান্ডা থাকে।

তো যাইহোক, এর মধ্যে সেই দারোয়ান এসে সুধীরকে বললো যে, দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়ার পরেও বারবার খুলে যাচ্ছে। আসলে সে তো তার নিত্যদিনের কাজের মতো কাজগুলো করে চলে এসেছে আর ১-২ বার খুলে গেলেও সে ভেবে নিয়েছে যে, হাওয়ার বেগের কারণে খুলে যাচ্ছে। কিন্তু এই ঘটনার প্রবনতা যখন খুব বেশি হওয়া শুরু করলো, তখন তার মনের মধ্যে ভয় অনুভূত হওয়া শুরু করলো অর্থাৎ সেই চন্দ্রা দেবীর কথা ভাবছে, মানে তার আত্মা হয়তো এইসব করছে। তো এর ফলে সে সুধীরকে সবকিছু জানালো এবং সেই আয়নার ঘর থেকেও যে একটা তীব্র রশ্মি আসছে, সেটা সে স্বাভাবিক ভাবে না দেখে তড়িঘড়ি সুধীরকে জানায়।

সুধীর তখন দৌড়ে চলে গেলো সেই আয়নার ঘরে এবং চিৎকার করে চন্দ্রা দেবীকে ডাকতে শুরু করে দেয়। সুধীর আসলে জানতে চায় যে, সে মুক্তি চায় কিনা। কারণ এতদিন তো তার ভালোবাসার আসল মানে সে খুঁজে পাইনি, আর ভালোবাসার মানুষের জন্য নিজে আত্মহত্যা করেছে। তাই জিজ্ঞাসা করতেই চন্দ্রা দেবী তাকে বলে- হ্যাঁ, আমি মুক্তি চাই, কারণ আমি এখন জানি সে আমাকে ভালোবেসেছিল, আমি এখন চাইলে আলোয় যেতে পারি। ওই মুহূর্তে একটা সাদা আলোর ঝলকানিতে আয়নার কাঁচ ভেঙে চুর্নবিচুর্ন হয়ে যায়।

এতদিন ধরে ওই ঘরে যে ছায়ার প্রাদুর্ভাব ছিল, সেটা সাথে সাথে বিনাশ হয়ে যায়। ওখানে যে একটা পেন্ডেন্ট ছিল, সেটা ওখানে মেঝেতে ওইভাবে পড়ে আছে। আর যে ঠান্ডা ভাবটা ছিল, সেটা সেই মুহূর্তে কমে গিয়ে একটা উষ্ণতা ভাব চলে আসে। এই ভালোবাসার কাহিনীতে চন্দ্রা আর অমিত দুজনেই মুক্তি পেয়ে যায় আর এই বাংলো থেকে চিরতরে বিদায় নেয়। এই কাহিনী শেষ হলেও কিছু কাহিনী এখনও আছে এই বাংলোর। কেবল একটা অধ্যায় এর সমাপ্তি হলো। তবে সুধীর চিন্তা করলো কিছুদিন বাদে এই বাংলো আরো ভালোভাবে ঘুরে দেখতে হবে।.....