ভ্রমণ পোস্ট// তিস্তা ব্যারেজ ভ্রমণের তৃতীয় পর্ব ।।

🥰.. আসসালামুয়ালাইকুম ...🥰

প্রিয় হিন্দু ভাই-বোনদের জন্য আদাব ও ভালোবাসা 💗🙏। আমার প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল বন্ধুদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও স্নেহ। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি, মহান আল্লাহর রহমতে এবং একে অপরের ভালোবাসায় আপনারা সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও বেশ ভালো আছি।আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির একজন সদস্য,এই প্ল্যাটফর্মের সাথে আমার যাত্রা প্রায় এক বছর ধরে। সত্যি বলতে, এখানে আসতে পেরে আমার মনে হচ্ছে ! যেন নিজের আর একটি নতুন পরিবার খুঁজে পেয়েছি। প্রতিটি লেখা, প্রতিটি মন্তব্য, প্রতিটি বন্ধুত্ব আমাকে দিয়েছে আনন্দ, ভালোবাসা এক নতুন অধ্যায়ের স্বাদ।আজকে আমি আপনাদের সাথে তিস্তা ব্যারেজ ভ্রমণের তৃতীয় পর্ব শেয়ার করবো ।আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক অনেক ভালো লাগবে। চলুন এবার শুরু করা যাক।

ভ্রমণ মানেই শুধু গন্তব্যে পৌঁছে যাওয়া নয়, বরং গন্তব্যের চারপাশের জীবনকে ছুঁয়ে দেখা, সেই পরিবেশকে অনুভব করা এবং মুহূর্তগুলোকে নিজের ভেতরে ধারণ করা। তিস্তা ব্যারেজ ভ্রমণের প্রথম পর্বে ছিল যাত্রার গল্প। দ্বিতীয় পর্বে ছিল প্রকৃতির সৌন্দর্যে হারিয়ে যাওয়ার অভিজ্ঞতা। আর এবার তৃতীয় পর্বে এসে সেই পরিবেশের চারপাশের জীবন। মানুষের ভিড় আর খাবারের স্বাদ নেওয়ার গল্প লিখতে বসেছি আজ।

ব্যারেজের ব্রিজের উপর বেশ কিছুক্ষণ চারদিকে ঘুরে ঘুরে দেখলাম। প্রকৃতির সেই বিশালতা, নদীর স্রোত আর নীল আকাশের সৌন্দর্য দেখে মন ভরে গেলেও , মানুষের কোলাহল আর জীবনের সরলতা যেন আলাদা এক বাস্তবতা এনে দিল চোখের সামনে। ব্রিজ থেকে নেমে পাশের রাস্তার দিকে হাঁটা শুরু করলাম। সেই রাস্তায় সারি সারি দোকান, নানা রঙের সাইনবোর্ড আর মানুষের ভিড় যেন এক ধরনের উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি করে রেখেছে। প্রতিটি দোকান যেন ভ্রমণকারীদের জন্য এক একটি ছোট্ট আকর্ষণ, কেউ বিক্রি করছে চানাচুর, কেউ ফুসকা, কেউবা আনারস কেটে মেখে পরিবেশন করছে। একেকজন বিক্রেতার ডাক, ক্রেতার ভিড় আর খাবারের ঘ্রাণ মিলে এক ভিন্ন অভিজ্ঞতা।

সেখানে গিয়ে পাশে নানা ধরনের নৌকা‘ইস্পিরিড বোর্ড’-এর দেখা পেলাম। বোর্ডে ওঠার ইচ্ছা ছিল, কিন্তু অজানা ভয় কাজ করায় সাহস করে ওঠা হলো না। তবে সেটিকে দূর থেকে দেখাই যেন মজার এক অভিজ্ঞতা হয়ে রইল। জীবনের প্রতিটি ভ্রমণে কিছু ইচ্ছে পূর্ণ হয়, আবার কিছু অপূর্ণ থেকে যায়, আর সেই অপূর্ণতাই আবার পরবর্তী ভ্রমণের জন্য নতুন আকাঙ্ক্ষা তৈরি করে।এরপর আমরা মেতে উঠলাম খাবারের ভিন্ন স্বাদে।

