জাতীয় জাদুঘরে ঘুরতে যাওয়া || ভ্রমণ ব্লগ - ০১

আসসালামু আলাইকুম। আশা করি সবাই ভালো আছো। আপনাদের দোয়ায় আলহামদুলিল্লাহ আমিও অনেক ভালো আছি।

আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে ঘুরতে যাওয়ার কিছু মুহূর্ত। জাতীয় জাদুঘরে অনেক কিছু অভিজ্ঞতা হয়েছে। তাহলে চলুন শুরু করা যাক আজকের ব্লগ।

---

জাতীয় জাদুঘর ভ্রমণ ব্লগ - ০১

আমাদের জাতীয় জাদুঘরে যাওয়ার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল আমাদের ঐতিহ্য এবং প্রাচীন কিছু সম্পর্কে ধারণা নেওয়া। আমাদের ক্লাস ম্যাম আমাদেরকে একটি গ্রুপ প্রজেক্ট দিয়েছিল যেন আমরা জাতীয় জাদু করে গিয়ে রিসার্চ করতে পারে আমাদের ঐতিহ্য নিয়ে। বাড়ির কারণেই মূলত জাতীয় যাদুঘরে যাওয়া।

আমরা সকাল দশটায় রওনা হই যাদুঘর যাওয়ার উদ্দেশ্যে। আমি উত্তরা থেকে সরাসরি ফার্মগেট চলে যায়। আমার বাকি দুইজন বন্ধু মিলে মেট্রোরেল করে শাহবাগ চলে যায়। তারপর সেখান থেকে হালকা নাস্তা করে, জাতীয় জাদুঘরের টিকিট কেটে নেই। টিকেট মূল্য ছিল প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ৪০ টাকা প্রতি জন। দিনটি ছিল বৃষ্টিমুখর। আমরা রওনা হওয়ার সাথে সাথেই বৃষ্টি শুরু হয়ে গিয়েছিল যদিও কিছুক্ষণ পর তা থেমে যায় কিন্তু আবহাওয়া অনেক বেশি আদ্র ছিল।

যেহেতু আমি প্রথমবার জাতীয় জাদুঘরে গিয়েছি সুতরাং প্রথম আকর্ষণ ছিল খুবই ভালো। আমি যাওয়ার আগে ভাবছিলাম যে হয়তো অনেক বেশি লোক সরা গম হবে। তুলনামূলক খুব কম মানুষই ছিল। আর আমি খুব বেশি লোক সরা গম কম পছন্দ করি না। কারণ আমার মতে, এটি অভিজ্ঞতা নষ্ট করে দেয়। যাই হোক, পরে আমরা ধাপে ধাপে এক একটি ফ্লোরে ভালো করে ঘুরে ঘুরে দেখি।

বাংলার ও বাঙালীদের অনেক ঐতিহ্য সেখানে স্মৃতি হয়ে রয়ে গেছে। এসব দেখে আমরা রীতিমতো অবাক। আমরা সব কিছু ঘুরে ফিরে দেখি। বাংলার প্রাচীন ঐতিহ্য যেন সেই জাদুঘরে ফুটে উঠেছে। জাদুঘরের কাজ এই এটা, পুরনো ঐতিহ্যকে ফুটিয়ে তুলা।

আমরা দেখতে পায়, প্রাচীন বাঙালিরা কিভাবে তাদের জীবিকা নির্বাহ করতো। তারা জীবিকা নির্বাহ করতে কি কি ব্যবহার করতো‌, সেগুলোর ইতিহাস। তারা দৈনন্দিন জীবনে কি কি আসবা-পত্র ব্যবহার করতো। সেখানে এইগুলির প্রতিচ্ছবি খুব ভালো করেই ফুটে উঠেছে। অনেকেই এইসব দেখতে এসেছে এবং উপভোগ করছে। আমরা লক্ষ্য করি যে অনেক বিদেশিরাও এখানে জাতীয় জাদুঘরে এসেছে। এটা দেখে ভালো লাগলো যে অনেক বিদেশি পর্যটকরা আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্য জানতে আগ্রহী।

আমরা কয়েকজন বিদেশিদের সাথে কথা বলি যে তারা এই বিষয়ে কি মনে করে। তারা বলল তারা এই বিষয়গুলি সম্পর্কে আগ্রহ প্রকাশ করে। সত্যিই এটি আমাদের জন্য অনেক গর্বের বিষয়। তারপর, আমরা আমাদের প্রেজেন্টেশনের জন্য বিভিন্ন বিষয় গুলো নোট করে রাখি।

প্রাচীন বাঙালিরা তাদের রণক্ষেত্রের যুদ্ধের জন্য যেসব অস্ত্র ব্যবহার করত তারও প্রতিচ্ছবি পাওয়া যায়। সেই পুরনো অস্ত্র থেকে শুরু করে প্রায় আধুনিক আগ্নেয় অস্ত্রের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে। বিশাল বিশাল সব আগ্নেয় অস্ত্র ও কামান রয়েছে। তাছাড়া রয়েছে আমাদের বাংলার গৌরব, আমাদের বাংলার ঐতিহ্য আমাদের প্রিয় বাঙালি কবি ও লেখকেরা। তাদের লেখা বিভিন্ন কাব্য ও গ্রন্থ সেখানে সাজিয়ে রাখা হয়েছে।

আমরা বেশ অনেকটা সময় আমাদের স্মৃতি ও ঐতিহ্যের সাথে কাটানোর পর চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। আমরা অনেক কিছু দেখেছি তবুও অনেক কিছু রয়ে গেছে সময় স্বল্পতার কারণে। আমরা বেশ উপভোগ করেছি এই সময়টাকে।‌ আপনারা যারা জাতীয় জাদুঘরে আসতে চান, তাদেরকে বলবো অবশ্যই চলে আসেন। এখানে আমাদের ঐতিহ্যের সাথে কাটানো স্মৃতি আপনি সবসময় মনে রাখবেন।

এই ব্লগটাকে আর বেশি বড় করবো না। এখানেই শেষ করে দিচ্ছি। জানি সবকিছু বলা যাবেনা। দেখা হবে অন্য কোন ভ্রমণ ব্লগে। আজকের জন্য এখানেই শেষ। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।

---

Device	Honor 200
Location	National Museum Bangladesh
Date	31 August (Sunday)
Photographer	@papamogambo

_{Posted using SteemPro}