নদীর পাড়ে বন্ধুত্বের ভ্রমণের গল্প
হ্যা লো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @rayhan111 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।
গ্রীষ্মের এক দুপুরে হঠাৎ করেই আমাদের চার বন্ধুর মাথায় ভ্রমণের ভূত চাপল। আমি, তন্ময়, রাহুল আর সুদীপ,স্কুলজীবনের চার অটুট সঙ্গী। পরীক্ষা শেষ হয়েছে, ছুটিও চলছে, তাই কোথাও ঘুরে আসা না মানেই নয়। তন্ময় বলল, চলো নদীর পাড়ে যাই! গ্রামে আমার মামার বাড়ির পাশে একটা সুন্দর নদী আছে, নাম ছোটকালিন্দী।
পরদিন ভোরে, ব্যাগ গুছিয়ে রওনা হলাম। গ্রামের পথে যাত্রা সবসময়ই এক ধরনের আনন্দ দেয়,ধানের খেত, কাঁকড়াবিছে রাস্তায় ছোট ছোট দোকান, আর পাখিদের গান। আমাদের চিৎকার আর হাসাহাসিতে বাসের অন্য যাত্রীরা কিঞ্চিত বিরক্ত হলেও, আমরা ঠিকই উপভোগ করছিলাম প্রতিটি মুহূর্ত।
গ্রামে পৌঁছে মামার বাড়িতে সামান্য বিশ্রাম নিয়ে, দুপুরের খিচুড়ি-মাংস খেয়ে আমরা নদীর দিকে হাঁটলাম। নদীর পাড়ে পৌঁছে মনটা যেন ভরে গেল। নদীটা খুব চওড়া না, কিন্তু শান্ত জল, পাশে বটগাছের ছায়া, আর মাঝেমাঝে হালকা বাতাস,সব মিলিয়ে যেন ছবির মত দৃশ্য। আমরা চারজনে চট করে জামাকাপড় খুলে নদীতে ঝাঁপ দিলাম। ঠান্ডা জলের পরশে ক্লান্তি একেবারে মুছে গেল।
তন্ময় সাঁতারে পাকা, সে দৌড়াতে দৌড়াতে বলল,দেখিস কে আগে ঐ গাছে গিয়ে ছুঁতে পারে!আমরা সবাই তখন নদীর মাঝে এক অদ্ভুত প্রতিযোগিতায় মত্ত। কেউ পাড়ে পড়ে হড়কে পড়ছে, কেউ আবার পানিতে পড়ে ফিচফিচ করে হাসছে।
বিকেলে নদীর পাড়ে বসে আমরা মুড়ি, চানাচুর, আর মিষ্টি খেলাম। পাশেই গ্রামের ছেলেরা ক্রিকেট খেলছিল। আমরা গিয়ে তাদের সঙ্গে একটু খেলেও নিলাম। এদিকে সূর্যটা ধীরে ধীরে নিচে নামছে, আকাশটা লালচে-কমলা রঙে রঙিন হয়ে উঠেছে। সে মুহূর্তে আমরা সবাই যেন একসাথে চুপচাপ হয়ে গেলাম,কারণ এমন দৃশ্য বারবার দেখা যায় না, আর এমন বন্ধুত্বও বারবার পাওয়া যায় না।
ফিরতি পথে হাঁটতে হাঁটতে রাহুল বলল, আজকের দিনটা মনে থাকবে সারাজীবন। আমি মাথা নেড়ে বললাম,হ্যাঁ বন্ধু, শুধু একটা নদী নয়, আজ আমরা আমাদের বন্ধুত্বের আরও এক ধাপ গভীরে ডুব দিলাম।আমরা জানি না ভবিষ্যতে কে কোথায় যাব, জীবনের কোন পথে হাঁটব,কিন্তু ছোটকালিন্দীর পাড়ে কাটানো সেই দুপুর, সেই নির্ভেজাল আনন্দ, আর সেই নিখাদ বন্ধুত্ব সব সময় আমাদের মনে গেঁথে থাকবে।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
https://x.com/rayhan111s/status/1941549068603490668?t=F63usNmHKr1HkY7JewRcPA&s=19