নড়াইল ভ্রমণ শেষ পর্ব
আসসালামু আলাইকুম সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। ইতিমধ্যে আপনাদের মাঝে আমি আমার নড়াইল ভ্রমণের প্রথম থেকে সপ্তম পর্ব শেয়ার করেছি। আজ চলে এসেছি শেষ পর্ব শেয়ার করতে। আশা করি আপনাদের কাছে প্রথম থেকে সপ্তম পর্বটি খুবই ভালো লেগেছে। তাহলে দেরি না করে। চলুন শুরু করা যাক শেষ পর্বের গল্প।
স্টেশনের সামনে থাকা পার্কিং এলাকায় কয়েকটা দোকানও খোলা ছিল। কেউ চা বিক্রি করছে কেউ নাস্তা। আমরা তিনজন চা নিয়ে বসে গেলাম। গরম চায়ের কাপ হাতে নিয়ে সামনে আলোকিত স্টেশন ভবনের দিকে তাকিয়ে মনটা কেমন শান্ত হয়ে গেল। মনে হচ্ছিল এমন পরিবেশে প্রতিদিন যদি কিছুক্ষণ বসা যেত তাহলে জীবনের ক্লান্তি অনেকটাই দূর হয়ে যেত। চায়ের পর আমরা আবারও প্ল্যাটফর্মে উঠলাম। তখন রাত কিছুটা গভীর হয়েছে। বাতাসে ঠান্ডা ভাব চারদিক নিস্তব্ধ। আমরা তিনজন চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিলাম শুধু বাতাসের শব্দ আর রেলের ট্র্যাকের ঠান্ডা ঝিলিক। নড়াইলবাসীর জন্য গর্বের এক নতুন অধ্যায় নড়াইল জেলা ছোট হলেও ইতিহাস সংস্কৃতি ও গৌরবে ভরপুর। কিন্তু এতদিন পর্যন্ত রেল যোগাযোগের অভাবটা খুবই অনুভূত হতো। এখন এই নতুন রেলওয়ে স্টেশন চালু হওয়ায় জেলার মানুষদের যাতায়াত সহজ হবে আর অর্থনৈতিক দিক থেকেও এটি বড় সুবিধা এনে দেবে। আমরা তিনজন হাঁটতে হাঁটতে ভাবছিলাম আগে যাত্রা মানেই বাস এখন ট্রেনে করে খুব সহজেই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় নড়াইলের মানুষ যাবে। নতুন স্টেশনের অবকাঠামো দেখে মনে হলো এটি কেবল একটি ট্রেন থামার জায়গা নয় বরং একটি পূর্ণাঙ্গ আধুনিক যাত্রীসেবা কেন্দ্র।
স্টেশনের ভেতরে টিকিট কাউন্টার অপেক্ষার ঘর টয়লেট সবকিছুই পরিষ্কার এবং নতুন। এমনকি দিকনির্দেশনা গুলোও স্পষ্টভাবে লেখা যেন প্রথমবার কেউ এলে সহজেই বুঝতে পারে কোথায় যেতে হবে। Exit লেখা সাইনবোর্ডের নিচ দিয়ে যখন বের হচ্ছিলাম মনে হচ্ছিল আমরা একটা সুন্দর অভিজ্ঞতার সমাপ্তি ঘটিয়ে ফিরছি কিন্তু মনটা যেন ফিরতে চাইছিল না। বাইরে এসে দেখি রাত অনেক হয়েছে। তবুও স্টেশন চত্বর তখনও আলোয় ভরা কয়েকজন মানুষ ঘুরে বেড়াচ্ছে। কেউ ট্রেনের অপেক্ষায় কেউ নিছকই ঘুরতে এসেছে। আমরা তিনজন আবারও একবার পিছনে তাকালাম সেই ঝলমলে স্টেশন ভবন ফুটওভার ব্রিজ আর লাইন ধরে সাজানো লাইটগুলো। মনে হচ্ছিল এই দৃশ্যটা মনের মধ্যে চিরদিন থেকে যাবে। বাইক স্টার্ট দিলাম ধীরে ধীরে স্টেশন এলাকা ছেড়ে শহরের পথে রওনা দিলাম। পিছনের আয়নায় একবার তাকিয়ে দেখি আলোয় ভাসা নড়াইল রেলওয়ে স্টেশন এখনো ঝলমল করছে। সেই দৃশ্যটা যেন এক অদ্ভুত টান তৈরি করছিল মনে হচ্ছিল আবার কোনো এক সন্ধ্যায় ফিরে আসব ঠিক এই জায়গায় একই আলোয়। নড়াইলের এই নতুন রেলওয়ে স্টেশন শুধু একটি স্থাপনা নয় এটি নড়াইলবাসীর গর্ব ও উন্নয়নের প্রতীক। এমন আধুনিক নির্মাণ কাজ শহরের চেহারা বদলে দিয়েছে। রাতে দাঁড়িয়ে চারপাশে তাকালে মনে হয় নড়াইল এখন সত্যিই বদলে যাচ্ছে উন্নয়নের আলোয় আলোকিত হচ্ছে। আমাদের তিনজনের এই ছোট্ট সন্ধ্যা ভ্রমণ হয়তো খুব সাধারণ একটা অভিজ্ঞতা কিন্তু সেই মুহূর্তের শান্তি আলো আর বন্ধুত্বের উষ্ণতা মিশে একে স্মৃতির পাতায় অমলিন করে রেখেছে। যে কেউ নড়াইল এলে একবার এই নতুন রেলওয়ে স্টেশনটি ঘুরে দেখার পরামর্শ দেব। দিন হোক বা রাত এই জায়গাটা দেখলে যে কারও মন ভালো হয়ে যাবে। কারণ এটি কেবল রেল যোগাযোগের কেন্দ্র নয় বরং নড়াইলের নতুন যুগের সূচনা। এটাই ছিল আমার নড়াইল ভ্রমণের শেষ পর্বের গল্প। আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। তাহলে আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই কামনাই রইল।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |

নড়াইল ভ্রমন খুব বেশী ইনজয় করেছেন বুঝতে পারলাম। নড়াইলের রেল স্টেশন বেশ ছিমছাম ও গোছানো।এমন পরিবেশে সময় কাটাতে ভালো লাগার কথাই।যদিও নড়াইলে কোন রিলেটিভ নেই তাই রেল স্টেশন দেখার সম্ভাবনা কম।তবে যদি কখনো কোন ভাবে যেতে পারি তবে অবশ্যই ঘুরে আসব।অনেক ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।