'সাজানো সংসার গল্পের পর্ব ১৬'
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে এই গল্পের আরো একটি নতুন পর্ব নিয়ে হাজির হয়েছি। আশা করি, সবার ভালো লাগবে। তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।
রাকেশ তার বাবার সেবা করতে করতে বাবার পায়ের কাছে ঘুমিয়ে পড়ে। হঠাৎ মাঝরাতে তার বাবার শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। জোরে জোরে যখন নিঃশ্বাস নিতে থাকে তখন রাকেশের ঘুম ভেঙ্গে যায়। রাকেশ দেখতে পায় তার বাবার নিঃশ্বাস নিতে খুব কষ্ট হচ্ছে তখন রাকেশ সবাইকে ডাক দেয়। আকাশের মা রাকেশকে বলে, তোর বাবার কে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে চল দেরি হলে তোর বাবাকে আমরা হারিয়ে ফেলবো। রাকেশের বাড়ির পাশে একজন ভ্যানচালক আছে।সেই রাতে রাকেশ তার কাছ থেকে ভ্যান নিয়ে এসে তার বাবাকে ভ্যানের উপর শুয়ে দিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। সময় যত যেতে থাকে ততই তার বাবা আর অসুস্থ হতে শুরু করে। দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে অবশেষে তারা হাসপাতালে এসে পৌঁছায়। হাসপাতালে এসে রাকেশ তার বাবাকে জরুরি ডিপারমেন্টে ভর্তি করে। কিন্তু এত রাতে কোন ডাক্তার ছিল না তাই হাসপাতালের সেবিকারা তার বাবাকে অক্সিজেন দেয়। অক্সিজেন দেওয়ার পর রাকেশের বাবা একটু সুস্থ হতে শুরু করেন।
সকালে ডাক্তার এলে রাকেশ ডাক্তারের সঙ্গে দেখা করে এবং ডাক্তারকে সবটি খুলে বলে। ডাক্তার রাকেশের বাবাকে দেখার পর কিছু রিপোর্ট পরীক্ষা করতে দেয়। সেই রিপোর্টগুলো পরীক্ষা করতে অনেক টাকা লাগবে। রাকেশ দেরি না করে সে বাড়িতে চলে আসে কারণ তার বাড়িতে কিছু টাকা গোছানো ছিল। সেই টাকা নিয়ে সে চলে যায় তার বাবার রিপোর্টগুলো পরীক্ষা করার জন্য। ভালোভাবে সব পরীক্ষা নিরীক্ষা করার পর ডাক্তার রাকেশ কে বলে,তার বাবার হার্টের প্রবলেম হয়েছে। খুব দ্রুত হার্টের অপারেশন না করলে উনাকে আর বাঁচানো যাবে না। রাকেশ কাঁপা কাঁপা কন্ঠে ডাক্তারকে বলে, ডাক্তারবাবু অপারেশন করতে কত টাকা লাগবে। ডক্টর বলে, সব কিছু মিলিয়ে তিন থেকে চার লাখ টাকা মত লাগবে। রাকেশ হাতজোড় করে ডাক্তারবাবুকে অনুরোধ করে। ডাক্তার বাবু আমরা খুব গরীব এত টাকা আমি কোথায় পাব। ডাক্তার রাকেশ কে বলে, আচ্ছা ঠিক আছে দুই লাখ টাকা ম্যানেজ করো এর থেকে কম আমি আর পারবো না। রাকেশ বলে, আচ্ছা ডাক্তার বাবু আমি চেষ্টা করছি। ডক্টর বলে, তিন দিনের ভিতর তোমার বাবাকে অপারেশন করতে হবে আর তা যদি না হয় তাহলে তোমার বাবাকে আমরা বাঁচাতে পারবো না।
রাকেশ ডাক্তারের চেম্বার থেকে বেরিয়ে নিজের চোখ দুটো পৌঁছে তার মায়ের কাছে যায়। মা বলে, ডাক্তার কি বলেছে? রাকেশ বলে, বাবার হার্টের প্রবলেম হয়েছে ছোট্ট একটি অপারেশন করতে হবে। তিন দিনের ভিতর অপারেশন করতে হবে তা যদি না পারি তাহলে বাবাকে আর বাঁচাতে পারবো না। এই কথাটা শোনার সঙ্গে সঙ্গে তার মা হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করে। রাকেশ তার মায়ের দুচোখ মুছিয়ে দিয়ে বলে, তুমি চিন্তা করো না আমার শরীরে শেষ রক্ত থাকা পর্যন্ত আমি বাবার কিছু হতে দেব না। রাকেশ লক্ষ্মীকে তার বাবা মায়ের খেয়াল রাখতে বলে রাকেশ বেরিয়ে পড়ে টাকা আনতে। সে প্রথমে চলে যায় তার ছোট ভাই প্রদীপের কাছে। প্রদীপের অফিসে যে তার বাড়ির ঠিকানা নিয়ে রাকেশ প্রদীপের বাড়িতে যায়। প্রদীপ তখন তার বউকে নিয়ে শপিং করতে বের হচ্ছিল। প্রদীপের গাড়ির সামনে সে দাঁড়িয়ে পড়ে রাকেশ। রাকেশ কে দেখে প্রদীপ জানলা খুলে বলে, মাতাল হয়ে আছো নাকি? এক্ষুনি যদি এক্সিডেন্ট হয়ে যেত?গাড়ির সামনে এসে পড়েছ ছোটলোক মানুষজন। রাকেশ বলে, তুই আমাকে যা বলবি বল কিন্তু আমার হাতে সময় খুব কম। তখন প্রদীপের বউ প্রদীপকে বলে কি সব বলছো তুমি? তোমার হাতের সময় কম মানে? রাকেশ বলে, আমি তোমার সব কথার উত্তর দেবো কিন্তু আমার হাতে সেটুকু সময় নাই। প্রদীপ রাকেশ কে বলে, গাড়ির সামনে থেকে সরে যাও তা না হলে। রাকেশ বলে, তোর যা ইচ্ছা হয় তুই কর কিন্তু একটা বার আমার কথাটা শোন। প্রদীপের বউ প্রদীপকে বলে, উনি তোমাকে তুই তুই করে কথা বলছে?এই ব্যক্তিটি কি তোমার পরিচিত নাকি? প্রদীপ বলে, না সোনা ফুটপাতের পড়ে থাকা মানুষ আমি কিভাবে চিনব।