১০ দিনের মুসাফির।।
বাংলা ভাষার কমিউনিটি
হ্যালো বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই, আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভাল আছেন।
আম মুসাফির। জীবন মানেই তো চলা, কখনও দায়িত্বে, কখনও ভালোবাসায়, কখনও ঈদের আনন্দে। ঠিক তেমনই এক সফরের শুরু হয়েছিল আমার ৬ই জুন শুক্রবারে। ঈদুল আযহার ছুটিকে কেন্দ্র করে ঢাকা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পেছনে রেখে আসি কর্মব্যস্ত নগরজীবনের কোলাহল, সামনে অপেক্ষা করছিল একরাশ ভালোবাসা, আত্মীয়তার টান, আর কিছু অবিস্মরণীয় মুহূর্ত।
১ম দিন ৬ই জুন শুক্রবারে যাত্রা শুরু-
ঢাকার ব্যস্ততা থেকে নিজেকে ছুটি দিয়ে সেই শুক্রবার সকালে রওনা হই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পথে। ট্রেনের জানালার বাইরে ভেসে যেতে থাকে সবুজের দিগন্ত, নদী, মাঠ আর গ্রামের ছোট ছোট ঘরবাড়ি। শরীর ক্লান্ত হলেও মন একেবারে প্রফুল্ল। সন্ধ্যা নাগাদ পৌঁছাই মা-বাবার কাছে।
২য় দিন ৭ই জুন শনিবার ঈদের দিন-
শনিবার ছিল পবিত্র ঈদুল আযহা। পরিবারের সাথে ঈদের নামাজ আদায়, কোরবানির আয়োজন, আত্মীয়স্বজনদের আসা-যাওয়া সব মিলিয়ে একটা আবেগময় দিন পার করি। মা-বাবার স্নেহ, ছোটবেলার ঈদের স্মৃতি, আর প্রিয়জনদের সাথে সময় কাটানোর আনন্দ সব মিলিয়ে মনটা একেবারে পূর্ণ হয়ে ওঠে।
৩য় ও ৪র্থ দিন ৮-৯ই জুন শিবপুরে বোনের বাড়ি-
রবিবার সকালে রওনা দেই বোনের বাড়ির উদ্দেশ্যে, শিবপুর। যদিও রাস্তা দীর্ঘ ছিল, তবু আপন মানুষের টান সেই ক্লান্তিকে তেমনভাবে টের পেতে দেয়নি। একদিন সেখানে থেকে, গল্প, হাসি-ঠাট্টা আর বোনের হাতের রান্নায় মনটা ভরে ওঠে।
৫ম ও ষষ্ঠ দিন ১০-১১ই জুন নানাবাড়ি সেন্দগ্রাম-
একদিন বিরতির পর মঙ্গলবারে যাত্রা করি নানাবাড়ির পথে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের সেন্দগ্রামে। নানি ও মামাদের সাথে দেখা হওয়া, গ্রামের পরিবেশে সময় কাটানো, শৈশবের স্মৃতির ঝাঁপি যেন খুলে যায়। একদিনের ছোট্ট এই সফরও হৃদয়ে গভীর ছাপ রেখে যায়।
৭ম দিন ১২ই জুন শ্বশুরবাড়ি, ভাদুঘর-
বৃহস্পতিবারে আমি যাই শ্বশুরবাড়ি, ভাদুঘর গ্রামে। এক রাত্রি সেখানে কাটিয়ে দেখি আত্মীয়তার আরেক রূপ, যেখানে আমি অতিথি, কিন্তু তার চেয়ে বেশি আপন।
৮ম দিন ১৩ই জুন সেজু দুলাভাইয়ের বাড়ি, উরখুলিয়া-
পরের দিন শুক্রবারে রওনা দেই সেজু দুলাভাইয়ের বাড়ি উরখুলিয়া গ্রামে। এটি ছিল এক অপূর্ব জায়গা চারপাশে শুধু পানি আর নৌকাই একমাত্র বাহন। একেবারে অন্যরকম অনুভূতি, প্রকৃতির কোলে যেন এক শান্তির আশ্রয়। তিতাস নদীর পাশে গড়ে ওঠা এই গ্রামে এক রাত্রি কাটিয়ে মনে হচ্ছিল, সময়টা আরও দীর্ঘ হোক।
৯ম দিন ১৪ই জুন মেজু দুলাভাইয়ের বাড়ি
শনিবারে যাই মেজু দুলাভাইয়ের বাড়ি সাদেকপুর গ্রামে। সেখানে ঘোরাঘুরি, আলাপচারিতা, খাওয়া-দাওয়া সবকিছু ছিল আরামদায়ক, সবাই যেন আমার অনেক বছরের আপন জন ।
১০ম দিন ১৫ই জুন ছোট দুলাভাইয়ের বাড়ি-
১৫ তারিখ রোববারে ছিল আমার সফরের শেষ স্টেশন ছোট দুলাভাইয়ের বাড়ি জালশুকা গ্রামে। দুপুরে খাবার শেষে পারাবত ট্রেনে চেপে আবার ফিরি প্রিয় কর্মস্থল, ঢাকা শহরে।
এই ১০ দিনের ভ্রমণ শুধু শরীরের জন্য ক্লান্তি নয়, বরং মনের জন্য ছিল বিশাল শান্তি ও প্রশান্তির উৎস। প্রতিদিন নতুন বাড়ি, নতুন পরিবেশ, নতুন হাসিমুখ। যদিও নানান জায়গা ঘুরে ঘুরে ক্লান্তি একটু জমেছিল, কিন্তু আত্মীয়তার যে মায়াজাল, তা সবকিছু ভুলিয়ে দেয়। সবচেয়ে ভালো লেগেছে গ্রামের খাবার, আর অবিরাম ভালোবাসার আতিথেয়তা।
আজ রাত ২টা, আমি আবার ফিরে এসেছি কর্মব্যস্ত ঢাকায়। আগামীকাল সকাল ৯টায় অফিস শুরু তবুও হৃদয়ে একরাশ ভালো লাগা, স্মৃতি আর প্রশান্তি নিয়ে ঘুমুতে যাচ্ছি। এই সফর আমার জীবনে এক মধুর অভিজ্ঞতা হয়ে থাকবে।
এই ১০ দিন আমাকে শিখিয়েছে ভ্রমণ শুধু স্থান বদল নয়, এটা আত্মীয়তা, স্মৃতি, সংস্কৃতি, এবং ভালোবাসার এক সম্মিলিত অনুভব। আমি কৃতজ্ঞ এই মুসাফির জীবনের প্রতিটি ধাপের জন্য।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
https://x.com/RamimHa74448648/status/1934463966224470276?t=mZuuBO7cVUXlomu9l4YMvQ&s=19
https://x.com/RamimHa74448648/status/1934464290406445158?t=Q8VD3EQm3x5vvXqQWRuzPg&s=19
এটা শুধু আপনার একার না ভাই আমার নিজেরও গল্প। যদিও আমার ছুটি একদিন কম ছিল। দেখতে দেখতে দিনগুলো চলে গেল। নিজের বাড়িতে নিজেই গিয়েছিলাম স্বল্প সময়ের অথিতি হয়ে।