ছোট গল্প হাবিবের জীবন (পর্ব-০৯)।

in আমার বাংলা ব্লগlast month

বেশ কিছুদিন পরে আবার হাবিবের জীবনের গল্পের নবম পর্ব নিয়ে লিখতে বসলাম। কয়েক সপ্তাহ পূর্বে অষ্টম পর্ব শেয়ার করেছিলাম সেই ধারাবাহিকতায় আজকে নবম পর্বের গল্প কথাগুলো তুলে ধরব। প্রথম অবস্থায় যখন হাবিবের বাবা মারা যায় তখন হাবিব তার বাবাকে হারিয়ে শোকাহত হয়ে পড়ে কিন্তু হাবিবের বাবার জানাজা শেষ করে দাফন করে যখন হাবিব বাড়িতে আসে তখন হাবিবের মধ্যে অলৌকিক একটা পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় হয়তোবা এই অলৌকিক পরিবর্তন সৃষ্টিকর্তার একটা রহমত বলা চলে। হাবিব তার মায়ের মাথায় হাত বুলিয়ে সান্তনা দিচ্ছিল এই দৃশ্য দেখে বোঝার উপায় নাই যে এই ছেলেটা মানসিক ভারসাম্যহীন।

হাবিবের বাড়ির লোকজন কিছুটা শোকাহত তাই হাবিবের এমন পরিবর্তন প্রথম অবস্থায় চোখে পড়েনি কিন্তু দিনের পর দিন হাবিব যেন স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরে আসছিল হাবিব যে মানসিক ভারসাম্যহীন সেটা যেন বোঝার উপায় নেই। হাবিবের বাবার মৃত্যুর পরবর্তী দিন সকালবেলায় হাবিব অনেক ভোরবেলায় ঘুম থেকে ওঠে এবং ডুবে মাথায় দিয়ে মসজিদে নামাজ পড়তে যায়। মানসিক ভারসাম্যহীন একটা ছেলে যে ভালো-মন্দ কোন কিছুই ঠিকমতো বুঝতে পারেনা সে তার বাবার মৃত্যুর পরবর্তী দিন থেকেই ধার্মিক হয়ে যায় হঠাৎ ব্যাপক পরিবর্তন যেন মনে হচ্ছিল একজন স্বাভাবিক মস্তিষ্কের মানুষ স্বাভাবিক জীবন যাপন করছে। তবে যখন হাবিব পাঞ্জাবি টুপি পড়ে নামাজ পড়তে যায় তখন হাবিবের মা এই বিষয়টি লক্ষ্য করে।

হাবিব যখন বাড়িতে ফিরে আসে তখন হাবিবের মা হাবিবকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে কান্না করতে থাকে আর হাবিব উল্টো তার মাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করে। হাবিব হয়তোবা বুঝতে পারছিলে তার বাবাকে হারানোর পর তাকে তার মায়ের খেয়াল রাখতে হবে এই জন্যই সে তার মায়ের প্রতি একটু বেশি দেখভাল করছিল। হাবিবের তেমন কাজ করার সক্ষমতা ছিল না তবে মানুষকে ঠকিয়ে অন্যের কিছু চুরি করবে এমন মন মানসিকতাও হাবিবের ছিল না এক কথায় মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়া সত্ত্বেও সে ছিল একজন সৎ ব্যক্তির মতই আদর্শবান। হাবিব এর বাবার মৃত্যুর পরে তাদের পরিবারের কোন কর্মক্ষম লোক ছিল না তাই তাদের অনেকটাই অভাবের সাথে দিন যাচ্ছিল। প্রথম অবস্থায় হাবিবের বড় ভাই গুলো তাদেরকে কিছুটা সাহায্য করত কিন্তু তারাও দিনমজুরের কাজ করে কোন মত সংসার চালায় সেক্ষেত্রে চাইলেও তারা তার মা ও ভাইকে সহযোগিতা করতে পারত না। হাবিবের মা শেষ বয়সে অন্যের বাড়িতে কাজ করবে এমন সক্ষমতা ও ছিল না।

