মরার উপর খাড়ার ঘা😪

in আমার বাংলা ব্লগlast year (edited)

হ্যালো,

আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই।আশা করছি ভালো আছেন। আমি শারীক ভাবে ভালো আছি তবে মন ভালো নেই।আর মন ভালো না থাকার একমাত্র কারণ বিদুৎ নেই।অনেক কষ্টে দিনগুলো অতিবাহিত হচ্ছে। ফোনে চার্জ নেই।ফ্যানে চার্জ নেই,ইউপিএস,পাওয়ার ব্যাক কিচ্ছু তে চার্জ নেই।

IMG20240530095925.jpg

আমাদের এলাকায় বিদুৎ চলে যায় ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ঝড় বৃষ্টির দিন।একটানা তিনদিন পর সন্ধ্যার পর বিদুৎ এসেছিলো।বিদুৎ ছিলো সব মিলিয়ে চার পাঁচ ঘন্টা হবে কারণ বিদ্যুৎ আসার চার থেকে পাঁচ ঘন্টা পর আবারও ভয়াবহ ঝড়ের কবলে পড়ে আমার এলাকা।
ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম হঠাৎ বাতাসের কুমকুম শব্দে চমকে উঠি।সাথে আমার মেয়েও।আমি ঝড়কে খুব ভয় পাই। মেয়েও আমার ভয় দেখে দেখে ভয় পাওয়া শিখে গেছে।সে কি ভয়ংকরী ঝড়।বার বার বাতাসের একটি করে ধাক্কা মনে হয় যেন সব কিছু ভেঙ্গে চুরমার করে নিয়ে যাবে।মেয়েকে কোলে নিয়ে ঠাঁই দাড়িয়ে ছিলাম।যতোক্ষণ ঝড় ছিলো ততক্ষণ দাড়িয়ে সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করেছি।ঝড় প্রায় আধা ঘন্টা ছিলো সব মিলিয়ে তার মধ্যে ভয়ংকর ঝড় ছিলো ১৫ মিনিট।
সকালে উঠে তো চোখ ছানা বড়া কারণ গাছপালা সব মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে। বিশাল বড়ো বড়ো পুরানো গাছ সব বিদুৎতের তারের উপরে পরেছে।কম এলাকায় নয় বিশাল এলাকা জুড়ে এমন অবস্থা। বিদুৎ কবে আসবে তার কোন ঠিক নেই।

এদিকে ফোনে চার্জ নেই।ফ্রিজের সব জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে দুএকদিন হলে কথা ছিলো। একটানা এক সপ্তাহ কি আর ফ্রীজের জিনিসপত্র ঠিক থাকার কথা।বিদুৎ অফিসের লোকজন অক্লান্ত কাজ করেই চলেছে। এ এলাকা তো অন্য এলাকা এরকম ভাবে একের পর এক কাজ করে করে বিদুৎ দিচ্ছেন। আমরা সবাই আশায় আশায় আছি একটু পর বিদুৎ দেবে আর একটু পর দেবে আজ নয় কাল দেবে এরকম করে করে এতোগুলা দিন পার হলো।এদিকে ব্লগের কোন কাজ ঠিক মতো করতে পারছি না।কাল রাত থেকে ফোন বন্ধ ছিলো।সাদুল্যাপুর গিয়েছিলাম পূজার খরচ করতে আর ওখানে গিয়ে দেখি বিদুৎ এসেছে। পরিচিত দাদার দোকানে বসে চার্জ দেব ভাবছিলাম। ওনার চার্জার নেই অনেক কষ্টে একটি চার্জার জোগার করে দিলেন দাদা।চার্জে দিয়ে আধা ঘন্টা বসে থাকার পর চার্জ হয়েছে মাত্র ৩০ পার্সেন্ট তার মধ্যে আমার ফোনে চার্জ ছিলো বিশ পার্সেন্ট। ভাবলাম এই চার্জার দিয়ে রাতদিন চব্বিশ ঘন্টায়ও চার্জ উঠবে না।চলে আসলাম বাড়িতে।আশায় আছি হয়তো বিদুৎ আসবে।ফোন বন্ধ হয়ে গেলো গাতকাল রাত এগারোটা থেকে আজ বিকেলে চারটা অবদি ফোন বন্ধ ছিলো।

