শৈশবের রোমাঞ্চকর খেলা-গোল্লাছুট আর কুত-কুত
আসসালামু আলাইকুম
কেমন আছেন আমার প্রিয় সহযাত্রী ভাই বোনেরা? আশা করি সবাই আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছেন। আমিও আপনাদের সবার দোয়ায় আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছি। তবে মনমানসিকতা ভালো নেই। আর মনমানসিকতা যদি ভালো না থাকে তাহলে শরীর মন অচল হয়ে পড়ে। তারপরেও আপনাদের সবার মাঝে আমার আরও একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হলাম। আজ আমি একটি শৈশবের কিছু কথা নিয়ে আপনাদের সবার মাঝে হাজির হয়েছি।আশা করি আপনাদের সবার কাছে অনেক ভালো লাগবে। তাহলে চলুন আজ আমার শৈশবের কিছু স্মৃতির অনুভূতি জেনে আসি।
আসলে শৈশবকাল আমাদের সবার জীবনে একটি স্মৃতিমধুর। আমি মনে করি শৈশবের স্মৃতি আমাদের সবার জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যা আমাদের প্রতিটিদিন প্রতিটি মুহূর্ত ফিরিয়ে নিয়ে যায় সেই শৈশবের দিনগুলোর মাঝে। শৈশবে আমাদের ছিল না কোন ভাবনা, ছিলনা কোন দুঃশ্চিন্তা বা কোন দায়িত্ববোধ। তখন আমাদের প্রতিটি দিন ও মুহূর্ত ছিল একদম সাদাসিদে ও আনন্দ পূর্ণ। এখনো সেই দিনগুলোর প্রতিটা সময় ও মুহূর্তগুলো মনে পড়লে মনে হয় যেন সেদিনের সেই দিন গুলোই অনেক সুন্দর ছিল। এখন ভাবী কেন বড় হতে গেলাম। চাইলেও ফিরে যেতে পারবো না সেই শৈশবে ফেলে আসা দিনগুলোতে। তাইতো আজও চলে গিয়েছিলাম শৈশবের কিছু মধুর স্মৃতিতে। আর সেই মধুর স্মৃতির কিছু অংশ আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে এলাম।

AI দিয়ে তৈরি
ছেলেবেলার এক অমলিন আনন্দ ছিল গোল্লাছোট আর কুত-কুত খেলা। সরকারি কোয়ার্টারের ছোট ছোট রাস্তাগুলো আমাদের খেলার ময়দান, যেখানে আমরা বন্ধুদের সঙ্গে মিলিত হয়ে এই দুই খেলায় মেতে উঠতাম। এই খেলাগুলো ছিল শুধুমাত্র শরীর চর্চার মাধ্যম নয়, বরং আমাদের মধ্যে কৌশল, সৃজনশীলতা এবং দলবদ্ধ কাজের গুণাবলী গড়ে তোলে। গোল্লাছোট খেলা ছিল এক ধরণের দ্রুতগামী প্রতিযোগিতা। খেলার মূল উদ্দেশ্য ছিল ছোট ছোট বল বা গোল্লাকে দ্রুত ঘুরিয়ে নিজের হাতে আটকে ধরা। এতে চটপটে দৌড়ঝাঁপ, চটকদার নজর আর দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রয়োজন হত। আমরা একে অপরকে ঠকানোর জন্য নানা ধরনের কৌশল অবলম্বন করতাম। কখনো গোল্লা হারিয়ে যেত, আবার কখনো হারানোর ভয়ে সতর্ক হয়ে দৌড়াতাম। এই খেলাটির মজাই ছিল প্রতিপক্ষের পিছে লেগে থাকা এবং নিজেদের বাঁচানো।
অপরদিকে, কুত-কুত ছিল একটু আলাদা ধরনের খেলা। এতে দুই দলে ভাগ হয়ে একে অপরকে ধরে রাখার লড়াই হতো। এই খেলায় শারীরিক শক্তি, দ্রুততা আর দলবদ্ধ কাজের সমন্বয় প্রয়োজন ছিল। আমরা ছোট্ট রাস্তায় বা উঠোনে খেলতাম কুত-কুত, যেখানে লুকিয়ে থাকা, আচমকা আক্রমণ করা এবং পালানো সবই ছিল খেলার অংশ। আমাদের কোয়ার্টারের চারপাশের ছোট ছোট গলিপথ আর উঠোনগুলো এই খেলাগুলো খেলার জন্য একদম উপযুক্ত জায়গা ছিল। আমরা খেলার মাঝে একে অপরের সঙ্গে হাসি-ঠাট্টা করতাম, নতুন কৌশল শিখতাম, আর কখনো কখনো নিজেদের মাঝে ছোটখাটো রকমারি তৈরি হতো।
বর্ষার দিনে এই খেলাগুলো একটু ঝামেলা হয়, কারণ কাদা আর পানি জমে যায়। কিন্তু তার মধ্যেও আমরা থামতাম না, বরং কাদা-মাটির খেলাটাই আমাদের জন্য আরও বেশি আকর্ষণীয় হয়ে উঠত। কাদায় দৌড়ানো, ভিজে যাওয়া এবং কাদায় গড়াগড়ি দিয়ে মজা আমাদের শৈশবের অন্যতম রোমাঞ্চ ছিল। শীতকালে খেলার সময় আমাদের শরীর গরম রাখার জন্য দৌড়ঝাঁপ করতাম। কখনো কখনো খেলায় ক্লান্ত হলেও বন্ধুরা একে অপরকে উৎসাহ দিয়ে খেলায় লাগিয়ে রাখত। গরম চায়ের কাপ হাতে নিয়ে আমরা আবার নতুন উদ্দীপনায় খেলা শুরু করতাম।
গোল্লাছোট আর কুত-কুত খেলা আমাদের শৈশবের মধুর স্মৃতি। এই খেলাগুলো আমাদের মধ্যে বন্ধুত্বের বন্ধন গড়ে তোলে, শারীরিক ও মানসিক শক্তি বৃদ্ধি করে এবং জীবনযাত্রার কষ্ট ও আনন্দ শেয়ার করার শিক্ষা দেয়। আজও যখন এই স্মৃতি ফিরে দেখি, মনে হয় সেই দিনগুলো ছিল জীবনের সবচেয়ে সুন্দর সময়, যেখানে মাটির গন্ধ, খেলার শব্দ আর বন্ধুত্বের হাসি মিশে ছিল এক অসাধারণ আনন্দে।
কেমন লেগেছে আপনাদের সবার কাছে আজ আমার শৈশবে ফেলে আসা সুন্দর কিছু স্মৃতি নিয়ে পোস্টটি। আশা করছি আপনাদের সবার কাছে আমার পোস্টটি পড়েও অনেক ভালো লেগেছে সবাই ভালো ও সুস্থ থাকবেন সে পর্যন্ত আগামীতে আবার নতুন ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে চলে আসবো ইনশাল্লাহ আল্লাহাফেজ।
