শান্তিনিকেতন ভ্রমন ( পর্ব ২৫ )

in আমার বাংলা ব্লগ3 days ago
হ্যালো বন্ধুরা, আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

Photo by @winkles

Photo by @winkles

আজকে আপনাদের সাথে শান্তিনিকেতন ভ্রমণ এর আরো কিছু আলোকচিত্র শেয়ার করে নেবো। এখানে আপনারা কিছু মাটির পাত্র ও প্রদর্শনভুমি দেখতে পাবেন, যা কাঁচের বাক্সে রাখা রয়েছে। এখানে বিভিন্ন প্রকারের হস্তনির্মিত মাটির পাত্র এবং প্রতিমা রয়েছে। এই সবকিছুই গ্রামীণ সংস্কৃতির প্রতিফলন। আর এইগুলো সাধারণত আদিবাসী সম্প্রদায় বা লোকশিল্পীদের হাতে তৈরি করা মাটির ভাস্কর্য। এর পাশেই রয়েছে বাঁশের তৈরি একটা চারপায়া বেঞ্চ এর মতো, যদিও ছবিটা সম্পূর্ণ তোলা সম্ভব হয়নি। তবে ই ধরণের বেঞ্চ গ্রামীণ সম্প্রদায়ে দেখা যায়। এইগুলো গৃহস্থ বাড়ির অন্যতম অংশ। এছাড়াও এখানে বিভিন্ন নকশার মধ্যে ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন আলপনার নকশায় মিশ্রিত করা আছে। এছাড়া পরের দৃশ্যে দেখতে পাবেন একটি ডায়াগ্রামের মতো দৃশ্য। যেখানে আদিবাসী গ্রামজীবনের পটভূমি তুলে ধরা হয়েছে।

Photo by @winkles

Photo by @winkles

এখানে এই দৃশ্যের মাধ্যমে সাধারণত প্রাচীন গ্রামবাংলার এক কোন এর প্রদর্শনী তুলে ধরা হয়েছে। যেমন এখানে বাঁশের তৈরি খুঁটি দিয়ে ঘর তৈরি, পারিবারিক জীবনের মডেল। এছাড়া এখানে এই মডেলে একটি মুখোশধারী লোকের উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে, যা কোনো লোক উৎসব বা কোনো পালা পর্বনের দৃশ্য। এছাড়া এই মডেলের বিপরীতে কিছু চিত্র আঁকা আছে দেয়ালে, যা সাঁওতাল বা আদিবাসী জীবন ও তাদের সামাজিকতাকে ইঙ্গিত করে। সবমিলিয়ে একটি আদিবাসী গ্রামীণ জীবনধারার মডেল চিত্রের মাধ্যমে বিষয়টা বেশ ভালো দেখানো হয়েছে এখানে। এরপরে কাঁচের একটি বাক্সে রয়েছে আরো বিভিন্ন ধরণের টেরাকোটা শিল্পকর্মের নিদর্শন।

Photo by @winkles

Photo by @winkles

এখানে যেমন- কিছু গান-বাজনায় অংশগ্রহণকারী লোকজন, পশুপাখি, সিংহ ইত্যাদি নানা প্রতীকী মূর্তি এখানে তুলে ধরা হয়েছে। এখানে যেসব ভাস্কর্য রয়েছে, তা সবই মাটির তৈরি এবং এতে খুব সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম ডিজাইনে পরিপূর্ণ করা হয়েছে। এছাড়া এখানে মুখোশের কিছু দৃশ্যও তুলে ধরা হয়েছে। এখানে বাংলার মুখোশ সংস্কৃতিকে একটি বিশেষ অংশ হিসেবে বিবেচিত করা হয়েছে। এছাড়া এখানে একটি চিত্রের মাধ্যমে গাছতলায় গোষ্ঠীজীবনের সৌন্দর্যকে তুলে ধরা হয়েছে। এরপরের দৃশ্যে রয়েছে টেরাকোটার মাধ্যমে তৈরি করা ঘোড়া ও দূর্গা মায়ের পটচিত্র। এখানে যে দুটি শিল্পঘোড়ার নিদর্শন রয়েছে, তা বাংলার লোকশিল্পের অন্যতম প্রতীক হিসেবে ধরা হয়ে থাকে। এইগুলো যেমন টেরাকোটায় তৈরি করা হয়েছে, তেমনি এইগুলোতে সুসজ্জিত অলংকরণ এর মাধ্যমে সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

Photo by @winkles

Photo by @winkles

এর পাশে রয়েছে একটি গাছের শিকড় আকৃতির শিল্পকর্ম, যার শিকড়ে লুকিয়ে আছে এক ঐতিহ্যবাহী মানবকৃতি। তাছাড়া এখানে দেবী দুর্গার অসুরবধ এর দৃশ্য রয়েছে। এখানে এই দৃশ্যের মাধ্যমে বাংলার পূজাপার্বনের মূল ভিত্তিকে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছে। এরপরে রয়েছে টেরাকোটার মাধ্যমে তৈরি করা হাতি, সন্ন্যাসী, বাউল মূর্তি। এইসব কাঁচের মধ্যে ধাতব শিল্প হিসাবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এইসব বিষয়গুলো টেরাকোটা শিল্পের এক অনন্য নিদর্শন। বাংলার লোকশিল্পে হাতিকে শুধু একটি পশু হিসেবে দেখা হয় না, এটি শক্তি ও সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবেও ব্যবহৃত হয়ে থাকে। হাতির মূর্তির পাশে রয়েছে একজন সন্যাসীর মূর্তি, যিনি এক হাতে একটি থালা ধরে বসে আছেন।

Photo by @winkles

এই বিষয়কে এখানে একটি ত্যাগ ও আধ্যাত্মিক চেতনার প্রতীক হিসেবে তুলে ধরেছে। আরেকটি মূর্তি আছে, যেখানে একটি বাউলের ঢোল বাজানোর দৃশ্য তুলে ধরা হয়েছে। এই বাউল সংস্কৃতি এখনো বাংলার হৃদয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। এরপরের দৃশ্যে কিছু চাকার দৃশ্য রয়েছে, যা রথের চাকার মতো। এই চাকাগুলো বৌদিক যুগের রথের চাকার অনুকরণে কাঠের মাধ্যমে নির্মিত করা হয়েছে। এইসব চাকায় আবার বিভিন্ন ধরণের নকশা আঁকানো আছে, যা বিভিন্ন নৃত্য, ঢোল বাজানোর দৃশ্য ইত্যাদি নানা দৃশ্য।


শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png



Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.