তবুও মনে পড়ে( শেষ পর্ব )!!

in আমার বাংলা ব্লগ3 days ago


আমার বাংলা ব্লগে,সবাইকে স্বাগতম।

আজ সোমবার, ১১ ই আগষ্ট ,২০২৫।

আমি @emon42.

বাংলাদেশ🇧🇩 থেকে


1000584668.png

source


চতুর্থ পর্বের পর


অদিতি বিয়ে করেনি কথাটা শুনে বেশ অবাক হয়ে যায় অরিএ। আমতা আমতা করতে করতে বলে তুমি বিয়ে করোনি মানে? কিন্তু কেন??

কিছুক্ষণ চুপ থাকার পরে অদিতি বলে আমি বিয়ে করিনি এটা ঠিক । তবে তুমি ভেব না তোমাকে বিয়ে করতে না পারার শোকে আমি এমন টা করেছি।

তাহলে এমনটা করার কারণ? জিজ্ঞেস করে অরিএ।

ঐসময়ের ঘটনা তো তুমি সবকিছুই জানো। কোন পরিবারই ঐভাবে আমাকে মেনে নিতে পারতো না। আর সেরকম কিছু হলেও সারাজীবন আমাকে কথা শুনতে হতো। যেটা আমি কখনোই চাইনি।

অন‍্যদিকে ঐ সবকিছুই যখন প্রকাশ‍্যে চলে এলো। যে কারণে তোমার পরিবারের চাপে তুমিও চলে গেলে। তারপর আর আমিও নারায়নপুরে থাকতে পারিনি। আমাকে নিজের বাড়িঘর ছাড়তে হয়। বলতে পারো মানুষের কথা থেকে বাঁচার জন‍্যই এমনটা করেছিলাম। তারপরই ঢাকা শিফট করি পুরোপুরি। দেখ এখন একা আছি ভালো আছি স্বাধীন আছি।

তুমি এখন কী করছ চাকরি নাকী?

কথাটা শুনে বেশ হেসে উঠে অদিতি। আরে না আমাকে চাকরি কে দেবে। আমি কী তোমার মতো ভালো স্টুডেন্ট ছিলাম নাকী। তবে ঢাকায় আসার পরে প্রথম কয়েক মাস চাকরির চেষ্টায় করেছিলাম। কিন্তু পাইনি। কারণ সেরকম কোন রেফারেন্স ছিল না।

তারপর?? জিজ্ঞেস করে অরিএ??

তারপর আর কী আমার এক বোনের পরামর্শে ওর সঙ্গে অনলাইন বিজনেস স্টার্ট করি। সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সেই ব‍্যবসা দাঁড়িয়ে যায়। এখন ঐটাই করি। তোমার কথা বলো।

আমার কথা কিছু বলার নেই। আমি যেন আগের থেকেও বেশি ছন্নছাড়া।

কেন কী হয়েছে। তোমার বউয়ের সাথে কী তোমার ঝামেলা চলছে। ব‍্যাপার না ঠিক হয়ে যাবে।

এটা ঠিক হওয়ার না। বিয়েটা আমি করার পরেই বুঝেছিলাম আমার সাথে ওর যাবে না।

কিন্তু তোমার পরিবার থেকে তো দেখেই বিয়ে দিয়েছিল তাহলে এমন হওয়ার কারণ কী??

মানুষের বাহ‍্যিক সৌন্দর্য দেখে তুমি কখনোই তাকে ভালো বলতে পারো না। আমার পরিবার তো ঐটাই দেখেছিল। কথাটা বলে চুপ হয়ে যায় অরিএ।

আমি ঠিক বুঝতে পারছি না একটু বুঝিয়ে বলবা? বলে অদিতি।

বিয়ের পর থেকেই ওর সাথে আমার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। ও কখনোই কথা শোনার জন্য প্রস্তুত না। ও চাই সবসময় ওর নিজের কথায় সব হবে। ওর মধ্যে সবকিছু নিয়েই বেশ অহংকার কাজ করে। আর যেটা আমার একেবারেই পছন্দ না। প্রথম দিকে আমি কিছু বলতাম না। ভাবতাম সময়ের সাথে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু পরবর্তীতে বুঝলাম এটা ঠিক হওয়ার না। ওটা ওর জন্মগত সমস্যা। কী জানো অদিতি আমাদের দেখা উচিত তুমি যাকে বিয়ে করছ তার সাথে তোমাকে মানাক বা না মানাক তার সাথে অবশ‍্যই তোমার ধারণা মেলা জরুরি।

সৌন্দর্যের দিক দিয়ে না মানালে মানুষ কয়েকদিন কথা বলবে তারপর চুপ হয়ে যাবে। কিন্তু যদি ধারণা না মেলে মতামত না মেলে দুজন দুইপথে যাও তাহলে জীবন শেষ হয়ে যাবে। আমার এখন এই অবস্থা। আমি রীতিমতো হাঁফিয়ে উঠেছি।

এইজন্যই অনেক চেষ্টা করে আবার তোমার সাথে যোগাযোগ করা। দেখ আমি তো এখন আমার পরিবারের মানুষ কে এসব বলে বোঝাতে পারব না। তাদের দোষ দিয়েও আর লাভ নেই। সবকিছুই আমার ভাগ্য ছিল। না হলে আমি ঐসময় ওদের কথা শুনে তোমাকে ঐভাবে ফিরিয়ে দিতে পারতাম না।

কথাটার পরে দুজনেই চুপ হয়ে যায়।

তুমি কী ডিভোর্সের কথা ভাবছ? জিজ্ঞেস করে অদিতি??