আজ বাজার ও আশেপাশে সব জায়ায় বিদুৎ এসেছে তাই ফোনটি চার্জ দিয়ে নিয়ে এসেছি। বিকেলে বিদুৎ অফিসের লোকজন ঘোরাঘুরি করছিলো এবং ওনারা বলেছে যে সন্ধ্যার পর বিদুৎ চলে আসবে। এই লাইনের বিদুৎ আরে আগে আসতো কিন্তুু লাইনের কাজ করার সময় ওনাদের এক কর্মী বিদুৎপৃষ্ট হয়েছেন।হাসপাতালে নিয়ে গেছে। ঘটনাটা শুনে খুব মর্মাহত হয়ে গিয়েছি।আসলে লাইনের কাজ করার সময় যে লাইনে বিদুৎ দিতে বলেছে ফোন করে সে লাইনে বিদুৎ না দিয়ে যে লাইনে কাজ করছিলেন সে লাইনে বিদুৎ সংযোগ দিয়েছেন এবং সাথে সাথেই বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মারাত্মকভাবে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং হাসপাতালে ভর্তি কিছুক্ষণ পর মারা গেছেন। ঘটনাটি শুনে এতটাই খারাপ লাগলো যে বলে বোঝাতে পারবো না। সব আশা শেষ ভাবলাম আর বিদ্যুৎ আসবে না কিন্তু হঠাৎই দেখলাম দুইবার বিদ্যুৎ আসলো এক ঝলক একটু সময়ের জন্য যেন বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে এরকমভাবে। এরপর লক্ষ্য করলাম সামনে পিছনে ডানে সব বাড়িতেই আলো জ্বলছে বিদ্যুতের এসেছে কিন্তু আমাদের কয়েক বাড়িতে নেই।ট্যানাস মিটারের ব্যারেল পড়ে গেছে আগামী কাল ছারা ঠিক করা সম্ভব নয়😪 এতো মরার উপর খাড়ার ঘা এমন অবস্থা।
এতদিনে যতটা বিদ্যুৎ না থাকার কারণে অস্বস্তি লাগছিল তার থেকে দ্বিগুণঅসস্থিতে পড়ে গেছি আজকে কারন চার পাশেই আলো আমাদের বাড়িতে নেই। ফ্রিজের সব জিনিস নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ফোনে চার্জ থাকছে না ফ্যান চালাতে পারছি না। বাড়িতে আলো এবং ফ্যান চালাতে হচ্ছে একমাত্র সোলার প্যানেলের সাহায্যে। রুদ্রের তাপ ও তো খুব বেশি নেই যে সোলার প্যানেল ঠিক ঠাক মত কাজ করবে।
কি আর করা এভাবে আবারো বিদ্যুতের অপেক্ষায় দিনের পর দিন হয়তো গুনতে হবে দেখা যাক কাল সকালে চা নাস্তা করার পরে সে তো ঠিক করে দিতে চেয়েছেন যদি দেন তাহলে ভালো না দিলে আরো ভালো। এই ভাবনা ভাবা ছাড়া আর করার কিচ্ছু নেই।আজকের মত এখানেই শেষ করছি । আবারো দেখা হবে অন্য কোন কষ্টের মাধ্যমে সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন নিরাপদে থাকুন।

টাটা

পোস্টবিবরণ
পোস্ট তৈরি@shapladatta
শ্রেণীজেনারেল রাইটিং
ডিভাইসOppoA95
লোকেশনবাংলাদেশ

photo_2021-06-30_13-14-56.jpg

IMG_20230826_182241.jpg

আমি হৈমন্তী দত্ত। আমার স্টিমিট আইডিরঃshapladatta. জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। শখঃবাগান করাও নিরবে গান শোনা,শপিং করা। ভালো লাগে নীল দিগন্তে কিংবা জোস্না স্নাত খোলা আকাশের নিচে বসে থাকতে।কেউ কটূক্তি করলে হাসি মুখে উড়িয়ে দেই গায়ে মাখি না।পিছু লোকে কিছু বলে এই কথাটি বিশ্বাস করি ও সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি।বিপদকে ও অসুস্থতার সাথে মোকাবেলা করার সাহস রাখি সহজে ভেঙ্গে পরি না। সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি পর হিংসা আপন ক্ষয়। ধন্যবাদ ।

A5tMjLhTTnj4UJ3Q17DFR9PmiB5HnomwsPZ1BrfGqKbjddgXFQSs49C4STfzSVsuC3FFbePnB7C4GwVRpxUB36KEVxnuiA7vu67jQLLSEq12SJV1etMVkHVQBGVm1AfT2S916muAvY3e7MD1QYJxHDFjsxQDqXN3pTeN2wYBz7e62LRaU5P1fzAajXC55fSNAVZp1Z3Jsjpc4.gif



