শ্মশান থেকে ফেরা চিঠি ( পর্ব ২ )

in আমার বাংলা ব্লগ4 days ago
হ্যালো বন্ধুরা, আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

Late Night Revelation.png

Image Created by OpenAI

আজকে আপনাদের সাথে "শ্মশান থেকে ফেরা চিঠি" গল্পটির দ্বিতীয় পর্ব শেয়ার করে নেবো। গত পর্বে সেই খামের ভেতরে চিঠি রাহুল একটা পড়া গন্ধের মতো কিছু খুঁজে পায়। এরপর থেকেই ওই বাড়িতে একপ্রকার সারাক্ষন অদ্ভুত ঘটনা ঘটতে থাকে। এই যেমন হঠাৎ হঠাৎ দরোজায় কেউ ধাক্কা দেওয়ার মতো আওয়াজ, কারো হাঁটার শব্দ ইত্যাদি এইরকম আরো নানা অদ্ভুত অদ্ভুত বিষয় রাহুলের সামনে ঘটতে থাকে। আর যে চিঠিটা স্মশানতলা থেকে এসেছিলো, সেই চিঠিটা বারবার টেবিলের উপর থেকে পড়ে যাচ্ছিলো। রাহুল অবশেষে সেটাকে একটা পেপারওয়েট দিয়ে চাপা দিয়ে রাখে, কিন্তু তারপরেও সেটাকে সরিয়ে চিঠিটা নিচে পড়ে যাচ্ছে, যেন কেউ ইচ্ছা করেই এটা করছে। রাহুল তো আশ্চর্য হয়ে যাচ্ছে আর ভয়ে আস্তে আস্তে কাঁপা শুরু করেছে।

রাহুল পরে বিষয়টা অনুধাবন করলো যে, এটা কোনো সাধারণ খাম নয়, আমাকে কিছু একটা সংকেত দেওয়ার চেষ্টা করছে এর মাধ্যমে। রাহুলের আর ধৌর্যে পারলো না, সকাল হতেই সেই স্মশানতলায় দৌড়ালো। জায়গাটা একদম কলকাতা শহরের গঙ্গার ঘাটের পাশে অবস্থিত। সেখানে প্রায় ফাঁকা বলতে গেলে, তবে দুই একজন লোক ছিল আর কয়েকজনের দাহ কার্য সম্পন্ন হচ্ছিলো। রাহুল ওখানে ফাঁকা স্থানে বসে থাকা একজন বয়োজ্যেষ্ঠ লোককে জিজ্ঞাসা করলো যে, এখান থেকে কি কখনো কোথাও চিঠি পাঠানো হয়ে থাকে? লোকটি তার দিকে কিছুক্ষন নীরবে তাকিয়ে থাকলো এবং একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো-না, এখানে সেইরকম কোনো ব্যবস্থা নেই।

তবে এখানে ২-৩ বছর আগে একটা ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটেছিলো, একটা যুবককে এখানে মৃত ভেবে জীবিত পোড়ানো হয়েছিল। এটা একটা ভুলবশত ঘটনা ছিল, কারণ সবাই ভেবেছিলো সে মৃত। এই ঘটনা শোনার পরে রাহুলের শরীর যেন শিউরে উঠলো। এখন রাহুলের মনে প্রশ্ন জাগে যে, যদি সেই ছেলেটার মৃত্যু এইরকম অস্বাভাবিক ভাবে হয়ে থাকে, তাহলে আমার কাছে যে চিঠিটা এসেছে, সেটা কি তার লেখা? সেখান থেকে রাহুল এক রাশ চিন্তা ভরা মুখ নিয়ে বাড়িতে পৌঁছালো। এরপর সে আবারো সেই খামটা খুললো, কিন্তু খামের ভেতরে এইবার অন্য্ একটা কাগজ পেলো, যা সে আগে কখনো দেখিনি। যাইহোক, এই চিঠিতে লেখা ছিল-"আজ রাত ঠিক ১২ টার সময়ে স্মশানের ওখানে বটতলায় এসো, সত্যি ঘটনাটা জানতে পারবে"।

রাহুলের তো একের পর এক এইসব ঘটনা হতভম্বে ফেলে দিচ্ছে। রাহুল কাঁপা কাঁপা স্বরে বলতে লাগে-তাহলে কি এই চিঠিটা একজন মৃত ব্যক্তির মাধ্যমে আমার কাছে এসেছে? আর সে সাংবাদিক হওয়ায় এই নিউজ তো তার সংগ্রহ করতেই হবে, কারণ তার এটা কাজ আর তার জন্যেই এখানে তাকে পাঠানো হয়েছে। এরপর তার কৌতুহল বাড়তে থাকে সত্যিটা জানার জন্য। এখন তার তো এই রাতে স্মশানে যেতে ভয় লাগছে, কিন্তু এই কৌতুহল যত বাড়ছে, তার সাহস পরপর এমনি এমনি বাড়ছে। এরপর রাহুল চিন্তা করলো যে- যাইহোক, আজ রাতেই স্মশানে যাবো।.....


শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png



Sort:  

হ্যালো @winkles,

আপনার "শ্মশান থেকে ফেরা চিঠি" গল্পের দ্বিতীয় পর্বটি সত্যিই অসাধারণ! Rahul এর ভয়ের অনুভূতি এবং রহস্য উন্মোচনের আকাঙ্ক্ষা খুব সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। শ্মশান থেকে আসা চিঠি, রাতের বেলা বটতলায় যাওয়ার আহ্বান—পুরো বিষয়টি বেশ আকর্ষণীয় এবং পাঠকের মনে কৌতূহল জাগিয়ে তুলেছে।

বিশেষ করে রাহুলের দ্বিধা এবং সাহসের সংমিশ্রণ গল্পের গতি বাড়িয়েছে। আপনার লেখার ভঙ্গি সাবলীল এবং গল্পটি পড়ার সময় যেন চোখের সামনে সব ঘটনা ঘটছে বলে মনে হয়।

আমি পাঠকদের অনুরোধ করব, তারা যেন এই পোস্টে মন্তব্য করে তাদের মতামত জানান এবং লেখকের সাথে আলোচনা করেন। আপনার লেখার পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষা করছি! চালিয়ে যান।