হঠাৎ করেই হাবিব বাজারের একটি চায়ের দোকানে কাজ শুরু করলো এলাকার লোকজন এই ব্যাপারটা বেশ সিরিয়াস ভাবে নিল। মানসিক ভারসাম্যহীন একটা ছেলে তার বাবাকে হারানোর পর এরকম দায়িত্ববান হয়ে ওঠার কারণ কি?? পরবর্তীতে লোকজন বুঝতে পারল মূলত হাবিব তার মাকে ভালবেসেই তার মাকে ভালো রাখার জন্যই এরকম বদলে গিয়েছে। তবে হাবিবের চেষ্টা থাকলেও সে মানসিক ভারসাম্যহীন হয় চায়ের দোকানে কাজ করা তার জন্য সম্ভব হয়নি অর্থাৎ খুব বেশিদিন আর চায়ের দোকানে কাজ করতে পারেনি। ধীরে ধীরে হাবিব সবকিছু ভুলে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসছিল অন্যদিকে হাবিবের বাবার মৃত্যুর পর থেকে এলাকার ধনী লোকজন হাবিবের মাকে সাহায্য করত এমনকি যাকাতের টাকা থেকে শুরু করে সব ধরনের দানের অর্থ হাবিবের মায়ের হাতে তুলে দিত যে টাকা দিয়ে হাবিবের মা তার মানসিক ভারসাম্যহীন সন্তান হাবিবকে নিয়ে কিছুটা স্বাভাবিক জীবন যাপন শুরু করল।

হাবিব ধীরে ধীরে তার বাবা হারানোর মায়া কেটে উঠলো আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসায় আগে যেমন মানুষের সঙ্গে হাসি-ঠাট্টা আর পাগলামি খুনসুটিতে মেতে থাকতো ঠিক তেমন জীবন শুরু করল। তবে হাবিব প্রতিদিন বিকেল বেলায় বাজারের মধ্য গিয়ে কাঁচাবাজার থেকে কিছু সবজি সংগ্রহ করত। মূলত হাবিব কে এলাকার সবাই অনেক ভালোবাসতো সে যখন কাচা বাজারে গিয়ে কাঁচাবাজারের বিভিন্ন দোকানদারের কাছে সবজি চাইতো তখন তারা সবাই অল্প কিছু সবজি যেটা হাবিব এবং হাবিবের মায়ের জন্য যথেষ্ট ছিল। তাছাড়া গ্রামের অনেক কৃষকের সবজির ক্ষেত থেকে যখন সবজি বাজারে বিক্রি করতে আসতো তখন হাবিবকে খুশি করে অনেক বেশি সবজি দিত যেটা দিয়ে হাবিবের সংসার বেশ ভালোই কাটছিল।

kids-8769532_1280.jpg



IMG_20220926_174120.png

VOTE @bangla.witness as witness

OR

SET @rme as your proxy


20240320_225328_0000.png



JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abbVD.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png


Polish_20240825_125322804.png

Sort:  
 last month 

একজন স্বাভাবিক মানুষ পরিবারের কোনো সদস্যে হারানোর পরবর্তীতে শোকে কাতর হয়ে থাকে সেখানে হাবিব একজন মানসিক ভারসাম্যহীন আর সে তার বাবাকে হারিয়েছে সেক্ষেত্রে শোকে কিছুটা কাতর থাকবে এটা স্বাভাবিক। সবশেষে স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরে এসেছে জেনে ভালো লাগলো ভাই।

@rex-sumon, I'm absolutely captivated by Habib's story! The way you've woven this narrative, showcasing his resilience and the community's heartwarming support after his father's passing, is truly touching. It's incredible how Habib's sense of responsibility emerged, and the descriptions of his interactions with his mother and the villagers are so vivid.

This episode beautifully highlights the themes of family, compassion, and the unexpected strength found in challenging circumstances. I'm eager to see what unfolds next in Habib's life. Thank you for sharing such a compelling and heartfelt story with us! What inspired you to share Habib's journey? I'm keen to hear more about the real-life context behind this story.

 last month 

হাবিব তো দেখছি তার বাবার মৃত্যুর পর একেবারে স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে। তাছাড়া সে এখন কাজকর্ম করে সংসার চালানোর চেষ্টা করছে, এটা জেনে খুব ভালো লাগলো। আশা করি হাবিব ধীরে ধীরে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হবে। হাবিবের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইলো।

 last month 

বাহ,হাবিবের হঠাৎ এমন দায়িত্বশীল হয়ে ওঠার বিষয়টি সত্যিই গল্পের নতুন মোড় নিয়েছে।আর এই জন্য বেশ ভালো লাগলো।হাবিবের জীবনে আর কি আছে সেটার অপেক্ষায় রইলাম, ধন্যবাদ দাদা।