উৎসব।।১৮ জুলাই ২০২৫

blacks (86)adminCo-Founder& Operations Head 🇮🇳in আমার বাংলা ব্লগ • 2 days ago

হ্যালো বন্ধুরা,

দুর্গা পুজো কি কেবল একটি উৎসব, নাকি বাঙালির অস্তিত্বের লড়াই?—এই প্রশ্নটির উত্তর খুঁজতে গেলে আমাদের ঢুকতে হয় ইতিহাস, সংস্কৃতি, আত্মপরিচয় আর সামষ্টিক মানসিকতার গভীরে।নিঃসন্দেহে দুর্গা পুজো একটি ধর্মীয় উৎসব—মায়ের আগমন, অঞ্জলি, সিঁদুর খেলা, ঢাকের তালে মাতোয়ারা হয়ে ওঠা, নতুন জামা, আলোর ঝলকানি সবই এর অঙ্গ।কিন্তু শুধুমাত্র এটুকুতে দুর্গা পুজোর ব্যপ্তি সীমাবদ্ধ নয়।এর মধ্যে আছে বাঙালির আত্মপরিচয়, ঐতিহ্যের প্রকাশ, আত্মমর্যাদার উচ্চারণ এবং একটা জাতির অস্তিত্বের প্রতিরোধমূলক প্রকাশ।

_{Image taken from pixabay.com}

ঔপনিবেশিক শাসনের সময়কালেও যখন ব্রিটিশ শাসকরা বাঙালিকে "বাবু" বলে খাটো করতে চেয়েছিল,তখনও দুর্গা পুজো হয়ে উঠেছিল একটি আত্মবিস্তারের প্রতীক।জমিদারদের প্রাসাদে পুজো ছিল আত্মমর্যাদা প্রদর্শনের উপায়,আবার ১৯ শতকের শেষে বারোয়ারি পুজোর উত্থানে দেখা যায় বাঙালির সম্মিলিত শক্তির বহিঃপ্রকাশ।সেখানে একমাত্রিক ধর্ম নয়, ছিল সংস্কৃতি, জাতীয়তাবাদ এবং সমবেত চেতনার প্রতিধ্বনি।আর আধুনিক কালে, যখন গ্রাম ছেড়ে, দেশ ছেড়ে, বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে বাঙালি নিজের শিকড়কে খোঁজে, তখন দুর্গা পুজো হয়ে ওঠে নিজের শেকড়ে ফিরে আসার এক অনন্য উৎসব—যেখানে মা আসেন,সঙ্গে করে নিয়ে আসেন পরিচয়ের গন্ধ, ভাষার আত্মা এবং স্মৃতির আবেশ।

এই পুজোর মাধ্যমে বাঙালি কেবল দেবী দুর্গাকে আরাধনা করে না,সে নিজের ভেতরের শক্তি, সাহস, সৃজনশীলতা ও প্রতিবাদী চেতনাকেও জাগ্রত করে।এই পুজো প্রতিবার মনে করিয়ে দেয়—"আমি বাঙালি,আমি এখনও বেঁচে আছি, আমি এখনও লড়ি—সংস্কৃতির মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত।" ফলে দুর্গা পুজো শুধু উৎসব নয়, এটা এক লড়াই—অস্তিত্ব রক্ষার, আত্মপরিচয়কে ধরে রাখার, এবং প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বাঙালিয়ানা বাঁচিয়ে রাখার এক চুপচাপ বিপ্লব।

VOTE @bangla.witness as witness