গল্প:- অতিরিক্ত আবেগ নিজের জন্য বিপদ। (প্রথম পর্ব)

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। প্রতিদিনের মত আজকেও আপনাদের সামনে এসে হাজির হলাম নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আমাদের আশেপাশে প্রায় বিভিন্ন ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে। যেই ঘটনা গুলো অনেক সময় শিক্ষনীয় হয়ে থাকে। কখনো কখনো দুর্ঘটনা, আবার কখনো মর্মান্তিক ঘটনা। এজন্য আজকে আবার ও একটা কাহিনী নিয়ে হাজির হলাম। আশা করি আমার লেখাটা পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে।


smiley-2979107_1280.jpg

আজকে আমি আপনাদের মাঝে সুন্দর একটি বাস্তব জীবনের গল্প শেয়ার করব। কিছু কিছু মানুষ আছে তাদের অতিরিক্ত আবেগের কারণে তারা জীবনের শেষ মুহূর্তে এসে কষ্ট করে ‌ হয়তোবা আবেগ থাকে সময়ের কারণে। আবার সময় যখন চলে যায় তখন আবেগ আর থাকে না। আমার শ্বশুর বাড়ির একজন লোকের ঘটনা আপনাদের মাঝে আমি শেয়ার করব। লোকটি যদিও এখন বৃদ্ধ হয়ে গেছে তবে তার কিছু ভুলের কারণে সে এখন এই জীবনে এসে কষ্ট করছে। ওই লোকটির নাম হচ্ছে সেলিম। সেলিম মিয়া যখন পড়ালেখা শেষ করেছে তখন তার বাবা তাকে বিয়ে করার জন্য মেয়ে দেখতে লাগলো। যদিও সেলিম মিয়ার বাবা ছিল একজন আলেম মানুষ। তার মায়ের সাথে ভালো মিল ছিল বিধায় যেকোনো কথা তারা শেয়ার করতেন নিজেদের মাঝে।

ওই সময় সেলিম মিয়ার বাবা তার ছেলেকে বিয়ে করানোর জন্য পাত্রী দেখতে লাগল। এমন সময় তার মা বলেছে তার বোনের মেয়ে ভদ্র তাকে বিয়ে করানোর জন্য। এতে করে সেলিম মিয়ার বাবা রাজি হয়েছে। কারণ মেয়েটির ভদ্র এবং আত্মীয়র মধ্যে। সেলিম মিয়ার বাবা আলেম এবং মেয়েটির বাবা ও আলেম। এরপর দুই ফ্যামিলির কথা বলে মেয়ের বিয়ের ব্যাপারে। তারপর কথা বলে সেই সময় দিন তারিখ ঠিক করেছিল। এদিকে সেলিম মিয়া রাজি ছিল তার খালাতো বোন বিয়ে করার জন্য। তারপর দুই ফ্যামিলির কথা বলে দিন তারিখ ঠিক করে বিয়ে দিলেন তাদেরকে। বিয়ের পর সেলিম মিয়া তার ওয়াইফের সাথে ভালোই সম্পর্ক ছিল।

দুই বছর যাবত তারা খুব সুখেই ছিল। হঠাৎ করে সেলিম মিয়া বাড়ি থেকে শহরে গেল চাকরি করার জন্য। আর সেলিম মিয়া নিজেও একজন হাফেজ মানুষ। শহরে গিয়ে চাকরির পাশাপাশি সেই প্রাইভেট পড়ায় ছেলেমেয়েদের কে। আর ওইখানে গিয়ে একটি মেয়েকে পছন্দ করলো। যদিও সেলিম মিয়া একজন বিবাহিত মানুষ। ওইখানে আবেগ দেখানোর কোন দরকার ছিল না তার। এদিকে ঠিকমতো সেলিম মিয়া বাড়িতে আসতেন না ওই সময়। হঠাৎ করে খবর দেওয়ার পর বাড়িতে আসলো সাথে তার নতুন বিয়ে করা বউকে নিয়ে। তার বউকে দেখে হঠাৎ সবাই চমকে গেল। জিজ্ঞাস করতে লাগলো এই সেলিম মিয়াকে এবং কেন তোমার সাথে আসতো। এই কথা সেলিম মিয়ার মা বাবা এবং তার ওয়াইফ জিজ্ঞেস করতে লাগলো। ওই সময় সেলিম মিয়া মা-বাবার সামনে বলল তাকে সে বিয়ে করেছে।

সাথে সাথে তার বাবাও ওইখানে অজ্ঞান হয়ে গেল। এবং তার ওয়াইফও কান্নাকাটি করতে লাগলো কারণ তাদের ঘরে একটিমাত্র ছেলে সন্তান আছে ছোট। ওই সময় বাড়ির মধ্যে হইচই পড়ে গেল। আর সেই চাকরি করার জন্য শহরে গেল আর এক বছরের মধ্যে সে বিয়ে করলো আবার বউ নিয়ে আসলো। এদিকে তার ঘরে বউ এবং বাচ্চা আছে। কিন্তু সেই বলতে লাগল এই মেয়ের মা-বাবা গরিব বিদায় বিয়ে দিতে পারছে না। এই কারণে সেই এই মেয়েকে বিয়ে করেছে। এবং তাদের পরিবারকে হেল্প করেছে। এরপর সেলিম মিয়ার আগের ওয়াইফের মা-বাবা ও তাদের বাড়িতে আসলো। এবং তারও বুঝিয়ে বলেছে এই মেয়েকে ডিভোর্স দিয়ে তার বাবার কাছে পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য। এতে করে তোমার সংসার সুখী হবে। কারণ দুই সংসার একসাথে থাকলে তুমি কখনো সুখী হবে না।