IMG_20240530_225943.jpg

Sort:  
 last year 

আসলে আমরা এখন এমন একটা পর্যায়ে আছি যে ফোনে চার্জ না থাকলে ভালই লাগেনা। সময় যায় না তার ওপর আমরা আমার বাংলা ব্লগ প্ল্যাটফর্ম এ কাজ করি একদিন এখানে আসতে না পারলে মনটা কি মলিন হয়ে থাকে। আপনার এই কয়দিন বেশ কষ্টে গিয়েছে বুঝতে পারতেছি পোস্টটি পড়ে। তবে আশাকরি এখন আর আপনার এই কষ্টটি হচ্ছে না । যখন বিপদ হয় সবদিক থেকেই হয়। কোন কিছুতেই চার্জ ছিল না আবার একটু খানি কারেন্ট আসছিল তখনো আপনি ফোন এ চার্জ দিতে পারেন নাই। ধন্যবাদ আপনাকে আপনার এই কয়টি দিনের গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

 last year 

ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 last year 

এতদিন বিদ‍্যুৎ না থাকা সত্যি বেশ অস্বস্তিকর। ঝড় হলে গ্রামের দিকে বিদ‍্যুৎ এইরকম ঝামেলা করে। এর প্রধান কারণ গাছপালা। এর জন্য সবচাইতে আগে আমাদের নিশ্চিত করতে হবে বৈদ‍্যুতিক তারের উপর যেন কোন গাছপালা বা গাছের ডাল না থাকে। আপনার অবস্থা টা বুঝতে পারছি। এখন বিদ‍্যুৎ ছাড়া একটা দিন থাকা মুশকিল সেখানে আপনি এতোগুলো দিন ছিলেন।

 last year 

ঠিক বলেছেন ভাইয়া বিদুৎ ছারা একদিন ও থাকা মুসকিল।

 last year 

আমরা বর্তমানে যে পরিস্থিতিতে আছি বিদ্যুৎ ছাড়া একদিনও চলা অসম্ভব। সে জায়গায় আপনার সাত দিন হলো বিদ্যুৎ নেই। সত্যিই আপু এটি একটি দুঃখজনক বিষয়। গ্রাম বাড়িতে একটু ঝড় হলে বিদ্যুৎ থাকে না প্রায় সময়। আর এর জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী হচ্ছে গাছের ডাল। আশা করি আপনি খুব দ্রুত বিদ্যুৎ পেয়ে যাবেন। আপনার জন্য রইল শুভকামনা।

 last year 

ঠিক বলেছেন আপু বিদ্যুৎ ছাড়া একদিনও চলার সম্ভব আর সেখানে আমি সাত দিন বিদ্যুৎ বিহীন। ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 last year 

বাড়িতে বিদ্যুৎ না থাকলে যে কি অস্বস্তিকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়, সেটা আমি খুব ভালো করেই জানি দিদি। তবে ঝড় হয়েছে তো অনেকদিন হলো, এতদিনে তো আপনাদের ওইদিকের বিদ্যুৎ লাইন ঠিক করে দেওয়ার কথা। তবে আমার মনে হয়, যেহেতু বিদ্যুৎ লাইন ঠিক করতে গিয়ে একজনের প্রাণ চলে গিয়েছে, এজন্য হয়তো তারা আরো বেশি সতর্ক হচ্ছে এই ব্যাপার নিয়ে। তাছাড়া যারা ফ্রিজে বিভিন্ন জিনিস সংরক্ষণ করে রাখে তাদের বাড়িতে কারেন্ট না থাকলে যে কি অসুবিধা হয়, সেটা আমি জানি। যাই হোক, আশা করি খুব দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

 last year 

ধন্যবাদ দাদা সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 last year 

বৃষ্টি হলে আমার কাছে বেশ ভালো লাগে তবে যখন জোরে বাতাস এবং বিদ্যুৎ চমকায় তখন আমিও খুবই ভয় পাই আপু। আর রাতে যদি ঝড়বৃষ্টি হয় তাহলে তো আমার সারারাত ঘুমই হয় না। একদম ঠিক বলেছেন এখন ফোনে চার্জ না থাকলে একটুও ভালো লাগে না। কিছুদিন আগে একই অবস্থা আমাদেরও হয়েছিল। ফোনে একে তো চার্জ ছিল না তার ওপর আবার নেটওয়ার্ক ছিল না। কি একটা বিশ্রিকর অবস্থায় পড়েছিলাম। খুব তাড়াতাড়ি এই দুঃসময় গুলো কেটে যাক এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করছি।