বড়শি দিয়ে মাছ ধরার আনন্দ।

in আমার বাংলা ব্লগlast month

আসসালামুআলাইকুম/আদাব

হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @alif111, বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।

bonding-1868513_1280.jpg

source

শৈশবের স্মৃতির ভাণ্ডারে এমন অনেক মুহূর্ত থাকে যা সারাজীবন মনে থেকে যায়। তার মধ্যে একটি হলো বড়শি দিয়ে মাছ ধরার আনন্দ। গ্রামে বেড়ে ওঠা অনেকেরই জীবনের সাথে জড়িয়ে আছে এই অভিজ্ঞতা। ছোটবেলায় হাতে বাঁশের ছোট্ট একটি বড়শি, সুতোর সাথে ঝুলে থাকা টোপ আর পুকুর বা খালের ধারে বসে কাটানো সময়গুলো সত্যিই ছিল এক অনন্য আনন্দের।

সকালের সূর্য ওঠার পর বা বিকেলের মৃদু হাওয়ায়, হাতে বড়শি নিয়ে পুকুরপাড়ে দৌড়ে যাওয়া ছিল নিয়মিত অভ্যাস। মাছ ধরতে পারব কি পারব না, সেই অনিশ্চয়তার মাঝেও ছিল এক বিশেষ উত্তেজনা। বড়রা আমাদের শিখিয়ে দিত কীভাবে টোপ দিতে হয়, কীভাবে বড়শি পানিতে ফেলা যায় আর কীভাবে টান দিতে হয় মাছ লাগলে। সেই শেখার মুহূর্তগুলো যেন এক ধরনের খেলার মতো মনে হতো।

সবচেয়ে মজার ব্যাপার ছিল অপেক্ষার ধৈর্য। পানির ওপরে ভেসে থাকা ছোট্ট ভাসা নড়তে শুরু করলে বুকের ভেতরে অদ্ভুত এক আনন্দ জমে উঠত। মনে হতো এখনই হয়তো বড়সড় কোনো মাছ ধরা পড়বে। ভাসা ডুবে গেলেই হাতের সব শক্তি দিয়ে বড়শি টেনে ধরা, আর তারপর পানির ভেতর থেকে উল্টোপাল্টা ছটফট করতে করতে মাছ উঠে আসা,এই দৃশ্যই ছিল শৈশবের সবচেয়ে রোমাঞ্চকর মুহূর্তগুলোর একটি।

কখনো ছোট মাছ, কখনো আবার মাঝারি আকারের রুই বা কাতলা উঠে আসত। বন্ধুদের সাথে কে বেশি মাছ ধরতে পারল, সেই প্রতিযোগিতা নিয়ে চলত হাসি-আড্ডা। কারো বড়শিতে মাছ না উঠলে তাকে খোঁচা দিয়ে মজা করা, আবার কেউ একসাথে দুই-তিনটা মাছ পেয়ে গেলে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকা এসব ছিল শৈশবের অবিচ্ছেদ্য অংশ।

মাছ ধরার সেই সময়গুলো শুধু আনন্দের ছিল না, বরং শিক্ষা আর অভিজ্ঞতারও অংশ ছিল। আমরা শিখেছিলাম ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে, প্রকৃতির সাথে একাত্ম হতে, আর ছোট ছোট জিনিসে আনন্দ খুঁজে নিতে। সেই টুকরো টুকরো আনন্দই আজ বড় হয়ে আমাদের মনে করে দেয় কতটা সহজ আর নির্ভেজাল ছিল শৈশব।

আজকের আধুনিক ব্যস্ত জীবনে সেই মুহূর্তগুলো খুব সহজে ফিরে পাওয়া যায় না। এখন মোবাইল, ইন্টারনেট আর শহরের কোলাহলে বড়শি দিয়ে মাছ ধরা যেন দূরের কোনো স্মৃতি হয়ে গেছে। তবুও মাঝে মাঝে চোখ বন্ধ করলে ভেসে ওঠে সেই পুকুরপাড়, কচুরিপানার ফাঁক দিয়ে নড়াচড়া করা ভাসা, আর হাসিখুশি শৈশবের বন্ধুদের মুখ।

ছোটবেলায় বড়শি দিয়ে মাছ ধরার আনন্দ তাই কেবল মাছ ধরা নয়, বরং শৈশবের সরলতা, বন্ধুত্ব আর প্রকৃতির সাথে কাটানো এক সুন্দর সময়ের প্রতিচ্ছবি। এই স্মৃতি চিরকাল হৃদয়ে রয়ে যাবে, আমাদের মনে করিয়ে দেবে,আনন্দ আসলে লুকিয়ে থাকে জীবনের ছোট ছোট মুহূর্তগুলোতে।

Zskj9C56UonWToSX8tGXNY8jeXKSedJ2aRhGRj6HDecqreqo2XAMzrcrFMezsQ2JYvnkCG8natanTeTWALXvA2X1jsqXD4Nf1w7BTTxEyx7JRMmmeNnz.png

ধন্যবাদ সকলকে✨💖

45GhBmKYa8LQ7FKvbgfn8zqd6W2YEX34pMmaoxBszxVcFZw7HFjCLMfDJx3zXx3jXPRfJr7otFtoRfKMmN9rJzpemZGKH1sKHrmfJREqyC...9xLrN7kkzEr3nKpRPcTj6NSZrBzYGbr93rAK2CAinZaxUP2fFhka9ZrPQeMBYoU2r2avcVEfb5m3uJAqvfZ4UMDVMeWvTdncVc9TonRvS2kneML5dvyoyUQZKC.png

ফোনের বিবরণ

ক্যামেরাস্যামসাং গ্যালাক্সি
ধরণগল্প ✨
মডেলএম-৩১
ক্যাপচার@alif111
অবস্থানসিরাজগঞ্জ -রাজশাহী- বাংলাদেশ।

banner-abbVD-1.png

আমার পরিচয়

IMG-20240117-WA0007.jpg
আমার নাম মোঃআলিফ আহমেদ।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবাসি। আমি সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের একজন ছাত্র। আমি ছোট বেলা থেকেই আর্ট করতে পছন্দ করি।তাই অংকন করতে আমার খুব ভালো লাগে।তাই আমি সময় পেলেই বিভিন্ন চিত্র অংকন করি।বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমন করতে ও ফটোগ্রাফি করতে আমার খুবি ভালো লাগে।🌼💖🌼

সবার প্রতি শুভেচ্ছা রইল এবং আমার পোস্টটি সমর্থনকারী সকল বন্ধুদের বিশেষ ধন্যবাদ।🌹🌻

Sort:  
 last month 

ভাইয়া আপনি খুব সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করছেন।বড়শি দিয়ে মাছ ধরা আনন্দ এটা অনেক সুন্দর এক মুহূর্ত ছিল আমাদের শৈশবকালের।আমি যখন ছোট ছিলাম তখন আমিও বড়শি দিয়ে মাছ ধরতাম।কখনো মাছ আসতো না এগুলো নিয়ে অনেক আড্ডা করতাম বন্ধুদের সঙ্গে।যাই হোক আপনার পুরো পোষ্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো।ধন্যবাদ আপনাকে পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য।