এই কথা শোনার পরও সেলিম মিয়া রাজী হয় নাই তার দ্বিতীয় ওয়াইফ তালাক দেওয়ার জন্য। এরপর তাদের দুই ফ্যামিলি এবং বাড়ির কিছু লোক নিয়ে বসলেন কিভাবে সমাধান করা যায়। কিন্তু সেলিম মিয়ার আগের ওয়াইফ খুব ভদ্র এবং নামাজি একজন মানুষ। অনেক বোঝানোর পরও সেলিম মিয়া রাজী হয় নাই তার দ্বিতীয় বউ ছেড়ে দেওয়ার জন্য। ওই সময় সেলিম মিয়া প্রথম ওয়াইফের বাবা বলল না হলে তার মেয়েকে সে নিয়ে যাবে। এরপর সাথে সাথে সেলিম মিয়া তাদের সামনে তার প্রথম ওয়াইফ কে তালাক দিয়ে দিলেন। কারণ সেই তার প্রথম ওয়াইফ রাখবে না। আর প্রথম বিয়ে তার মা-বাবা করেছে তার পছন্দ হয় নাই। এই কথা সবার সামনে বলতে লাগলো ।(চলবে)

JvFFVmatwWHRfvmtd53nmEJ94xpKydwmbSC5H5svBACH7xbS7ungTbMjNMsQ7fPnm8uUBT2bU8Azf8zCDQrq3tkzHjjCFyraxJQeY79tPTN45w8XxU9wtvaFmWRaLhgHSy5GYKQ6bg.png

IMG-20211226-WA0000.jpg

আমার নাম আকলিমা আক্তার মুনিয়া। আর আমার ইউজার নাম @bdwomen। আমি বাংলাদেশে বসবাস করি। বাংলা ভাষা হল আমাদের মাতৃভাষা আর আমি মাতৃভাষা বলতে পারি বলেই অনেক গর্বিত। আমি বিভিন্ন ধরনের ছবি এবং পেইন্টিং আঁকতে খুবই পছন্দ করি। আমি প্রায় সময় বিভিন্ন ধরনের পেইন্টিং এঁকে থাকি। আবার রঙিন পেপার এবং বিভিন্ন রকমের জিনিস দিয়ে নানা ধরনের কারুকাজ তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে। আবার নিজের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে ছবি তুলতে খুবই ভালো লাগে। আমি চেষ্টা করি সব ধরনের জিনিস কখনো না কখনো একবার করে করার জন্য। আবার বিভিন্ন ধরনের আইডিয়া মাথায় আসলে সেগুলো ও করার চেষ্টা করি।

35FHZ8gBpndbrF88KC8i6DmfoqNdVfSnhzJshZCJksDJs27YpCCUjp1oaP6ko3mLJbQtLE76ZKc5r3aFXKh8EK2Xg2XbxHP97436Dksrat...K3RRDcGvdyC6bx3TE39Zctd2ho1pJ1hm9nj6RC6gfhhSEVDEf6zHmiqsgBwDTEDG8onxfxrWKe5ZMmiwAvtnX6XvsCqykCT5aFqMFBq2wcdKNs74j1RgTuza3g.png

A5tMjLhTTnj4UJ3Q17DFR9PmiB5HnomwsPZ1BrfGqKbjde9gvbjDSDFUe2t87sHycAo9yh4cXNBQ2uKuZLC2jPzA8Qx5HRSqkJDxCm2F1P...XMCuWWrUK8WEzc1spvbtGymKcxp9cSaiY7YD7nmGv2yy3TJjQK1R5Bx6mMsJqHLdPZ4gBXB1M3ZGWR3ESWZxh8hd9tvb68pfdL8xHrioiqDnHuRUqd8FYt5aog.png

ধন্যবাদ সবাইকে

Sort:  
 2 months ago 

Screenshot_2025-05-18-15-20-44-112_com.twitter.android.jpg

Screenshot_2025-05-18-15-22-20-452_com.twitter.android.jpg

Screenshot_2025-05-18-15-24-05-660_com.twitter.android.jpg

 2 months ago 

গল্পটি থেকে আমরা শিখতে পারি যে, আবেগের বশবর্তী হয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয়, বিশেষ করে যখন তা অন্যের জীবনে বড় ধরনের প্রভাব ফেলে। সেলিম মিয়ার মতো সিদ্ধান্ত শুধু তার নিজের জীবনই নয়, পরিবারের সকলের জীবনই অসুখী করে তুলেছে।এই গল্পে সমাজের একটি বড় সমস্যা ফুটে উঠেছে—অনেকে শুধু নিজের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিয়ে পরিবার ও সমাজের দায়িত্ব ভুলে যায়। সেলিম মিয়ার উচিত ছিল তার প্রথম স্ত্রী ও সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবা।

 2 months ago 

এটি ঠিক অতিরিক্ত আবেগ নিজের জন্য বিপদ। যেমনটি ছেলে মেয়ের জীবনের কাহিনী। তার মা-বাবা তাকে পছন্দ করে বিয়ে করালো তারপরও সে অন্য মেয়েকে বিয়ে করেছে। তবে এখানে অবাক করা বিষয় হচ্ছে আর ওয়াইফ এবং বাচ্চা থাকার পরও সেই দ্বিতীয় বিয়ে করল। এবং প্রথম ওয়াইফকে আবার তালাকও দিয়ে দিলেন। দেখি পরের পর্বে কি ঘটে সে অপেক্ষায় রইলাম।