শান্তিনিকেতন ভ্রমন ( পর্ব ২৬ )
হ্যালো বন্ধুরা, আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি। |
---|
![]() |
---|
Photo by @winkles
![]() |
---|
Photo by @winkles
আজকে আপনাদের সাথে শান্তিনিকেতন ভ্রমণ এর আরো কিছু আলোকচিত্র শেয়ার করে নেবো। এখানে প্রথমে একটা পদ্মফুলের অলঙ্করণ দেখা যাচ্ছে। এই ধরণের শিল্পকে একপ্রকার আল্পনার অসাধারণ নিদর্শন হিসেবে ধরা হয়। এই শিল্পটি সম্পূর্ণ হাতে তৈরি করা। আর এই ডিজাইনে দেওয়ালের গায়ে লাল মাটির রঙে ফুটিয়ে তোলায় আরো দৃষ্টিনন্দন লাগছে। চারিপাশে যে আল্পনার মতো সূর্যের ডিজাইন দিয়েছে, তা অনবদ্য। এই ধরণের শিল্প বাংলার পল্লী জীবনের এক চিরন্তন শিল্পচর্চার প্রকাশ। এরপরে রয়েছে বিভিন্ন যন্ত্রসংগীত এবং লোকমূর্তির কিছু নিদর্শন। এখানে এই লোকবাদ্যযন্ত্রের মধ্যে ঢোল, খোল জাতীয় যন্ত্র রয়েছে।
![]() |
---|
Photo by @winkles
![]() |
---|
Photo by @winkles
এইগুলো গ্রামবাংলার লোকগান, কীর্তন ইত্যাদি সঙ্গীতের ক্ষেত্রে খুবই ব্যবহৃত হতো। এছাড়া এই বাদ্যযন্ত্রের পাশেই রয়েছে মাটির তৈরি মানবমূর্তি, পশুপাখির মূর্তি এবং প্রাচীন গ্রাম জীবনের গল্প। এইসব প্রাচীন জিনিসপত্রের পাশাপাশি এখানে সব মাটির দেয়ালগুলোতে যে ধরণের আল্পনা তৈরি করা হয়ে থাকে, তা অনেক আকর্ষণীয় লাগে দেখতে। এরপরে রয়েছে গজরূপী গণেশের মূর্তি। এখানে দুটি গনেশের মূর্তিকে উপস্থাপন করা হয়েছে, যা বাংলার টেরাকোটা শিল্পের এক অনন্য নিদর্শন। এই মূর্তিগুলোর চোখ, কপাল, কানের নকশা এবং দেহে খোদাই করা সূক্ষ্ম অলঙ্করণ বাংলার মৃৎশিল্পের সৃজনশীলতার প্রধান পরিচয় বহন করে।
![]() |
---|
Photo by @winkles
![]() |
---|
Photo by @winkles
এরপরে আবারো আগের পোস্টের মতো এখানে দেয়ালে একটি দূর্গা মায়ের চিত্র, যা অসুরবধ এর মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এছাড়া এখানে এই ডিজাইনের পাশেই রয়েছে মাটির তৈরি সিংহাকৃতি এবং গোলাকৃতি লোকমূর্তি। এর মধ্যে একটি নারীকে উপস্থাপন করা হয়েছে। এখানে আবার একটি চিত্রের মাধ্যমে বাংলার গ্রামীণ শিক্ষাজীবনের পটভূমি তুলে ধরা হয়েছে। এরপরে রয়েছে কিছু টেরাকোটা ঘোড়া, ঢোল ও বৈদিক শিল্পচিত্র। এইগুলো সাধারণত বাংলার লোকশিল্পের প্রতীক হিসেবে বহুল প্রচলিত। এখানে এক জায়গায় ঢোল জাতীয় সব বাদ্যযন্ত্র এবং আরেক জায়গায় বৃহৎ টেরাকোটার নানান শিল্পকর্ম রয়েছে।
![]() |
---|
Photo by @winkles
![]() |
---|
Photo by @winkles
এখানে বৃক্ষ ও দেবদেবীর মূর্তিও রয়েছে। এইগুলো সাধারণত কোনো বৌদিকে কাহিনীর অনুকরণে তৈরি করা। এছাড়া নানা চিত্রের পটভূমির মাধ্যমে এখানে সম্পূর্ণ একটি লোকজ সাংস্কৃতিক কোনে পরিণত করেছে। এরপরে দুটি মাটির তৈরি নারীমূর্তি দেখা যাচ্ছে, যেখানে একজন নারী কোলের শিশুকে আঁকড়ে ধরে আছে। এটি সম্পূর্ণ একটি মাতৃত্বের প্রতীক ফুটে উঠেছে। এখানে সমূর্ণ শিল্পকর্মের মধ্যে রয়েছে আদিম গ্রাম্য শিল্পের ছাপ। এই মূর্তিগুলোর মাধ্যমে এখানে মাতৃত্বশক্তিকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়ে থাকে। এখানে রয়েছে বাঁশ এবং কাঠের মাধ্যমে তৈরি করা বিভিন্ন ধরণের তারযন্ত্র, যা বাংলার বাউল, ফকিরদের সংগীতে ব্যবহার হয়।
![]() |
---|
Photo by @winkles
এখানে সবধরণের বাদ্যযন্ত্র রয়েছে, যেমন-একতারা, দোতারা, সারিন্দা, তুঙ্গী ইত্যাদি । এইসব বাদ্যযন্ত্রের কাঠামোতে রয়েছে গ্রাম্য সৃজনশীলতার স্পষ্ট ছাপ। এছাড়া এখানে দেবী সরস্বতীর একটা টেরাকোটা প্রতিরূপ রয়েছে। যেহেতু তিনি সঙ্গীত ও জ্ঞানের দেবী, তাই এইসব বাদ্যযন্ত্রের সাথে দারুন মানিয়েছে। শিল্পীর এইধরণের প্রতিভামুলক কাজ অনেক আকর্ষণীয়। এখানে আরো দুটি মাটির পাত্র দেখা যাচ্ছে, যা গোলাকৃতি মুখমন্ডলের মতো দেখতে। এইগুলো সাধারণত লোকদেবতার প্রতীক স্বরূপ ডিজাইনে রূপান্তরিত করা হয়েছে। এর পাশে রাধা-কৃষ্ণের এবং দেবী সরস্বতীর আরো একটা টেরাকোটা মূর্তি রয়েছে। এইধরণের বিষয়গুলো বেশ আকর্ষণীয় এবং মনমুগ্ধকর। এরপরে রয়েছে বিভিন্ন ধরণের ঢোল, যেমন- খোল, মৃদঙ্গ ইত্যাদি। এইসব ঢোল লোকগান, চন্ডীপাঠ, কীর্তন এবং বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ব্যবহার হয়ে থাকে। এইসব বাদ্যযন্ত্র প্রাচীনকালে সংগীত ছাড়াও বিভিন্ন বার্তা প্রেরণের কাজ হিসেবেও ব্যবহার হতো।
শুভেচ্ছান্তে, @winkles
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |


Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.