'সাজানো সংসার গল্পের পঞ্চদশ পর্ব'

in আমার বাংলা ব্লগ23 hours ago

হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে সাজানো সংসার গল্পে পঞ্চদশ পর্বটি উপস্থাপন করছি। আশা করি, গল্পের পঞ্চদশ পর্বটি আপনাদের সবার ভালো লাগবে। তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।

pexels-fauxels-3184183 (2).jpg
সোর্স



রাকেশ প্রদীপ এর কাছ থেকে অপমানিত হয়ে রাস্তার পাশ দিয়ে হাঁটতে থাকে। তখন হঠাৎ একটি কার এক্সিডেন্ট হয় তার সামনে সঙ্গে সঙ্গে দৌড়ে চলে যায় রাকেশ। রাকেশ অনেক কষ্টে গাড়ি থেকে এক্সিডেন্ট করা সেই ব্যক্তিকে বের করে দ্রুততার সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তার অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল ডাক্তার বলেছিল এমার্জেন্সি রক্ত লাগবে। রাকেশ ডাক্তার কে বলে কি গ্রুপের রক্ত লাগবে ডাক্তার বাবু ? ডাক্তার বলে ও পজেটিভ রক্ত লাগবে। রাকেশ ডাক্তার কে বলে আমার ও পজেটিভ আপনি আমার শরীর থেকে রক্ত নিন। ডাক্তার দেরি না করে রাকেশের শরীর থেকে রক্ত নিয়ে সেই ব্যক্তিকে দেয়। কিছুক্ষণ পর আক্রান্ত ব্যক্তিটির পরিবারের মানুষ এসে উপস্থিত হয়। ডাক্তার তখন আক্রান্ত ব্যক্তির পরিবারকে রাকেশের কথা বলে। ডাক্তার বলে, আজ এনার কারণে আমরা তাকে বাঁচাতে পেরেছি। রাকেশ যাকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছে তিনি হল এই শহরের বড় একজন ব্যবসায়ী। রাকেশ উনাদের কাছে বিদায় দিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।


বাড়িতে ফিরে রাকেশ লক্ষ্মীকে সব ঘটনা খুলে বলে। লক্ষ্মী সব ঘটনা শোনার পর একটু ভেঙে পড়ে। লক্ষ্মী রাকেশকে বলে, এখন তুমি কি করবে? দিন যত যাচ্ছে ততই সংসারের চাপ বাড়ছে আর এরপর আমাদের সন্তান যখন এই পৃথিবীতে আসবে তখন আরো তোমার উপর বোঝা বেড়ে যাবে। রাকেশ বলে, তুমি এত চিন্তা করো না তোমার শরীর খারাপ করবে। ঈশ্বর যে কোন একটা উপায় ঠিক বের করে দিবে। লক্ষী বলে, সৃষ্টিকর্তা আমাদের কপালে কি লিখে রেখেছে জানিনা কি হবে। রাকেশ বলে, সকাল থেকে কিছু খাইনি, খুব ক্ষুধা লেগেছে আবার জন্য কিছু খাবার দিয়ে এসো? লক্ষ্মী বলে, আমি একদম ভুলে গেছি তুমি হাত মুখ ধুয়ে এসো আমি তোমার জন্য খাবার আনছি। রাত্রে খাওয়া দাওয়ার পর সবাই যখন ঘুমিয়ে যায় হঠাৎ তখন রাকেশের মা চিৎকার করে রাকেশকে ডাকতে থাকে। রাকেশ দৌড়ে চলে যায় মায়ের ঘরে। রাকেশ বলে, কি হয়েছে মা? তার মা বলে, তোর বাবা কেমন করছে আমার কিছু ভালো লাগছে না। তার মা বলে, তুই কাল সকালে তোর বাবাকে ডাক্তার দেখিয়ে আয়। রাকেশ বলে, আচ্ছা সকাল হলে আমি বাবাকে ডাক্তারের কাছে দিয়ে যাব।মা তখন রাকেশ কে বলে, তুই তো সকালে প্রদীপের কাছে গিয়েছিলে প্রদীপ কি টাকা দিয়েছে? রাকেশ চুপ থাকে কিছুই বলে না। তখন মা আবার জিজ্ঞাসা করে। কিরে চুপ করে আছিস কেন বল?


হ্যাঁ মা প্রদীপের সঙ্গে আবার দেখা হয়েছে আমাকে কিছু টাকাও দিয়েছে বলেছে বাবাকে ভালো ডাক্তার দেখাতে। রাকেশের কথা শুনে তার মা হাসতে থাকে। রাকেশ বলে, কি হয়েছে মা তুমি এমন ভাবে হাসছো কেন? মা তখন বলে, তোর ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হয়েছে কিন্তু তোকে টাকা দেয়নি, বরঞ্চ দারোয়ান ডেকে ধাক্কা দিয়ে তারা অফিস থেকে বের করে দিয়েছে। রাকেশ বলে, তোমাকে এসব কথা কে বলেছে ? মা বলে, আমি তোকে জন্ম দিয়েছি তুই আমার সঙ্গে মিথ্যা বলিস না। রাকেশ বলে, মা তুমি শুধু শুধু ভাইকে সন্দেহ করছো। তখন মা বলে, তুই বৌমাকে সব বলেছিস আমি দরজার ওপার থেকে তোদের সব কথা শুনতে পেরেছি। রাকেশ তখন তার মায়ের পা জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কাঁদতে থাকে। আর বলতে থাকে মাগো আমু এখন কি করবো আমি যে দিশাহারা হয়ে পড়েছি। আমি কাল সকালে বাবাকে কিভাবে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাব আমার কাছে তো একটা টাকাও নেই। তখন তার মা রাকেশ কে বলে, আমি তোকে কিছু গহনা দিচ্ছি এগুলো বিক্রি করে কাল সকালে তোর বাবাকে ডাক্তার দেখাবি। রাকেশ বলে, তোমার গহনা আমি বিক্রি করতে পারবো না। মা বলে, এখন এসবের আমার কোন প্রয়োজন নেই? রাকেশ বলে, না মা আমি এই গহনা বিক্রি করতে পারব না কারণ এর ভিতর তোর সারা জীবনের স্মৃতি রয়েছে আর তোমার স্মৃতিকে আমি নষ্ট করতে পারি না। তুমি চিন্তা করো না সকালে যেভাবে হোক বাবাকে আমি ডাক্তার দেখাবো। তুমি এখন ঘুমাও আমি বাবার পাশে থাকছি।

আজ গল্পের পর্বটি এখানে শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই প্রার্থনা করি।