সেটা যে ভাবিনি এমনটা না। তবে ও ঐটাতেও রাজি না। জানি না কোন জন্মের প্রতিশোধ নিচ্ছে আমার উপর।

তাহলে কী করবে এখন? আমি ঠিক জানি না কী করব কথাটা বলে অদিতির হাতটা জাপটে ধরে অরিএ। অরিএের চোখ দিয়ে পানি চলে আসে। সেটা দেখে অদিতি নিজেও কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে যায়।

আচ্ছা আমরা এমনটা করতে পারি না। আমরা আবার এক হতে পারি না। কথাটা বলে অরিএ।

কিন্তু এখন সমাজ কী বলবে এটা ভেবে দেখেছ?? কথাটা বলে যেন সবকিছুর সমাপ্তি টেনে দেয় অদিতি। কিছুক্ষণ পরে অদিতি বলে তবে আমার মনে হয় না আর সমাজের কথা মানুষের কথা শোনার কোন প্রয়োজন আছে আমাদের।

আমরা ইতিমধ্যে একবার এসবের কথা ভেবে আমাদের জীবন থেকে অনেক গুলো বছর হারিয়ে ফেলেছি। আমি আর সেটা চাই না। আমরা বাকিটা জীবন একসঙ্গে থাকতেই পারি। বাকি যা হবে দুজন মিলেই দেখা যাবে.... কথাটা বলে এবার অরিএের হাতটা চেপে ধরে অদিতি.....

এই যে ভাই আর কতক্ষণ এখানে দাঁড়িয়ে থাকবেন!! এবার এখান থেকে সরে দাঁড়ান। আজ শুক্রবার আজ অনেক মানুষের ভীড় এখানে। অরিএ বুঝতে পারে এতোক্ষণ সে সবকিছু কল্পণা করছিল অদিতির কবরের সামনে দাঁড়িয়ে। হ‍্যা অদিতি থাকলে এখন হয়তো এমনটাই হতো। ও আমাকে এমন কষ্টে দেখতে পারতো না।

অরিএের বিয়ের পর অদিতি আর নিজেকে নিজে সামলাতে পারেনি। পরিবার সমাজ আশেপাশের মানুষের কথার থেকে বাঁচতে একদিন আত্মহত্যা করে। না সেটা আত্মহত্যা ছিল না এই সমাজের সবাই মিলে অদিতি কে হত্যা করেছিল।

হ‍্যা একজন পারতো অদিতি কে বাঁচাতে। সেটা ছিল অরিএ। কিন্তু ও তো তখন নতুন নেশায় মগ্ন।



সবাইকে ধন্যবাদ💖💖💖।



IMG-20231027-WA0008.jpg

Facebook
Twitter
You Tube



অনন্ত মহাকালে মোর যাএা অসীম মহাকাশের অন্তে। যারা আমাদের পাশে আছে তারা একটা সময় চলে যাবেই, এটা তাদের দোষ না। আমাদের জীবনে তাদের পার্ট ওইটুকুই। আমাদের প্রকৃত চিরশখা আমরা নিজেই, তাই নিজেই যদি নিজের বন্ধু হতে পারেন, তাহলে দেখবেন জীবন অনেক মধুর।তখন আর একা হয়ে যাওয়ার ভয় থাকবে না।


আমি ইমন হোসেন। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি একজন ছাএ। তবে লেখাপড়া টা সিরিয়াসলি করি না হা হা। লেখালেখি টা বেশ পছন্দ করি। এবং আমি ফুটবল টা অনেক পছন্দ করি। আমার প্রিয় লেখক হলেন জীবনানন্দ দাস। আমি একটা জিনিস সবসময় বিশ্বাস করি মানিয়ে নিতে এবং মেনে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর।।





Amar_Bangla_Blog_logo.jpg

Banner(1).png

3jpR3paJ37V8JxyWvtbhvcm5k3roJwHBR4WTALx7XaoRovUdcufHKutmnDv7XmQqPrB8fBXG7kzXLfFggSC6SoPdYYQg44yvKzFDWktyjCspTTm5NVQAdTm7UoN34AAMT6AoF.gif



Heroism_Second.png


1000561739.png


Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 3 days ago 

আপনার গল্পের আগের পর্ব গুলো হয়তো আমার পড়া হয়নি। তবে আজকের পর্ব পড়ে অদিতির জন্য অনেক কষ্ট লাগলো। আসলে অরিএ তার ভুল বুঝতে পারল তবে অনেক পরে। ধন্যবাদ ভাইয়া অনেক সুন্দর লিখেছেন।