রাস্তার ধারের ছোট ছোট দোকানে মিশে ছিল আনন্দ আর আড্ডার আবহ। গরম গরম ফুসকার সাথে টক ঝাল পানি, মচমচে চানাচুর-মুড়ি মাখা, আর আনারসের টুকরোতে লেবু আর লবণের ছোঁয়া।সব মিলিয়ে এক অন্য রকম স্বাদ এনে দিল সেই মুহূর্তে। বন্ধুরা মিলে একসাথে দাঁড়িয়ে খাওয়া, গল্প আর হাসির ফোয়ারা যেন ভ্রমণের আনন্দকে আরও বাড়িয়ে দিল। প্রকৃতির মাঝে দাঁড়িয়ে খাবারের এই সাধারণ স্বাদই মনে হলো সবচেয়ে অসাধারণ।

তিস্তা ব্যারেজ কেবল একটি প্রকৌশল বিস্ময় নয়, বরং এটি মানুষ, প্রকৃতি আর জীবনের মিলনক্ষেত্র। এখানে একদিকে আছে বিশাল নদীর প্রবাহ, অন্যদিকে আছে মানুষের দৈনন্দিন জীবনের রঙিন চিত্র। রাস্তার ধারের দোকানগুলো হয়তো খুব সাধারণ, কিন্তু সেখানে ভ্রমণকারীরা খুঁজে পায় স্বাদের ভিন্নতা আর বন্ধুত্বের মুহূর্ত। ভ্রমণ কেবল চোখে দেখার বিষয় নয়, বরং জিহ্বায় স্বাদ নেওয়া, কানে মানুষের কোলাহল শোনা আর মনে অনুভূতির ভাঁজ তৈরি করার নামও বটে।

এই ভ্রমণের তৃতীয় পর্বে এসে স্পষ্ট হলো, তিস্তা ব্যারেজে পৌঁছে শুধু প্রকৃতিকে দেখা নয়, বরং চারপাশের মানুষ, তাদের জীবনযাপন আর খাবারের স্বাদ গ্রহণ করাও এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। প্রতিটি ভ্রমণ আমাদের শেখায় নতুন কিছু, আর সেই শিক্ষা হলো সৌন্দর্য শুধু নদী, পাহাড় বা আকাশেই নয়, সৌন্দর্য লুকিয়ে থাকে জীবনের ছোট ছোট মুহূর্তেও। তিস্তার স্রোতের মতোই এই ভ্রমণের স্মৃতি বয়ে যাবে অনেক দিন, মনে করিয়ে দেবে প্রকৃতির পাশাপাশি মানুষের সরল জীবন আর আনন্দও ভ্রমণকে পূর্ণতা দেয়।

এই ছিল আজকের ব্লগ । আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।কার কাছে কেমন লেগেছে তা অবশ্যই কমেন্টের মন্তব্য করে জানাবেন। কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি, আবার নতুন কিছু নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে।সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং সবার জন্য অনেক শুভকামনা রইল ।

আমার নাম মোছাঃ সামছুন্ নাহার সুইটি । আমি একজন বাংলাদেশী মুসলিম নাগরিক । আমি আমার মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। আমি অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ালেখা করি । আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করার জন্য যুক্ত হয়েছি । আমি গত ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই । এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি ।আমি ভ্রমণ করতে অনেক বেশি পছন্দ করি।সেই সাথে নতুন নতুন ফটোগ্রাফি করতে ও ইউনিক রেসিপি এবং নতুন নতুন ইউনিক ডাই তৈরি করতে বেশ পছন্দ করি । আর স্টিমিট প্ল্যাটফর্মকে আঁকড়ে ধরে ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে যেতে চাই, এটাই আমার লক্ষ্য।