চন্দ্রহাসি বাংলো ( শেষ পর্ব )

in আমার বাংলা ব্লগ5 days ago
হ্যালো বন্ধুরা, আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

ChatGPT Image Aug 6, 2025, 03_09_12 AM.png

Image Created by OpenAI

আজকে আপনাদের সাথে "চন্দ্রহাসি বাংলো" গল্পটির শেষ পর্ব শেয়ার করে নেবো। তো এই ঘটনার পরে দারোয়ান আরো বেশি ভয় পেয়ে যায় এবং কাঁপতে থাকে। এরপর দারোয়ান সুধীরকে বোঝানোর চেষ্টা করে যে, এই বাংলোকে কেউ ভালো চোখে দেখে না। এমনকি আপনারা পূর্ব পুরুষরা এই বাংলোর ভেতরের ঘরটা খুলতেন না। তো যাইহোক, সুধীর মোটামুটি শুনে একপ্রকার কথা উড়িয়ে দেওয়ার মতো উড়িয়ে দেয়। এরপর সুধীর সেই ডায়েরির দিকে তাকালো এবং ভেতরে দেখে বুঝতে পারে যে, এই বাংলোর আসল রহস্য শুধু অতৃপ্ত ভালোবাসার নয়।

এখানে একটা দীর্ঘ চক্রান্ত এর ছায়া লুকিয়ে আছে। এইসব এর মাঝে রাত আস্তে আস্তে গভীর হয়ে গেলো এবং হাওয়া ধীরে ধীরে আরো ঠান্ডা বইতে শুরু করলো। কিন্তু এরই মাঝে সুধীর এর মনে হতে লাগলো, সেই আয়নার ঘর থেকে কেমন যেনো একটা ফিসফিস আওয়াজ ভেসে আসছে অর্থাৎ কেউ যেনো আবারো তাকে বলার চেষ্টা করছে- শেষ হয়নি এখনও...। রাত তখন প্রায় ২:৩০ এর মতো হয়ে গেছে। চন্দ্রহাসি বাংলো নিস্তব্ধ, কিন্তু কেমন যেনো একটা অদ্ভূত বিষয় ঘটতে থাকে অর্থাৎ কোথাও একটা কান্নার আওয়াজ, কোথাও আবার ফিসফিস আওয়াজ এবং আবার থেমে যাওয়া।

এইসব এর মাঝে সুধীর এর মন যেনো অস্থির হয়ে ওঠে। সুধীর একটু ছটপট করতে করতে সিদ্ধান্ত নিলো যে, আজকে এর একটা শেষ দেখে ছাড়তে হবে। ওই মুহূর্তে সুধীর সেই পুরোনো ডায়েরি, একটা টর্স আর বুক ভরা সাহস নিয়ে দারোয়ানকে সাথে করে সেই আয়নার ঘরের দিকে রওনা হলো। এরপর সেখানে গিয়ে দেখে দরজা আগে থেকেই খোলা এবং আয়নাটাও ঠিক আগের জায়গায় সেইভাবে আছে। সুধীর এর হাতে যে পুরোনো ডায়েরি ছিল, তাতে একটা জায়গায় লেখা ছিল যে- এই আয়নাটা কোনো সাধারণ আয়না নয়, কারণ এটি ব্রহ্মদৈত্যের প্রাচীন নিদর্শন বহন করে চলে।

ফলে এই আয়নায় একবার যে বন্দি হয়, সহজে তার মুক্তি হয় না। তবে মুক্তি সম্ভব, কিন্তু তার জন্য আত্মা মোচনের প্রক্রিয়া জানা দরকার আর সেই সাথে সত্য প্রকাশ। এরপর এই অনুসারে সুধীর আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো এবং বললো- চন্দ্রা তুমি এইবার মুক্ত হও, তোমার উপর যে অন্যায় এবং অত্যাচার হয়েছিলো, তা আমি জানতে পেরেছি। আজ আমি তোমার জন্য সত্য প্রকাশ করবো। এরপর আয়নাতে চন্দ্রার মুখ স্পষ্ট হয়ে উঠলো এবং সে আগের বারের মতো কাঁদছে না বরং একদম নিস্তব্ধ। কিন্তু তার পেছনে আরো একটা ছায়া দাঁড়িয়ে ছিল।

এই দৃশ্য দেখে দারোয়ান ওখান থেকে ভয়ে বেরিয়ে যায়। কিন্তু সুধীর সেখানে জিজ্ঞাসা করতেই বলে-আমি তোমার পূর্ব পুরুষ, আমি চন্দ্রাকে অনেক ভালবাসতাম, কিন্তু সে আমাকে প্রত্যাখ্যান করেছিলো। আমি মৃত্যুর পরেও তাকে ভুলতে পারিনি। আমি চেয়েছিলাম মৃত্যুর পরেও ও আমার সাথে থাকুক। সেই মুহূর্তে হঠাৎ একটা বিকট শব্দ হয়ে আয়না কেঁপে উঠলো আর আয়নায় চির ধরে যায়, মনে হয় এই ফেটে চুর্নবিচুর্ন হয়ে যাবে। এরপর চন্দ্রা বললো- এতদিন তুমি আমাকে বন্দি করে রেখেছিলে, কিন্তু আজ আমি পুরোপুরি মুক্ত হব।

সাথে সাথে চারিদিকে আলো ছড়িয়ে পড়লো এবং একটা অদ্ভূত চিৎকার এর মাধ্যমে ছায়া মিলিয়ে গেলো। সবাই অজ্ঞান হয়ে যায় এবং একদম সোজা সকালে ভোরের দিকে গিয়ে সবার চোখ খুললে। সবাই উঠে দেখে ঘরটা একদম ফাঁকা ফাঁকা আর সেই আয়নাটাও গায়েব। এই বাংলোটা এখন যেনো অনেক হালকা এবং ভয় মুক্ত। সবার মুখে একটা হালকা হাসি ফুটে উঠেছে, কারণ চন্দ্রার আত্মা এইবার সত্যি সত্যি মুক্তি পেয়েছে।


শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png