বৃষ্টির দিনে ঘোরাঘুরি ও চায়ের আড্ডা

in আমার বাংলা ব্লগ3 months ago

হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে বৃষ্টির দিনে ঘোরাঘুরি কিছু সুন্দর মুহূর্ত উপস্থাপন করছি। আশা করি, আপনাদের সবার ভালো লাগবে। তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছে।



বৈশাখ মাসের প্রথম দিন থেকেই কালবৈশাখী ঝড়ের আভাস একটু একটু পাওয়া যাচ্ছে। মাঝেমধ্যে সূর্যের তাপে ঘর থেকে বের হতে পারছি না আবার মাঝেমধ্যে পুরো আকাশ কালো মেঘে ঢেকে যাচ্ছে। গরমের সময় বৃষ্টি হলে কিন্তু খুবই ভালো লাগে মনটা আনন্দে নেচে ওঠে। কেউ কেউ তো আবার এতটাই আনন্দিত হয়ে পড়ে যে বৃষ্টির জলে ভিজতে শুরু করে। পরবর্তীতে এই আনন্দ অসুস্থতায় পরিণত হয়। কারণটা হলো বছরের প্রথম বৃষ্টি হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায় এসিড বৃষ্টি হয়ে থাকে। তখন এই জল শরীরের লাগলে আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ি। তাই এখানে আমি একটা কথা বলব বছরের প্রথম বৃষ্টি হচ্ছে আপনারা এই সময়টাতে বৃষ্টিতে একটু কম ভিজবেন।


যাইহোক,বৈশাখ মাসে এই সময়টাতে কিন্তু আম গাছে আম হয়ে থাকে।একদিন জিম শেষ করে বেরিয়ে বাইরে দেখি পুরো আকাশটা কালো মেঘে ঢেকে গিয়েছে। অল্প অল্প বৃষ্টি হচ্ছে আর প্রচুর বাতাস হচ্ছে তখনই মনে পড়ল এই সময়ে জমিতে আম কুড়াতে যাব। যতই বয়স হয়ে যাক না কেন ঝড়ের সময় আম কুঁড়াইতে একটা আলাদা মজাই লাগে। আমি আর এক দাদা চলে গেলাম বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে আম কুঁড়াইতে। কিন্তু দুঃখের বিষয় জমিতে যেয়ে দেখি কিছু ছোট ছোট বাচ্চারা আম কুঁড়াইতেছে। এটা দেখে আর ওদের আনন্দটা নষ্ট করতে মন চাইলো না। কারণ আমরা গেলে ভয়ে ওরা পালিয়ে যেত বলতো জমির মালিকরা এসেছে। তাই না যেয়ে ওদের বৃষ্টিতে ভিজে আম কুড়ানো উপভোগ করছিলাম।


প্রায় একটানা ৩০ মিনিট অঝোরে বৃষ্টি হলো। বৃষ্টি একটু কমে গেলে বাড়িতে এসে তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নিলাম। দুপুরে খাওয়া দাওয়া করে আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। সন্ধ্যায় ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে বারান্দায় এসে দাঁড়ালাম ঠান্ডা ঠান্ডা হাওয়া শরীরে লাগছিল খুব ভালোই লাগছিল। হঠাৎ তখন ডিপ্রো দাদার ফোন এলো দাদা বললো চলো এই আবহাওয়ায় ঘুরতে যাই। আমি আর এই সুযোগটা মিস করতে চাইলাম না দাদাকে বললাম আমি তৈরি হয়ে বাইক নিয়ে বের হচ্ছি। বাইক বের করে দাদার জন্য অপেক্ষা করছিলাম।কিছুক্ষণ পরে দাদা এলো দেখলাম ডিপ্রো দাদার বাইকের পিছে আমাদের বড় দাদা রয়েছে। বড় দাদা ও আমাদের সঙ্গে এই আবহাওয়া উপভোগ করার জন্য ঘুরতে বেরিয়েছে।


আমাদের বড় দাদা বললো গ্রামের দিকে ঘুরতে যাওয়ার কথা তাই আমরা গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা করলাম। কিছুক্ষণ বাইক চালানোর পর আমরা গ্রামের রাস্তায় ঢুকে পড়লাম। বৃষ্টির এই ঠান্ডা ঠান্ডা আবহাওয়ায় রাতে গ্রামের রাস্তা বেয়ে চলতে খুবই ভালো লাগছিল। মাঝেমধ্যে গাছ থেকে বৃষ্টির জল মুখে এসে পড়ছিল। রাতের বেলায় গ্রামের রাস্তায় চলতে একটু অসুবিধা হচ্ছিল কারণ বৃষ্টি হয়েছে বৃষ্টির জল রাস্তার কিছু কিছু জায়গায় বেঁধে রয়েছে। তারপরেও কিন্তু খুবই ভালো লাগছিল গ্রামের ভিতর চলতে। বেশ কিছুক্ষণ গ্রামে ঘোরাঘুরির পর আমরা একটি জায়গায় গিয়ে দাঁড়ালাম। দক্ষিণার বাতাস বই ছিল আর পাশে কিন্তু ব্যাঙ ডাক ছিল। বৃষ্টির সময়ে গ্রামাঞ্চলে ব্যাঙ ডাকার আওয়াজটা বেশি শোনা যায়। যারা শহরে থাকেন তারা কিন্তু এই পরিবেশটা পাবেন না। এক মাত্র এই পরিবেশটা গ্রামে গেলেই পাওয়া যায়।

e3737e54-fc32-42fd-9bbb-54637470efdd.png

IMG20250418210742.jpg

IMG20250418205442.jpg

16a8d24f-b2d1-4df1-9f4f-9d3303fef316.png

8037af52-15e9-4d02-ad97-824026530b8d.png
ক্যামেরা পরিচিতি: oppo
ক্যামেরা মডেল : oppo A53s 5G
ক্যামেরা দৈর্ঘ্য:3.37mm
তারিখ :১৮.০৪.২০২৫
সময় :০৮.৪৫ মিনিট
স্থান: বারাসাত।


বেশ কিছুক্ষণ এখানে কাটানোর পর আমরা এখানে একটি ফেমাস চায়ের দোকানে গেলাম। এই জায়গাটিতে আমরা বেশিরভাগ সময় এসে চা খেয়ে থাকি। গ্রামের মাঝে এই দোকানটি নির্জন পরিবেশ খোলা আকাশের নিচে চা খাওয়ার জায়গা। এখানে শুধু চা পাওয়া যায় তা কিন্তু নয় অনেক প্রকারের খাবারও কিন্তু পাওয়া যায়। আমরা প্রথমে চা অর্ডার করলাম আর এর সঙ্গে পনিরের পাকোড়া, চিপস কন বল, ভেসে বল। যেহেতু আমি নিরামিষ আহার করছি তার জন্য এই খাবারগুলো অর্ডার করা হয়েছে। খোলা আকাশের নিচে বৃষ্টির এই আবহাওয়াতে চায়ের চুমুকের সঙ্গে গরম গরম পকোড়া খাওয়ার মজাটাই আলাদা। আমাদের খাওয়া শেষ হতে না হতেই ঠান্ডা বাতাস বইতে শুরু করলো। আকাশে যেহেতু মেঘ আগে থেকেই ছিল তাই ভাবলাম যে কোন মুহূর্তে বৃষ্টি হতে পারে।তাই দেরি না করে আমরা বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করলাম।

আজ এখানেই শেষ করছি। সবাই খুব ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই প্রার্থনা করি।