রথযাত্রা।।
নমস্কার বন্ধুরা,
পুরীর রথযাত্রার ইতিহাস ও রহস্য এতটাই গভীর যে একে শুধুমাত্র ধর্মীয় উৎসব হিসেবে দেখলে পুরো সত্যকে উপলব্ধি করা যায় না।এটি একদিকে যেমন বৈষ্ণব ধর্মমতের অন্যতম পবিত্র পর্ব,তেমনি অন্যদিকে এ উৎসব ঘিরে বহু অলৌকিক উপাদান ও অজানা ঘটনাও চিরকাল মানুষের কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।
রথযাত্রার সময় জগন্নাথদেব তাঁর ভাই বলরাম ও বোন সুভদ্রাকে নিয়ে মূল মন্দির থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরের গুন্ডিচা মন্দিরে যান যেখানে তাঁদের মাতৃবাড়ি বলে বিবেচিত হয়।এই যাত্রাপথে লক্ষ লক্ষ ভক্ত জমায়েত হন,রথের দড়িতে টান দেন এবং বিশ্বাস করেন যে এই টানানো নিজের পাপ মোচনের এক পবিত্র সুযোগ।
রহস্যের আরেক বিস্ময় হল — জগন্নাথ মন্দিরের নির্মাণকৌশল ও প্রাকৃতিক নিয়ম অমান্যকারী বৈশিষ্ট্য।মন্দিরের চূড়ায় পতাকা উল্টো দিকে উড়ে এবং চক্র সর্বদা দর্শকের দিকে মুখ করে থাকে,যেদিকেই দাঁড়ানো হোক না কেন।বিজ্ঞান এখনও এর কোনও সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে পারেনি।তদুপরি, মন্দিরে ঢুকলে সমুদ্রের গর্জন বন্ধ হয়ে যায় এবং বাইরে বেরুলেই আবার শোনা যায়—এই অভিজ্ঞতা বহু পর্যটকের মতে এক অলৌকিক বৈজ্ঞানিক ধাঁধা।
সবচেয়ে রহস্যময় এবং স্পর্শকাতর পর্ব হল “নবকলেবর” অনুষ্ঠান,যেখানে পুরনো মূর্তি গোপনে মাটিচাপা দিয়ে নতুন দারু-ব্রহ্ম প্রতিষ্ঠিত হয়।এই পরিবর্তনের সময় মন্দিরে ঢোকা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ থাকে,এমনকি পুরোহিতদের চোখেও কালো কাপড় বাঁধা থাকে।তাদের কথায়, এই 'ব্রহ্ম' হল পরম শক্তির এক রূপ যা চোখে দেখা বা সাধারণ মানুষের দ্বারা স্পর্শ করা নিষিদ্ধ।এই রহস্যজনক আচারের উৎস আজও অজ্ঞাত। বলা হয়, যে কাঠে নতুন মূর্তি তৈরি হয় তা স্বপ্নে দেবতার নির্দেশ অনুযায়ী এক নির্দিষ্ট গাছ থেকে সংগ্রহ করা হয় এবং তা খুঁজে পাওয়া নিজের মধ্যেই এক অলৌকিক ঘটনা।
এছাড়া রথযাত্রার প্রতিদিন যে ‘মাহাপ্রসাদ’ রান্না হয় তা নয়টি পাতিলে একে ওপরের ওপরে বসিয়ে রান্না হলেও উপর থেকে নিচে নয়, বরং নিচের পাতিলটাই আগে সিদ্ধ হয়—এই রন্ধন প্রক্রিয়াও বিজ্ঞানকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।প্রতিদিনের প্রসাদ যেন জাদুর মতো ভক্তদের মধ্যে ভাগ হয়ে যায়, কখনো কম হয় না, আবার কখনো অতিরিক্তও পড়ে না।
এই সমস্ত ঘটনার পেছনে বিশ্বাস, ভক্তি এবং প্রাচীন আধ্যাত্মিক শাস্ত্রের এক গভীর ঐতিহ্য আছে—যা আধুনিক বিজ্ঞান এখনও পুরোপুরি ব্যাখ্যা করতে পারেনি।পুরীর রথযাত্রা তাই শুধুই উৎসব নয়, এক মহাজাগতিক রহস্য যা প্রতি বছর লক্ষ মানুষের হৃদয়ে আলোড়ন তোলে এবং সময়কে ছুঁয়ে থাকা এক অলৌকিক ইতিহাস বয়ে নিয়ে চলে।
VOTE @bangla.witness as witness

OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |


@swagata21, নমস্কার!
আপনার পুরীর রথযাত্রা নিয়ে লেখাটি অসাধারণ হয়েছে! রথযাত্রার ইতিহাস, রহস্য এবং অলৌকিক ঘটনাবলী খুব সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন। বিশেষ করে মন্দিরের নির্মাণশৈলী, নবকলেবর অনুষ্ঠান এবং প্রসাদ রান্নার অলৌকিক প্রক্রিয়াগুলো সত্যিই বিজ্ঞানকে চ্যালেঞ্জ করে।
আপনার লেখার মধ্যে তথ্যের গভীরতা এবং উপস্থাপনা মুগ্ধ করার মতো। এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং ঐতিহ্যপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
এই পোস্টটি Steemit-এ আলোচনার একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে এবং পাঠকদের মধ্যে আগ্রহ সৃষ্টি করবে আশা করি। আপনার আরও নতুন লেখার জন্য অপেক্ষা করছি। ভালো থাকবেন!
Congratulations, your post has been upvoted by @nixiee with a 8.278796878683007 % upvote Vote may not be displayed on Steemit due to the current Steemit API issue, but there is a normal upvote record in the blockchain data, so don't worry.