মাছ ধরতে গিয়ে ভূত দেখা //পর্ব-১
হ্যা লো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @rayhan111 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।
গ্রামের মানুষের জীবনে মাছ ধরা এক অসাধারণ আনন্দের বিষয়। আমাদের গ্রামে বর্ষাকালে যখন চারিদিকে পানি ভরে যায়, তখন নদী-খাল, বিল আর ডোবা হয়ে ওঠে মাছ ধরার স্বর্গরাজ্য। আমি আর আমার বন্ধু রাশেদ প্রায়ই রাতে চুপিচুপি মাছ ধরতে যাই। কারণ রাতের অন্ধকারে বড় বড় মাছ ধরা যায়, আর তাতে যে মজা, তা দিনের আলোয় পাওয়া যায় না।
সেদিনও ছিল বর্ষার রাত। আকাশে মেঘের ঘনঘটা, মাঝেমধ্যে বিদ্যুতের ঝলকানি অন্ধকার ভেদ করে আলোর রেখা ছড়িয়ে দিচ্ছিল। আমরা দু’জন হাতে কাঁথাঝালি আর একটি টর্চলাইট নিয়ে বের হলাম। গ্রামের পেছনের পুরনো ডোবার দিকে যাচ্ছিলাম, যেটা নিয়ে অনেক গল্প প্রচলিত। গ্রামের বয়স্করা বলে থাকেন, সেই ডোবার পাশে একসময় একটি বিশাল শিমুল গাছ ছিল, যেখানে নাকি অদ্ভুত সব শব্দ শোনা যেত। অনেকে দাবি করেন, রাত গভীর হলে সেখানে এক সাদা পোশাক পরা অচেনা নারীকে দেখা যায়। আমরা এসব গল্পকে নিছক কুসংস্কার ভেবে হাসাহাসি করতাম।ডোবার কাছে পৌঁছেই চারপাশটা যেন হঠাৎ অস্বাভাবিক ঠান্ডা হয়ে উঠল। বাতাসে এক ধরনের শীতলতা, গা ছমছমে অনুভূতি। রাশেদ হেসে বলল,ভাই, ভয় পাচ্ছিস নাকি? এসব ভূতের গল্প বুড়োদের বানানো!আমি মুখে হাসি চাপালেও বুকের ভেতরে হালকা ধুকপুকানি শুরু হয়ে গিয়েছিল।
আমরা ডোবার একপাশে কাঁথাঝালি ফেললাম। অন্ধকারে শুধু জোনাকির আলো আর টর্চলাইটের ক্ষীণ আলো আমাদের ভরসা। হঠাৎ দেখি পানির ওপরে অদ্ভুতভাবে ঢেউ উঠছে। মনে হলো যেন কেউ পানির মধ্যে হাঁটছে। রাশেদ টর্চের আলো ফেলতেই কিছুই দেখা গেল না। আমরা ভেবেছিলাম হয়তো বড় কোনো মাছ, তাই চুপ করে অপেক্ষা করতে লাগলাম।কিছুক্ষণ পর হঠাৎ এক অদ্ভুত শব্দ কানে এলো, যেন কেউ খুব আস্তে হাসছে। আমি চমকে উঠে রাশেদকে জিজ্ঞেস করলাম,শোনলি? কে হাসছে?রাশেদ একটু কাঁপা গলায় বলল,চুপ থাক, হয়তো বাতাসের শব্দ।
ঠিক তখনই দেখি, ডোবার অপর পাশে সাদা রঙের লম্বা এক ছায়ামূর্তি দাঁড়িয়ে আছে। চুলগুলো এলোমেলো, লম্বা কাপড় মাটিতে লটকে আছে। আমাদের দিকে তাকিয়ে স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। শরীরটা হঠাৎ বরফের মতো ঠান্ডা হয়ে গেল। রাশেদ ফিসফিস করে বলল,ভাই… ওটা তো মানুষ না…!আমি আর কিছু বলতে পারলাম না। শুধু টর্চলাইটটা ওদিকে ধরতেই দেখি আলো পড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই সাদা মূর্তি হাওয়ার মতো মিলিয়ে গেল। চারপাশে আবার নিস্তব্ধতা নেমে এলো, শুধু জলের টুপটাপ শব্দ।
আমরা দুজনেই আর দাঁড়াতে পারলাম না। কাঁথাঝালি-টর্চ সব ফেলে দৌড়ে গ্রামে ফিরে এলাম। বুকের ভেতর তখনো ধড়ফড় করছে, কানে যেন সেই অদ্ভুত হাসির শব্দ বাজছে,সেদিন রাতে ঘুম হয়নি একফোঁটাও। মাথার ভেতর শুধু ঘুরছিল সেই সাদা ছায়া। কিন্তু ভয়ের মধ্যেও এক অদ্ভুত কৌতূহল জন্ম নিল,আসলেই কি ভূত ছিল? নাকি আমাদের চোখের ভুল?সেই অংশটুকু পরবর্তী পর্বে আপনার মাঝে শেয়ার করবো ইনশাআল্লাহ।
🙏🤲🙏